সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দক্ষিণবঙ্গের ক্ষতি প্রভাব ফেলবে উত্তরেও। দক্ষিণবঙ্গে সেই পুজোর শুরু থেকে নিম্নচাপের জেরে লক্ষ্মীপুজোয় ঝুরো ফুলের সংকট দেখা দেবে। কারণ, উত্তরের পুজোর ফুলের জোগান যে দক্ষিণবঙ্গই দেয়। ফলে লক্ষ্মীপুজোয় ফুল সংকট দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছে সারা বাংলা ফুল চাষি ও ফুল ব্যবসায়ী সমিতি। পুজোর আগে নিম্নচাপের বৃষ্টিতে ফুল চাষ ক্ষতির মুখে পড়েছিল।
কিন্তু পুজোর মধ্যে আবার নিম্নচাপে লক্ষ্মীপুজোয় বিপুল ফুলের চাহিদায় সমস্যা দেখা দেওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। দোপাটি, গাঁদা, অপরাজিতা, রজনীগন্ধা-সহ বিভিন্ন ধরনের পাপড়ি যুক্ত ঝুরো ফুলের মধ্যে বৃষ্টির জল ঢুকে গিয়েছে। ফলে পাপড়ি পচে ফুলের গুণমান নষ্ট হচ্ছে। ওই ফুলে দাগ এসে যাওয়ার কারণে তা বিক্রি হচ্ছে না। দক্ষিণবঙ্গের ফুল উত্তরে আনা চাপের হচ্ছে। কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর সময় ব্যাপক পরিমাণ ফুলের চাহিদা মেটানোর জন্য ওই ধরনের ফুল হিমঘরেও রাখতে পারছেন না ফুল চাষী-ব্যবসায়ীরা। এছাড়া খানিকটা রোদ বার হলে নরম প্রকৃতির ওই ফুল গাছগুলি মরে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেই কারণে লক্ষ্মীপুজোয় বিপুল চাহিদা পূরণে ফুলের জোগানের সংকট দেখা দেবে। স্বাভাবিকভাবেই দাম বাড়বে।
সারা বাংলা ফুল চাষি ও ফুল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নারায়ণচন্দ্র নায়ক বলেন, “দুর্গাপুজোর দিনগুলিতে রাজ্যে পদ্মফুল ছাড়া সব ফুলেরই দাম ছিল বেশ চড়া। কারণ পুজোর আগে নিম্নচাপের বৃষ্টিতে ঝুরো ফুল ক্ষতির মুখে পড়েছিল। পুজোর মধ্যে আবার নিম্নচাপ হওয়ায় ঝুরো ফুলের একেবারে দফারফা হয়ে গিয়েছে। ফলে লক্ষ্মীপুজোয় দাম আরও বেড়ে যাবে। তবে এবার পদ্মের ফলন ব্যাপক হওয়ায়, তাছাড়া দুর্গাপুজো অনেকটা আগে হওয়ার কারণে শিশিরে নষ্ট হয়নি পদ্ম। ফলে লক্ষ্মীপুজোতেও পদ্মের দাম নাগালের মধ্যেই থাকবে।”
লক্ষ্মীপুজোর প্রাক্কালে পদ্মের দাম ১০ টাকা পিস। লাল গাঁদা ৩০ টাকা প্রতি মালা, হলুদ গাঁদা ২০ টাকা প্রতি মালা, রজনীগন্ধার স্টিক ১০ টাকা, লাল জবা ৫ টাকা প্রতি পিস, মিশেল ফুলের প্যাকেট ১৫ টাকা, জারবেরা ২০ টাকা পিস। অন্যদিকে, ঝুরো দোপাটি কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়। অপরাজিতা ২০০-২৫০ টাকা প্রতি কেজি। লক্ষ্মীপুজোয় যে আরও বাড়বে, তা বুঝতেই পারছেন ফুল ব্যবসায়ীরা। জলপাইগুড়ি শহরে মূলত পাঁশকুড়া, রানাঘাট, হাওড়া থেকে ফুলের আমদানি হয়। পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়া থেকে সবথেকে বেশি গোলাপ ও রজনীগন্ধা শহরে আসে। বিক্রেতা অসীম দাস বলছেন, “টানা বৃষ্টিতে ফুল নষ্ট হচ্ছে। বেশি টাকা দিয়ে ফুল এনেও বিক্রি করতে পারছি না। সব মিলিয়ে আমদানির পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছি।”