সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেখতে দেখতে প্রায় এসেই পড়ল পুজো। এবছর মহালয়া পড়েছে ২১শে সেপ্টেম্বর, রবিবার। সেদিনই পিতৃপক্ষের অবসান। দেবীপক্ষের সূচনা। আর মহালয়া মানেই কিন্তু দিকে দিকে পুজোর আগমনী সুর বেজে ওঠা। একদিকে আকাশে পেঁজা তুলোর মেঘ। অন্যদিকে মাঠে মাঠে সাদা কাশফুলের ঢেউ। চারদিকে সাজো সাজো রব। মা ঘরে ফিরছেন। কিন্তু সত্যিই কি মহালয়ার সঙ্গে আদতে কোনও সম্পর্ক রয়েছে দুর্গাপুজোর? কী বলছে পুরাণ? চলুন জেনে নেওয়া যাক।
‘মহালয়া’ শব্দটিকে ভাঙলে হয় ‘মহা’ যুক্ত ‘আলয়’—অর্থাৎ মহান যে আশ্রয়। ‘মহালয়’ না বলে শব্দটিকে স্ত্রীলিঙ্গে আমরা ‘মহালয়া’ বলে থাকি। তবে এই মহালয়া ঘিরে রয়েছে নানাবিধ কাহিনি। পুরাণ মতে, মহিষাসুর অমর হয়েছিলেন প্রজাপতি ব্রহ্মার বরে। কোনও দেবতার দ্বারা তাঁর বিনাশ সম্ভব ছিল না। একমাত্র নারীশক্তির কাছেই অসুরের পরাজয় ছিল নিশ্চিত। ফলে অসুরদের অত্যাচারে যখন দেবতারা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন, ঠিক তখন ত্রিশক্তি ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও মহেশ্বর সৃষ্টি করলেন মহামায়ারূপী দেবী দুর্গার। আর তিনিই মহিষাসুরকে বধ করেন। মহালয়া সরাসরি দেবী পূজার অংশ না হলেও এদিন ‘দেবীমাহাত্ম্যম’ পাঠ করে দেবী দুর্গার মহিমা ও মহিষাসুর বধের ঘটনা স্মরণ করা হয়।
তাছাড়া মহালয়ার রয়েছে পৃথক মাহাত্ম্য। ভাদ্র মাসের কৃষ্ণ প্রতিপদ শুরু হয়ে পরবর্তী অমাবস্যা পর্যন্ত সময়কে পিতৃপক্ষ বলে। পুরাণ মতে, ব্রহ্মার নির্দেশে পিতৃপুরুষরা এই ১৫ দিন মনুষ্যলোকের কাছাকাছি চলে আসেন। এই সময় তাঁদের উদ্দেশ্যে কিছু অর্পণ করা হলে তা সহজেই তাঁদের কাছে পৌঁছয়। তাই গোটা পক্ষকাল ধরে পিতৃপুরুষদের স্মরণের মাধ্যমে তর্পণের রীতি প্রচলিত রয়েছে। আর এই পিতৃপক্ষের মহালগ্ন কাল হল মহালয়া। এটি পিতৃপক্ষের শেষ দিন। পরের দিন শুক্লা প্রতিপদে দেবীপক্ষের সূচনা ঘটে। আর এ দিন থেকে কোজাগরী পূর্ণিমা পর্যন্ত ১৫ দিনই হল দেবীপক্ষ।
আগেকার বাড়ির পুজোয় রথের দিন কাঠামো পুজো হত। সপ্তমীর দিন নবপত্রিকা প্রবেশের পর দেবীর চক্ষুদান পর্ব হত। কিন্তু পরবর্তীকালে মহালয়ার দিনই প্রতিমার চক্ষু আঁকার চল শুরু হয়। তাই, মহালয়ার দিন থেকেই পুজোর প্রকৃত সুচনা বলে মনে করা হয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন