গোবিন্দ রায়: দাড়িভিট কাণ্ডের তদন্তে চূড়ান্ত গাফিলতি এনআইএ-র! এক বছর পেরিয়ে গেলেও সামান্য একটা রিপোর্টও জমা দিতে পারেননি তদন্তকারীরা। যার জেরে এবার আদালতে ভর্ৎসনার মুখে পড়ল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এনআইএ-র আইনজীবীকে উদ্দেশ্য করে সোমবার ক্ষুব্ধ বিচারপতি তপব্রত চক্রবর্তীর হুশিয়ারি, “এনআইএ অফিসাররা কি নিজেদের আদালতের ওপরে ভাবছেন? সেরকমটা হলে তাঁদের প্রস্তুত থাকতে বলুন।” তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে এনআইএকে ৯ জুলাই পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে আদালত। ওই দিনের মধ্যে তাদের তদন্তের অগ্রগতি সংক্রান্ত রিপোর্ট জমা দিতে হবে। তেমনটা না করলে কড়া পদক্ষেপেরও হুঁশিয়ারি দিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ।
২০১৮ সালের দাড়িভিটে গুলিবিদ্ধ হয়ে তাপস বর্মণ ও রাজেশ সরকার নামে দু’জন মারা যান। পরিবারের অভিযোগ ছিল পুলিসের গুলিতে তারা নিহত হয়েছেন। পরবর্তীতে এই মামলায় বিচারপতি রাজশেখর মান্থা এনআইএ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে রাজ্য ডিভিশন বেঞ্চে যায়। অভিযোগ, এখনও পর্যন্ত তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে কোনও রিপোর্ট জমা দিতে পারেনি এনআইএ। এদিন মামলার শুনানিতে বিষয়টি জানার পরই তদন্তকারী অফিসারদের ভূমিকায় চূড়ান্ত বিরক্তি প্রকাশ করে ডিভিশন বেঞ্চ।
এদিন পরিবারের তরফে জানানো হয়, দাড়িভিট কাণ্ডে নিহতদের দেহ এখনও সংরক্ষিত আছে। অভিযুক্ত পুলিস। তবে এখনও অবধি কাউকেই জেরা করতে চেয়ে আর্জি পর্যন্ত জানানো হয়নি। যা শোনার পরই বিচারপতি চক্রবর্তী বলেন, “১৪ মাসে তদন্তে অগ্রগতি কোথায়? এনআইএ অফিসার কি নিজেদের আদালতের ওপরে ভাবছে? এক বছর আগে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছিল। একটি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার যদি এই ভূমিকা হয় তাহলে অফিসারদের তৈরি থাকতে বলুন। আদালত যথাযথ ব্যবস্থা নিতে জানে।”
এনআইএর আইনজীবী অবশ্য রাজ্যের ঘাড়ে দায় চাপানোর চেষ্টা করেন। বলেন, “পুলিশ ত্রুটিযুক্ত তদন্ত প্রক্রিয়া করেছে। গুলিতে মৃত্যু হয়েছে, অথচ সেই গুলিও পদ্ধতি মেনে সংরক্ষণ করা হয়নি।” তার প্রেক্ষিতে বিচারপতির কড়া মন্তব্য, কোনও অজুহাত খাড়া করার চেষ্টা করবেন না। আদালতের নির্দেশ পালন করা হয়নি।