সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পহেলগাঁও সন্ত্রাসী হামলার প্রায় দু’মাস কেটে গিয়েছে। পর্যটকদের পদচারণায় আবারও মুখরিত হয়ে উঠছে জম্মু-কাশ্মীরের নয়নাভিরাম সৌন্দর্যের সেই লীলাভূমি। গত ২২ এপ্রিল বৈসরন উপত্যাকায় ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় ২৫ জন পর্যটক এবং একজন স্থানীয় যুবকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছিল। এরপর ওই স্থানে পর্যটকদের আগমন প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তবে, সরকারের সময়োপযোগী পদক্ষেপ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নতির ফলে ধীরে ধীরে আবারও স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে পহেলগাঁও।
মধ্যপ্রদেশ থেকে আসা একদল পর্যটক সম্প্রতি পহেলগাঁও ঘুরে এসে তাঁদের অভিজ্ঞতার কথা জানান। তাঁরা বলেন, “এটি একটি মনোরম ও চমৎকার জায়গা। আমাদের এখানকার মতো অসহনীয় গরম সেখানে নেই। ওখানকার আবহাওয়া দারুণ উপভোগ্য। সেখানকার পরিস্থিতি এখন সম্পূর্ণ স্বাভাবিক। চারদিকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে। উপত্যকার অন্য কোথাও আমাদের কখনও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে হয়নি।” তাঁদের এই উক্তি স্পষ্টতই প্রমাণ করে যে, পর্যটকদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস ফিরে আসতে শুরু করেছে।
জম্মু ও কাশ্মীর সরকার ২২ এপ্রিলের হামলার পর বন্ধ করে দেওয়া কিছু পর্যটনকেন্দ্র পুনরায় খুলে দেওয়ার পরেই পর্যটকদের আনাগোনা বাড়তে শুরু করেছে। পহেলগাঁওয়ের শাহী রেস্তরাঁর মালিক হিলাল আহমেদ সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, “২২ এপ্রিলের পর ১৫ জুন প্রথমবারের মতো পর্যটকদের ভালো ভিড় দেখা গিয়েছে পহেলগাঁওতে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অনেক পর্যটকবাহী গাড়ি এসে পৌঁছেছে এখানে।”
সরকার অন্তত আটটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন কেন্দ্র পুনরায় খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পর্যটকদের মধ্যে নিরাপত্তা ও স্বস্তির বার্তা প্রদান করা হয়েছে। লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহা পহেলগাঁও বাজারের বেতাব উপত্যকা ও পার্কগুলো-সহ ভেরিনাগ গার্ডেন, কোকেরনাগ গার্ডেন, আছাবাল গার্ডেন, বাদামওয়ারি পার্ক, ডাক পার্ক এবং তাকদীর পার্ক পুনরায় খোলার ঘোষণা করেছেন। এই পদক্ষেপগুলো পর্যটকদের আরও আগ্রহী করে তুলবে।
পহেলগাঁও হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জাভেদ বুরজা হোটেল বুকিংয়ের সংখ্যা বৃদ্ধিতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তিনি জানান, “শূন্য শতাংশ বুকিং থেকে পহেলগাঁওয়ের হোটেলগুলোতে এখন ১৫-২০ শতাংশ বুকিং বেড়েছে। আমরা আশা করছি পর্যটকদের আনাগোনা আরও বাড়বে।” তাঁর এই বক্তব্য স্থানীয় পর্যটন শিল্পের সঙ্গে জড়িত সকলের মুখে হাসি ফুটিয়েছে।
ক্যাব চালকদের জন্যেও এই খবরটি অত্যন্ত স্বস্তিদায়ক। তাঁরা বলেন, “পহেলগাঁও হামলার পর প্রায় দুই মাস অলস বসে থেকে দিন কাটাতে হয়েছে। কিন্তু এখন আবারও নতুন করে আশার আলো দেখতে পাচ্ছি।”
এপ্রিলের সন্ত্রাসী হামলা সাময়িকভাবে কাশ্মীরের পর্যটন শিল্পকে স্তব্ধ করে দিলেও, সরকারের দ্রুত পদক্ষেপ ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় পহেলগাঁও আবারও তার হারানো গৌরব ফিরে পেতে শুরু করেছে। আশা করা যাচ্ছে আগামী দিনগুলোতে আরও বেশি সংখ্যক পর্যটক এই মনোমুগ্ধকর উপত্যকায় আসবেন এবং কাশ্মীরের আপ্যায়ন ও সৌন্দর্য উপভোগ করবেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন