সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দুঃস্বপ্নের দুনিয়া। যেখানে ধ্বংস আর মৃত্যুই একমাত্র সত্য। সভ্যতা, মানবিকতা থেকে বহুদূর। সেই গাজায় এবার ইজরায়েলি হানায় একসঙ্গে ৯ সন্তানকে হারালেন এক চিকিৎসক। ঘাতক হামলা হয় বাড়িতে। ঠিক সেই সময় হাসপাতালে নিজের দায়িত্ব পালন করছিলেন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ আলা-আল-নাজ্জার। এই কারণেই বেঁচে গেলেন তিনি। যদিও এই বেঁচে থাকা মেনে নেওয়া কঠিন। কারণ নিজের সন্তানদের আধপোড়া, খণ্ডবিখণ্ড দেহাংশ নাজ্জার হাসপাতালেই নিয়ে আসা হল।
১০ সন্তানের মা নাজ্জার। দক্ষিণ গাজায় খান ইউনিস শহরে বাড়ি তাঁদের। সেখানেই এখন ক্রমাগত হামলা চালাচ্ছে বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সেনা। বিবিসি-র প্রতিবেদন অনুযায়ী ইজরায়েলি বাহিনী যখন হামলা চালায় তখন নাজ্জার বাড়িতে ছিলেন তাঁর স্বামী এবং ১০ সন্তান। শক্তিশালী বোমার আঘাতে বাড়িটি ধ্বংশ হয়ে গিয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৯ জনের। তাদের বয়স ৬-১২ বছরের মধ্যে। খান ইউনিস শহরের এক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ওই চিকিৎসকের স্বামী এবং একমাত্র জীবিত ১১ বছরের সন্তানকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
হাতে মারার পাশাপাশি ভাতেও মারা হচ্ছে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার বাসিন্দাদের। তীব্র সমালোচনার মুখে সম্প্রতি সেখানে ত্রাণ পাঠানোর অনুমতি দিয়েছে ইজরায়েল। ত্রাণ বোঝাই ট্রাক লুটের আশঙ্কায় মোতায়েন করা হয়েছে গাজার স্বশাসিত নিরাপত্তারক্ষীদের। তাঁদের উপরেই এবার হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে ইজরায়েলের সেনার বিরুদ্ধে। সেনার গুলিতে মৃত্যু হয়েছে ৬ জনের। এরা সকলেই স্থানীয় নাগরিক বলে জানা গিয়েছে।
উল্লেখ্য, রাষ্ট্রপুঞ্জের ত্রাণ বণ্টনের মধ্যেও শুক্রবার দিনভর গাজায় হামলা চালায় সেনা। যার জেরে গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয় ৭৬ জনের। এক রিপোর্টে তুলে ধরা হয়েছে গাজার সাম্প্রতিক করুণ প্রতিচ্ছবি। দাবি করা হয়েছে, গাজার ২০ লক্ষ বাসিন্দার মধ্যে বেশিরভাগই ভয়ংকর অপুষ্টির শিকার। ত্রাণ না পৌঁছলে মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সেখানে ১৪ হাজার শিশুর মৃত্যুর আশঙ্কা প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রসংঘ। এর পরই গাজার ত্রাণ পাঠানোর অনুমতি দেয় ইজরায়েল। যদিও উত্তর গাজায় ত্রাণ পাঠানোর অনুমতি দেওয়া হয়নি ইজরায়েলের তরফে। কারণ ওই অঞ্চলে গাজার বাসিন্দাদের উচ্ছেদের কাজ শুরু হয়েছে।