সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিগত চারদিন ধরে গণবিক্ষোভে উত্তাল পাক অধিকৃত কাশ্মীর। আন্দোলনকারীদের দমন করতে নৃশংস অত্যাচারের পাশাপাশি নির্বিচারে গুলি চালাচ্ছে পাক সেনা। পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনীর গুলিতে এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ১২ জন সাধারণ নাগরিকের। এই পরিস্থিতিতে ফের ফুঁসে উঠলেন নীলম ভ্যালি পাবলিক অ্যাকশন কমিটির মুখপাত্র তথা অধিকৃত কাশ্মীরের বিক্ষুব্ধ নেতা শওকত নওয়াজ মির। পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফকে ‘ডাইনি’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, “নিজের লোককেই খুন করছে পাকিস্তানের সরকার এবং সেনা।” মির আরও বলেন, “আমাদের সংগ্রাম কোনও ব্যক্তির বিরুদ্ধে নয়। বরং সম্পূর্ণ ব্যবস্থার বিরুদ্ধে। হাজার হাজার বিক্ষোভকারীর উদ্দেশে তিনি বলেন, “এটি জনগণের সংগ্রাম, এটি আপনার সংগ্রাম, এবং এটি আমাদের সকলের সংগ্রাম। আমরা একসঙ্গে এই ব্যবস্থার বিরুদ্ধে আমাদের আওয়াজ তুলব।”
পাক সরকারের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে ক্ষোভে ফুঁসছে অধিকৃত কাশ্মীর। অভিযোগ, গোটা অঞ্চলে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পরিকাঠামো ও পানীয় জলের অভাব গুরুতর। বারবার দাবি জানানো হলেও সরকারের তরফে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। সরকারি কাজে অবহেলা, দুর্নীতি, ঘুষ মাত্রাছাড়া আকার নিয়েছে। এর বিরুদ্ধে সমগ্র অধিকৃত কাশ্মীর জুড়ে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিলেন মির। তিনি বলেন, “ধৈর্যের সীমা অতিক্রম করেছে। সরকার যদি এভাবে জনগণকে অবহেলা করে তবে তার প্রতিক্রিয়া তো আসবেই। অন্যদিকে প্রশাসনের তরফে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে কোনওরকম ধর্মঘট বরদাস্ত করা হবে না।”
মিরের ডাকে সাড়া দিয়ে সোমবার হাজার হাজার মানুষ ব্যানার হাতে নিয়ে পথে নামেন। পুরো অঞ্চল জুড়ে ‘শাটার ডাউন ও চাক্কা জ্যাম’ করা হয়। এই পরই সেই বিক্ষোভ দমন করতে মাঠে নামে পাক সেনা ও আইএসআই সমর্থিত মুসলিম কনফারেন্সের সশস্ত্র দুষ্কৃতীরা। টানা চারদিন ধরে সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন পাক অধিকৃত কাশ্মীরের আমজনতা। তাতেই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যুমিছিল। অন্যদিকে, অতিরিক্ত সেনা পাঠিয়ে, ইন্টারনেট বন্ধ করে দমনপীড়ন চালাচ্ছে পাক প্রশাসন। প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালে ঠিক একইরকম আন্দোলনে ফুঁসে উঠেছিলেন অধিকৃত কাশ্মীরের জনতা। এক বছরের মাথায় ফের একই ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই চাপ বাড়ছে শাহবাজ সরকারের।