সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মনে প্রতিহিংসা, দু’চোখে ইহুদি নিধনের আগুন! আমেরিকার কলোরাডোয় ইজরায়েলিদের মিছিলে বোমা নিয়ে হামলা চালানো ধৃত মিশরীয়কে জেরা করে একের পর এক যেসব চাঞ্চল্যকর তথ্য হাতে আসছে এফবিআই তদন্তকারীদের, তাতে তাকে আজকের যুগের হিটলার বললেও বোধহয় অত্যুক্তি হয় না! জেরায় মহম্মদ সাবরি সোলিমান স্বীকার করেছে, আরও আগেই তার হামলার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু মেয়ের পড়াশোনার জন্য তা পিছিয়ে যায়। মেয়ের স্কুলজীবন শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করছিল সে। কারণ, একবার এধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়লে মার্কিন আইন অনুযায়ী, মেয়ের শিক্ষায় সমস্যা হতে পারে। অর্থাৎ একেবারে ঠান্ডা মাথায় প্রতিটি ধাপ একেবারে নিখুঁত পরিকল্পনা করে তবে ইজরায়েলিদের উপর হামলায় লিপ্ত হয়েছে সোলিমান। তদন্তকারীদের সে আরও জানিয়েছে, ইহুদি-হত্যাই তার লক্ষ্য।

গাজায় পণবন্দি করে রাখা ইজরায়েলিদের মুক্তির দাবিতে রবিবার কলোরাডোর বোল্ডার শহরে শান্তি মিছিলে হামলা চালায় মহম্মদ সাবরি সোলিমান নামে এক মিশরীয় নাগরিক। এক হাতে আগুনবোমা, আরেক হাতে মলোটভ ককটেল বোমা নিয়ে হমলা চালায়। তাতে আগুনে দগ্ধ হয়ে ৬ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সঙ্গে সঙ্গে অবশ্য হামলাকারীকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয়। জানা যায়, মিশরের নাগরিক সোলিমান B-2 ভিসা নিয়ে বছর তিন আগে আমেরিকায় এসেছিল। ভিসার মেয়াদ উত্তীর্ণ এবং কাজের অনুমতি শেষ হওয়ার পরও স্ত্রী, পাঁচ সন্তানকে নিয়ে রয়ে গিয়েছে এবং দিনদিন ইহুদি বিদ্বেষ আরও লালন করেছে নিজের মধ্যে।
এফবিআইয়ের জেরায় সোলিমান জানিয়েছে, অভিবাসী হওয়ায় অস্ত্র কেনার অনুমতি পাবে না, তা জেনেই ইউটিউবে বোমা বানাতে শিখেছিল। এক বছর ধরে নিজে মলোটভ ককটেল আর আগুনবোমা তৈরির প্রস্তুতি নিয়ে অবশেষে তা দিয়েই হামলা চালায়। তবে তার ইহুদিহত্যার ‘স্বপ্ন’ আর পূরণ হল না। সোলিমানের হামলায় কারও মৃত্যু হয়নি। সকলেই আহত।
রবিবারের এই ঘটনাকে ‘সন্ত্রাসবাদী হামলা’র হিসেবে বিবেচনা করে তদন্তের কথা আগেই জানিয়েছিল এফবিআই। সোলিমানকে জেরার পর একটা বিষয়ে মোটের উপর নিশ্চিত তারা। তা হল, সোলিমান একাই জঙ্গিমূলক কার্যকলাপ চালিয়েছে, কোনও গোষ্ঠীর সঙ্গে সে যুক্ত নয়। হামলার বিচার তো হবেই, সোলিমান ও তার পরিবারকে দ্রুত আমেরিকা থেকে বিতাড়নের প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে বলে মার্কিন প্রশাসন সূত্রে খবর।