স্টাফ রিপোর্টার: মহানগরীর ভবিষ্যতের কথা ভেবে ধাপার পাশেই নতুন আরেকটি ধাপা তৈরি হবে। আর সেই কাজ পুরসভাই করবে। এতদিন ঠিক ছিল, রাজ্য সরকারের আর্থিক সহায়তায় নতুন ধাপা তৈরি হবে। কিন্তু পুর ও নগরোন্নয়ন এবং অর্থ দপ্তর প্রশংসা করলেও এখনই অর্থসংস্থান করতে পারেনি। তাই পুরসভা একক উদ্যোগে প্রায় ৭৩ হেক্টর জমিতে ময়লা ফেলার নতুন ধাপা তৈরির কাজ শুরু করার প্রস্তাব নিতে চলেছে। ওই জমিতে যাঁরা চাষবাস করছেন সরকারি নিয়ম মেনে তাঁদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ারও প্রস্তাব থাকছে নতুন প্রস্তাবে। বিশেষজ্ঞদের অভিমত, সাম্প্রতিক কালের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিতে চলেছে কলকাতা পুরসভা।
পুরসভা সূত্রে খবর, আগামী ৮ সেপ্টেম্বর মেয়র পারিষদ বৈঠকে এই প্রস্তাব পেশ করা হবে। বৈঠকে প্রস্তাব অনুমোদনের পরই ১০ সেপ্টেম্বর পুর মাসিক অধিবেশনে এই প্রস্তাব পেশ করা হবে আনুষ্ঠানিক অনুমোদনের জন্য। বিভাগীয় মেয়র পারিষদ দেবব্রত মজুমদারের কথায়, অর্থ দপ্তরের অনুমোদন মেলেনি। পুরসভা সমাধানসূত্র বের করছে কলকাতার নিজস্ব ময়লা ছাড়াও বিধাননগর, দমদম, পানিহাটি, এনকেডিএ-র জঞ্জাল ধাপায় নিয়ম করে ফেলা হচ্ছে। গোদের উপর বিষফোড়ার মতো গত ৬ মাস ধরে হাওড়া পুর এলাকার প্রায় ৩০০ মেট্রিক টন জঞ্জাল ধাপায় রোজ ফেলা হচ্ছে। জঞ্জাল সাফাই বিভাগের তথ্য বলছে, সব মিলিয়ে রোজ ৫ হাজার ২০০ মেট্রিক টন জঞ্জাল ধাপায় ফেলা হচ্ছে।
মোদ্দা কথা, কলকাতার উপর চাপ ক্রমশ বাড়ছে। ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইবুন্যাল ও রাজ্য পরিবেশ দপ্তর অন্তত একযুগ আগেই জঞ্জাল ফেলার জন্য অন্যত্র জায়গা খোঁজার প্রস্তাব দিয়েছিল পুরসভাকে। এরপরেই বিভিন্ন সময়ে খোঁজ শুরু করে পুরসভার সার্ভে বিভাগ। এক পুরকর্তার কথায়, শেষ পর্যন্ত ৭ নম্বর বরো এলাকায় পুরসভার নিজস্ব ৭৩ হেক্টর জমির সন্ধান পায় পুরসভা। কিন্তু ওই জমিতে চাষের কাজ করছেন ৮৮৩ জন। পুরসভার পরচা দেখেই তাঁদের চিহ্নিত করা হয়েছে। পুরসভার এক শীর্ষ কর্তার কথায়, “গত একবছর ধরে দফায় দফায় চাষিদের সঙ্গে স্থানীয় কাউন্সিলর বরো চেয়ারম্যান ও পুরকর্তারা দফায় দফায় আলোচনা করেছেন। প্রত্যেককে সরকারি নিয়ম মেনে ক্ষতিপূরণ দিয়েই পুরসভা নিজের জমিতে নতুন ধাপা তৈরির কাজ করতে প্রস্তুত। শহরের সার্বিক উন্নয়নের স্বার্থে এই প্রকল্প যে গুরুত্বপূর্ণ তা বুঝতে পেরেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।”
পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তরের এক কর্তা জানান, গ্রিন ট্রাইবুন্যালের প্রস্তাবনা মেনে আধুনিক রিসাইক্লিং পদ্ধতিতে নতুন ধাপা তৈরিতে পুরসভার যথেষ্ট কারিগরি দক্ষতা রয়েছে। তাই কলকাতা পুরসভা এই কাজ করবে।” ওই আধিকারিকের কথায়, “এখনই কাজ শুরু না করলে হাওড়ার বেলগাছিয়া ভাগাড়ের মতো বিপর্যয় হলে সামলানো মুশকিল হবে। তাই সবদিক খতিয়ে দেখেই প্রায় ৭৩ হেক্টর জমিতে নতুন ধাপা তৈরির জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে মেয়র পারিষদ বৈঠকে প্রস্তাব আনা হবে।