সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: দেশজুড়ে বাঙালি, বাংলাভাষীদের উপর হয়ে চলা হেনস্থার প্রতিবাদে যখন কলকাতার রাজপথে পদযাত্রা করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তখন দেড় হাজার কিলোমিটার দূরে বসে মোবাইলে তা দেখছিল আস্ত জয় হিন্দ কলোনি। তাঁদের হয়েই যে প্রতিবাদ করছেন মমতা, তাই কিছুটা কৃতজ্ঞতা জানিয়ে, কিছুটা আশায় বুক বেঁধে আগাগোড়া মমতা-অভিষেকদের কর্মসূচিতে চোখ রাখলেন দিল্লির বসন্তকুঞ্জ এলাকার ভিটেহীন হওয়ার আশঙ্কায় থাকা মানুষগুলো।
ডোরিনা ক্রসিংয়ের মঞ্চ থেকে যে মুহূর্তে কলোনির বাসিন্দাদের পাশে থাকার বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী, উল্লাসে ফেটে পড়ল গোটা জয় হিন্দ কলোনি। বছর তিরিশের মতিউর রহমান বলছিলেন, “দুদিন আগেও এখানে আম আদমি পার্টির সরকার ছিল। ওরাই বলেছিল এখান থেকে কেউ কখনও আমাদের তুলবে না। অথচ এত কিছু হয়ে গেল, তাদের দেখা নেই। কিন্তু দেখুন দিদি অত দূরে থেকেও কীভাবে আমাদের জন্য রাস্তায় নামলেন। উনিই আমাদের আশা ভরসা।” আপাতত অস্তিত্বের সংকটে ভুগছেন এখানকার বাংলাভাষীরা। ক্রমাগত উচ্ছেদের হুমকি, জল-বিদ্যুৎ বন্ধ।
মমতায় ভরসা রাখার পাশাপাশি নিজেদের মত করে প্রতিবাদের মঞ্চও তৈরি করছে জয় হিন্দ কলোনি। বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ছ’টায় কলোনিতে এক নাগরিক সভার ডাক দিয়েছে বাম মনস্ক সংগঠন সংগ্রামী ঘরেলু কামগার ইউনিয়ন। নিজেরা বাম মনস্ক হলেও কলোনির বাসিন্দাদের স্বার্থে এই সভাকে অরাজনৈতিক নাগরিক সভা হিসেবেই তুলে ধরছে তারা। উপস্থিত থাকতে আমন্ত্রণ যাচ্ছে সব রাজনৈতিক দলের কাছেও। যদিও অনুরোধ করা হচ্ছে রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি হিসেবে নয়, আসুন নাগরিক হিসেবে।
উল্লেখ্য, বাঙালিদের উপর নির্যাতনের প্রতিবাদে বুধবার বৃষ্টি মাথায় করে রাস্তায় নেমেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ আরও অনেকে। সেখান থেকে মুখ্যমন্ত্রী হুঁশিয়ারি দেন, “আরও বাংলায় কথা বলব। ক্ষমতা থাকলে আমাকে ডিটেনশন ক্যাম্পে রাখুন।” মমতার এই প্রতিবাদ দেখেই খুশি দিল্লির জয় হিন্দ কলোনি।