অরিজিৎ গুপ্ত, হাওড়া: বছর দেড়েক আগে হাওড়ার নরসিংহ দত্ত কলেজের ইউনিয়ন রুমে প্যান্ট খুলিয়ে নবাগত ছাত্রদের উপর র্যাগিংয়ের অভিযোগ ওঠে বর্তমানে রাজ্যে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সহ সভাপতি সৌভিক রায়ের বিরুদ্ধে। এই র্যাগিংয়ের ভিডিও নিয়ে তখন কলেজের অধ্যক্ষ সোমা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিল কলেজের ছাত্ররা। কলেজ কর্তৃপক্ষ কলেজ থেকে পাস করে বেরিয়ে যাওয়া সৌভিক রায়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেয়। কিন্তু কসবা ল কলেজের ঘটনার পর নরসিংহ দত্ত কলেজের ছাত্রদের একাংশ ফের সৌভিক রায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বিষয়টি সামনে আনে। সংবাদমাধ্যমে বিষয়টি আসতেই কলেজে ‘থ্রেট কালচার’ নিয়ে ফের শুরু হয় রাজনৈতিক বিতর্ক। বিরোধী কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠন ছাত্র পরিষদ ও সিপিএমের ছাত্র সংগঠন এসএফআই এ নিয়ে মাঠে নামে।
সৌভিক রায় অবশ্য সোমবার এই প্রসঙ্গে জানান, “আমার বিরুদ্ধে বিরোধীরা চক্রান্ত করছে। ভোটের আগে আমাকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা হচ্ছে। ঠিক বছর দেড়েক আগে যেভাবে আমাকে কালিমালিপ্ত করা হয়েছিল। একটি ভিডিও বিরোধীরা সংবাদমাধ্যমকে দিয়েছে। যেখানে অন্য একটি জায়গায় ছাত্রদের প্যান্ট খোলার দৃশ্যের সঙ্গে আমার কলেজে এক ছাত্রকে বকাঝকা করার দৃশ্য জুড়ে দেওয়া হয়েছে। বছর দেড়েক আগে এক নবাগত ছাত্র কলেজে ব্লগ বানিয়ে ওই কলেজের ছাত্রীদের অশ্লীল গালাগালি করেছিল। আমি এর প্রতিবাদে ইউনিয়ন রুমে ছাত্রকে ডেকে বকাঝকা করেছিলাম। ওই অংশের ভিডিও করে বিরোধী ছাত্র সংগঠনগুলি অন্য একটি জায়গায় ছাত্রদের প্যান্ট খোলার ভিডিও জুড়ে দিয়ে আমার বদনাম করছে। এসব করে কোনও লাভ নেই।” সৌভিক আরও বলেন, “দল বিষয়টি দেখে আমাকে শোকজ করেছে। আমি শোকজের লিখিত জবাব দেব। তবে আমি এটুকু বলতে পারি, আমি অনেকদিন আগেই নরসিংহ দত্ত কলেজ থেকে পাস করেছি। এখন কলেজের সঙ্গে সে অর্থে আমার কোনও সম্পর্ক নেই। আমি আমার পেশা ও রাজনীতির কর্মকাণ্ড নিয়ে ব্যস্ত থাকি। তবে হ্যাঁ কলেজে আমাকে ডাকলে বা বড় কোনও ইস্যু হলে প্রয়োজন পড়লে আমি কলেজে যাই। না হলে আমি এখন আর কলেজে যাই না। আমার কলেজে যাওয়ার কোনও প্রয়োজন হয় না।”
এদিকে এই ঘটনা প্রসঙ্গে কলেজের অধ্যক্ষ সোমা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সৌভিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়ার পরই তখন কলেজের পরিচালন কমিটি কড়া ব্যবস্থা নিয়েছিল। ও যেহেতু অনেক আগেই কলেজ পাস করেছে তাই ওকে কলেজে আসতে বারণ করা হয়েছিল। ও কিন্তু তারপর থেকে আর কলেজে আসেনি। আমরা ওই ভিডিওর সত্যতা যাচাই না করেই অভিযোগের গুরুত্ব বুঝে ওকে কলেজে আসতে বারণ করেছিলাম।”