শিলাজিৎ সরকার: দরজায় কড়া নাড়ছে ময়দানি ক্লাব ক্রিকেটের নতুন মরশুম। দল গোছানোর কাজ অনেকটাই করে ফেলেছে ছোট থেকে বড় প্রায় সব ক্লাবই। যে কাজে অন্যতম প্রধান ভূমিকা থাকত দলের হেডকোচের। গত দু’দশক যে কাজ নিষ্ঠার সঙ্গে করে এসেছেন আবদুল মুনায়েম। এবার করছেন না। হয়তো ভবিষ্যতে আর করবেনও না।
কারণ প্রায় দু’দশক পর ক্লাব কোচিং থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মুনায়েম। ময়দানের পোড়খাওয়া এই ক্রিকেট কোচ এবার আর কোনও ক্লাবের দায়িত্ব নেননি। বলছিলেন, “অন্তত চল্লিশ বছর আমি ক্রিকেটের সঙ্গে জড়িয়ে। প্রথমে কুড়ি বছর প্লেয়ার হিসাবে। পরের কুড়ি বছর কোচ হিসাবে। এবারই প্রথম, যে শীতকালে আমার তেমন কাজ থাকবে না। হয়তো ময়দানে ম্যাচ দেখব।” কোচিং ছাড়ছেন। তবে ক্রিকেট থেকে দূরে যাচ্ছেন না মুনায়ম। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ক্রিকেটারদের তুলে আনার কাজে আরও সময় দিতে চান। একটি অ্যাকাডেমির পূর্ণাঙ্গ দায়িত্বে রয়েছেন। শ্যামবাজারের আরও একটি নামী অ্যাকাডেমিতে উঠতি প্রতিভাদের কোচ হিসাবে দেখা যেতে চলেছে তাঁকে।
কিন্তু হঠাৎ কেন ময়দানের ক্লাব কোচিং ছাড়ছেন মুনায়েম? বলছিলেন, “দীর্ঘদিন ধরেই ক্লাব কোচিং করাচ্ছি। এখন আর মানসিকভাবে কানেক্ট করতে পারি না। তাছাড়া আমি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কর্মী। অফিসেও চাপ বেড়েছে। তাই এবার আর কোনও ক্লাবের দায়িত্ব নিলাম না। একটা-দু’টো ক্লাব বলেছিল। তবে না করে দিয়েছি।” হঠাৎ করে মানসিক দূরত্বের কারণ কি লুকিয়ে গত মরশুমের সিএবি লিগ ফাইনালে? ইডেনে যে ম্যাচে একাধিকবার মাঠে নামতে ও খেলতে অস্বীকার করেছিলেন মুনায়েমের কোচিংয়ে থাকা ইস্টবেঙ্গল ক্রিকেটাররা। অবশ্য সেই ম্যাচে দলের দায়িত্বে ছিলেন না তিনি।
মুনায়েম অস্বীকার করছেন না সেই ম্যাচের প্রভাবের কথা। “আমার ছাত্ররা মাঠে নামতে চাইছে না, আমি ভাবতেও পারি না। তাছাড়া বড় ক্লাবে কোচিং করানোর ক্ষেত্রে পূর্ণ স্বাধীনতা পাওয়া যায় না। যেটা ভবানীপুরে সৃঞ্জয় বোস ও চিত্রক মিত্র আমাকে দিয়েছিলেন। যদিও ব্যক্তিগতভাবে ইস্টবেঙ্গল ক্লাব বা দেবব্রত সরকারের সঙ্গে আমার সম্পর্ক খুবই ভালো,” অল্প কথায় অনেক জবাব যেন দিয়েই দিলেন মুনায়েম।