সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হাসিনা পরবর্তী অধ্যায়ে বাংলাদেশে প্রায় নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের সমস্ত স্মৃতিচিহ্ন! সেসময়ে মুজিবের ধানমন্ডির বাড়ি পর্যন্ত পুড়িয়ে ছারখার করে দেওয়া হয়। হাতুড়ির ঘায়ে ভেঙে ফেলা হয় বঙ্গবন্ধুর মূর্তি! কখনও বা তাঁর মূর্তিতে ঝোলানো হয় জুতোর মালা। মাখানো হয় কালি… ঠিক একবছর আগে বাংলাদশের বিভিন্ন প্রান্তের এহেন খণ্ডচিত্র দেখে শিউড়ে উঠেছিল গোটা বিশ্ব। প্রশ্ন উঠেছিল, দেশের উন্মত্ত জনতার বিবেকবোধ নিয়ে। আদৌ কি তা জাগ্রত হবে? বন্ধ হবে এই সহিংস পথ? সেই কোটা সংস্কার আন্দোলনে প্রথম সারিতে দাঁড়িয়ে হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছিলেন আজমেরি হক বাঁধন। এবার বছর ঘুরতেই শেখ মুজিবর রহমানের ৫০তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা জানিয়ে কটাক্ষের শিকার বাঁধন।
হাসিনা বিরোধী আন্দোলনে যোগ দিলেও গতবছর আগস্টে বঙ্গবন্ধুর ছবি শেয়ার করে শ্রদ্ধার্ঘ্য জানিয়েছিলেন আজমেরী হক বাঁধন। লিখেছিলেন- ‘বিনম্র শ্রদ্ধা।’ সেই স্মৃতিই আরও একবার ফেসবুকে এদিন ভাগ করে নিয়েছিলেন। এরপরই ধেয়ে আসে কটাক্ষ। পদ্মাপারের নেটিজেনদের দাবি, ‘আপনি দ্বিচারিতা করছেন।’ কারও মন্তব্য, ‘এতই যদি ওঁর প্রতি শ্রদ্ধা থাকে, তাহলে দেশটাকে এভাবে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিতে পারতেন না!’ আবার কারও কটাক্ষ, ‘ইউনুসের বাংলাদেশে খেতে পাচ্ছেন না, তাই বোধদয় হয়েছে।’ বাঁধনের পাশাপাশি জয়া আহসানও শেখ মুজিবর রহমানকে ‘পরোক্ষভাবে’ শ্রদ্ধা জানিয়েছিলেন। তাঁর শেয়ার করা ছবিতে দেখা যায়, সিঁড়ির নিচে দেওয়ালে আঁকা মুজিবের ছবি এবং পাশে বাংলাদেশের পতাকা ঝোলানো। সেই ছবি দিয়ে বাঁধনের মতোই ক্যাপশনে লেখা- বিনম্র শ্রদ্ধা। দুই অভিনেত্রীর পোস্ট খুব কম সময়ের ব্যবধানেই আসে। এই বিষয়টিও নজর এড়ায়নি বাংলাদেশের নেটিজেনদের। অতঃপর ভার্চুয়াল আক্রমণের হাত থেকে রেহাই পাননি জয়াও। তাঁরক পোস্টের নিচে লেখা হয়- আপনারা অভিনেত্রী, তাই অভিনয়টা চালিয়ে যানষ। আবার কেউ ‘ভারতীয় এজেন্ট’ বলেও তাঁকে সম্বোধন করেন। যদিও গণঅভ্যুত্থানের সময় জয়া আহসানকে কোনওরকম প্রতিক্রিয়া দিতে দেখা যায়নি।
প্রসঙ্গত, নিষিদ্ধ হওয়ার পর আওয়ামি লিগের সঙ্গে সম্পর্কের দোহাই দিয়ে বাংলাদেশের তারকাদের উপর ইউনুস সরকারের শাস্তির খাঁড়া অব্যাহত! গত মে মাসেই আওয়ামি লিগের প্রাক্তন সাংসদ তথা দুই বাংলার জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী মমতাজ বেগমকে গ্রেপ্তার করা হয়। এমনকী শেখ হাসিনার চরিত্রে অভিনয়ের জন্য গ্রেপ্তার করা হয় দনপ্রিয় নায়িকা নুসরত ফারিয়াকে। এবার বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করায় বাংলাদেশি নেটিজেনদের রোষানলে জয়া আহসান এবং আজমেরী হক বাঁধন।
গত আগস্ট মাসে উত্তাল বাংলাদেশে হাসিনা বিরোধী আন্দোলনে বেশ সক্রিয় ছিলেন বাঁধন। রাস্তায় নেমে ছাত্র আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন অভিনেত্রী। সওয়াল করেছিলেন দেশের সংস্কারের পক্ষে। কখনও হাসিনা বাহিনীর জলকামানের মুখে তাঁকে মাইকে চিৎকার করে বলতে শোনা যায়, “এই দেশটা আমার, এই দেশের সংস্কার করব আমরাই…।” আবার কখনও বা অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতিতে আঁশবঁটি হাতে রাতের ঢাকায় পাহাড়া দিতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। ‘স্বৈরাচার হাসিনাতন্ত্র’ থেকে মুক্তি পেতেই ঢাকার রাজপথে নেমে আন্দোলনরত ছাত্রদের সঙ্গে তিনি যোগ দিয়েছিলেন বলে দাবি করেছিলেন। হাসিনা পতনের পর মহম্মদ ইউনুসের বাংলাদেশেও অশান্তির অন্ত নেই। ‘বিপ্লবী ছাত্রদের’ কর্মকাণ্ড দেখে স্তম্ভিত সভ্য সমাজ!