সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘দেশের সবচেয়ে বড় শত্রু নরেন্দ্র মোদি।’ প্রধানমন্ত্রীকে এমনই নজিরবিহীন ভাষায় আক্রমণ করলেন কংগ্রেস নেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে। মার্কিন শুল্কনীতি নিয়ে রবিবার নমোকেই দুষলেন কংগ্রেস সভাপতি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বন্ধুত্ব বরাবরই আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক মহলের অন্যতম চর্চার বিষয়। অথচ, ‘বন্ধুরাষ্ট্র’ ভারতের উপরই অতিরিক্ত শুল্ক চাপিয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমেরিকা। যে কারণে রাশিয়ার পাশাপাশি সাম্প্রতিক কালে চিনের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠতা বাড়িয়েছেন নরেন্দ্র মোদি। সদ্যই শাংহাই কনভেনশনের অনুষ্ঠানে যোগও দিতে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। যে মঞ্চে মোদি ও পুতিনের একদম পাশে দেখা গিয়েছে চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে। অন্যদিকে মোদি-ট্রাম্পের বন্ধুত্বের মাশুল দিচ্ছে ভারতবাসী। এমনটাই মনে করছেন রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে।
কালাবুরাগিতে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে খাড়গে সাফ জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও ডোনাল্ড ট্রাম্প একে অপরের জন্য ভালো হতে পারেন। কারণ, তাঁরা একে অপরের হয়ে ভোট চান। পাশাপাশি খাড়গে আরও জানান, ট্রাম্প ও মোদি ভালো বন্ধু। কিন্তু মোদি দেশের শত্রুতে পরিণত হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী দেশের পরিবেশ নষ্ট করছেন বলেও অভিযোগ করেন খাড়গে। মার্কিন শুল্কনীতির প্রভাব নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়েও খাড়গে জানান, ট্রাম্প ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়ে দেশের সাধারণ মানুষকে ধ্বংসের পথে ঠেলে দিলেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কংগ্রেস নেতার পরামর্শ, “আপনি আপনার মতাদর্শে চলুন কিন্তু দেশের মানুষকে রক্ষা করুন। কারণ, দেশ সবার আগে, আপনার বন্ধুত্ব পরে।” ভারত দীর্ঘদিন ধরেই জোট নিরপেক্ষ নীতি মেনে চলেছে। প্রধানমন্ত্রীরও তা বজায় রাখা উচিৎ বলে মনে করেন মল্লিকার্জুন খাড়গে।
প্রসঙ্গত, একের পর এক শুল্কের কোপে গোটা বিশ্বকে ‘শুল্কনাচ নাচিয়ে’ নিজেই ফাঁদে পড়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প! নিত্য ব্যবহৃত পণ্যে শুল্কের কোপে ক্ষোভ বেড়েছে আমেরিকাবাসীর। প্রভাব পড়েছে বন্ধু দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কেও। এই অবস্থায় দুই পা পিছিয়েছেন ‘বেপরোয়া’ ট্রাম্প। ‘ভাঙব তবু মচকাব না’, এই মানসিকতায় তিনি সই করলেন নয়া আদেশনামায়। যার মাধ্যমে এবার থেকে আমেরিকায় শুল্কমুক্ত বাণিজ্য করা যাবে বহু পণ্যে।
গত শুক্রবার নয়া আদেশনামায় সই করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। যার মাধ্যমে গ্রাফাইট, টাংস্টেন, ইউরেনিয়াম, সোনার মতো ধাতু, ওষুধ-সহ আরও বহু পণ্য আমেরিকায় রপ্তানি করতে গেলে কোনও শুল্ক দিতে হবে না। যার অর্থ আমেরিকায় প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ ওষুধ ও ওষুধের কাঁচামাল রপ্তানি করে ভারত। সেক্ষেত্রে এই সকল পণ্যে শুল্কমুক্ত বাণিজ্য সম্ভব। সোমবার থেকে কার্যকর হবে এই শুল্ক ছাড়। যার জেরে উপকৃত হবে বহু দেশ। তবে সিলিকন জাতীয় পণ্যের উপর কোনও ছাড় দেওয়া হয়নি মার্কিন প্রশাসনের তরফে। পাশাপাশি, যে দেশগুলির সঙ্গে এখনও বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন হয়নি সেই দেশগুলির সঙ্গে চুক্তি সম্পন্ন করতে কোমর বেঁধে নেমে পড়েছে মার্কিন প্রশাসন।