সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ছাত্র-জনতার তুমুল আন্দোলনের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট দেশ ছাড়েন তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছাত্রদের আগ্রহে নোবেলজয়ী মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে গঠিত হয় অন্তবর্তী সরকার। যদিও ছাত্রদের গড়া দল জাতীয় নাগরিক পার্টি বা এনসিপির সঙ্গে ইউনুসের সম্পর্ক ক্রমশ খারাপ হচ্ছে। বিভিন্ন মহলে বলা হচ্ছে, ইউনুস লন্ডন উড়ে গিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তথা খালেদাপুত্র তারেক রহমানের সঙ্গে দেখা করেই ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করেন। যা ছাত্ররা ভালোভাবে নেয়নি। তারা বর্তমানে নির্বাচন বিরোধী এবং সংস্কারের পক্ষে। যদিও আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল জানিয়ে দিলেন, নির্বাচন নিয়ে সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তিনি বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এরপর অন্তর্বর্তী সরকার বিদায় নেবে।
মঙ্গলবার ঢাকায় সচিবালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘নির্বাচনের দায়িত্ব সরকারের, দলের না। নির্বাচনের বিষয়ে সরকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। আমাদের যত ধাপ আছে সবকিছুই এই লক্ষ্য মাথায় রেখেই পরিচালিত হচ্ছে। ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন সেরে আমরা ফেব্রুয়ারিতে চলে যাব।’উল্লেখ্য, এই নির্বাচন নিয়েই প্রধান উপদেষ্টার এবং তার নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে জামাত এবং এনসিপির দূরত্ব বাড়ছে। তবে ইউনুসের নির্বাচন ঘোষণায় খুশি বিএনপি।
যদিও দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রশাসন থেকে ‘আওয়ামি ক্যাডারদের’ অপসারণের দাবি তুলেছেন। তিনি বলেছেন, আওয়ামি আমলের প্রশাসন দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব হবে না। তাই প্রশাসন থেকে আওয়ামি ক্যাডারদের অপসারণ করতে হবে। আসন্ন নির্বাচন নিয়ে বিএনপির কোনও সংশয় নেই বলে জানিয়ে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, বিএনপি বিশ্বাস করে আগামী বছর ফেব্রুয়ারিতেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
গত ৫ আগস্ট রাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ইউনুস ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি পাঠানোর কথা জানান। তবে জামাত এবং এনসিপি নির্বাচনের আগে সংস্কারের প্রশ্নে জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের শর্ত দিচ্ছে। এছাড়াও জাতীয় সংসদের চলমান নির্বাচনের পদ্ধতি বাতিল করে প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যানুপাতিক হার বা পিআর পদ্ধতি চালু করার দাবিকেও জোরালোভাবে সামনে আনছে। এসব শর্ত বাস্তবায়নের জন্য আন্দোলনে যাওয়ার কথাও বলছে জামাত। আর এটা হলে অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে দলটির দূরত্ব আরও বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে।