সঞ্জিত ঘোষ, নদিয়া: খাওয়া-পরার ক্ষেত্রে নিজ নিজ পছন্দের অধিকারী প্রত্যেক মানুষ। যদিও সম্প্রতি আমিষ-নিরামিষ খাদ্যাভ্যাস নিয়ে তর্কবিতর্কের একাধিক নজির রয়েছে। কিন্তু এক্ষেত্রে কেউ কারও উপর বিশেষ ‘ফতোয়া’ জারি করে দেওয়াটা মোটেই কাম্য নয়। এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বরাবর বার্তা দিয়েছেন, ‘যে যার ইচ্ছেমতো খাবে, পরবে। কেউ কিছু চাপিয়ে দিতে পারে না।’ অথচ দোল উৎসব উপলক্ষে রাজ্যের শাসকদল পরিচালিত নবদ্বীপ পুরসভার আবেদন ঘিরে তৈরি হল নতুন বিতর্ক। দোলের জন্য ১৩ থেকে ১৫ মার্চ, এই তিনদিন শহরে আমিষ বিক্রি এবং খাওয়াদাওয়া বর্জনের ডাক দেওয়া হল।
নবদ্বীপ শ্রীচৈতন্যদেবের জন্মভূমি। অধিকাংশ বাসিন্দা বৈষ্ণব, নিরামিষাসী। কিন্তু তার জন্য শহরে মাছ, মাংস বিক্রি কিংবা রান্না-খাওয়ার চল একেবারেই নেই, তা মোটেই নয়। গৌর নিতাইয়ের স্মরণে নবদ্বীপে দোল পূর্ণিমার উৎসব ‘গৌড় পূর্ণিমা’ হিসেবে পালিত হয়। এই অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে দেশ-বিদেশ থেকে হাজার হাজার ভক্তবৃন্দদের সমাগম ঘটে নবদ্বীপের পুণ্যভূমিতে। শুক্রবার দোল উপলক্ষে বুধবার থেকেই সেখানে উৎসবের আবহ। নগর পরিক্রমা থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মঠ মন্দিরে নাম সংকীর্তন ও নানা ধরনের অনুষ্ঠান চলছে।
বুধবার গৌড় পূর্ণিমা উৎসব সর্বাঙ্গীণ শান্তিপূর্ণ করে তুলতে নবদ্বীপ পৌরসভার উদ্যোগে স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় এদিন সমন্বয়ে সভার আয়োজন করা হয়।সেখানেই পৌরসভার পক্ষ থেকে আবেদন জানানো হয়, ১৩ থেকে ১৫ মার্চ পর্যন্ত শহরবাসীকে আমিষ খাবার বর্জন করুন। এছাড়া এই ক’দিন শহরে বিভিন্ন বাজারে মাছ-মাংস বিক্রি না করারও আবেদন জানানো হয় স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছে। শহরবাসীর একাংশ পৌর প্রশাসনের এই আবেদন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তবে আরেকাংশের মত, এটা তো স্রেফ আবেদন, কেউ না চাইলে মানবেন না।