সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শারদোৎসবের আমেজ বাংলা ছাড়িয়ে শুরু হয়ে গিয়েছে আরব সাগরের তীরে স্বপ্ননগরী মুম্বইতেও। বাঙালি বলিউড সেলেব ব্রিগেডও সেই আনন্দে মেতেছেন। মা’কে স্বাগত জানানোর প্রস্তুতি তুঙ্গে তাঁদের। মুখার্জি পরিবারের তরফে আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে আত্মীয় বিয়োগে এবার নমো নমো করেই পুজো সারবেন তাঁরা। তবে চলতিবারে অভিজিৎ ভট্টাচার্যের ‘লোখান্ডওয়ালার দুর্গোৎসব’ এবার তিরিশে পা দিল। সেই প্রেক্ষিতেই মহাআয়োজন গায়কের। কেমন প্রস্তুতি চলছে? আয়োজনের কলেবর কেমন? অষ্টমীর মেনুতেই বা কী কী রয়েছে?
কলকাতার পুজোর জৌলুস যতই থাকুক, মুম্বইয়ের নক্ষত্রদের উপস্থিতিতে হওয়া পুজোর ঔজ্জ্বল্য যে অন্য রকম, সেকথা বললেও অত্যক্তি হয় না! মায়ানগরীর অন্যতম চর্চিত পুজোর একটি গায়ক অভিজিৎ ভট্টাচার্যের দুর্গোৎসব। ১৯৯৬ সালে মুম্বইয়ের বুকে দুর্গাপুজো শুরু করেন অভিজিৎ। আজও সেই পুজোর জৌলুসে বিন্দুমাত্র ভাঁটা পড়েনি। সারা দেশের অগণিত আমন্ত্রিত পুণ্যার্থীরা ভিড় জমান এই পুজোয়। বিশ্ব আঙিনাতেও ‘লোখান্ডওয়ালার দুর্গোৎসব’ সাংস্কৃতিক ল্যান্ডমার্ক তৈরি করে ফেলেছে গত তিন দশকে। জানা গেল, ২৭ সেপ্টেম্বর, পঞ্চমীর দিন থেকে আমজনতার জন্য ‘লোখান্ডওয়ালার দুর্গোৎসবে’র দুয়ার খুলে দিচ্ছেন অভিজিৎ ভট্টাচার্য। চলবে ২ অক্টোবর পর্যন্ত। তবে পুজো পাঁচদিনের হলেও সাতদিন ধরে অতিথি সমাগম চলতে থাকে এখানে। প্রতিবারের মতো এবারেও লোখান্ডওয়ালার মাঠে অভিজিতের তত্ত্বাবধানে সেজে উঠেছে সাবেকি মণ্ডপ।
অভিজিতের শারদোৎসব মানে শুধুই পুজো নয়! মন্ত্রোচ্চারণ, চণ্ডীপাঠের পাশাপাশি মায়ানগরীতে মেলে কলকাতার রকমারি খাবারের স্বাদও। কারণ বাংলা থেকে অনেকেই খাবারের স্টল নিয়ে পাড়ি দেন লোখান্ডওয়ালার পুজোয়। অভিজিৎ বলছেন, “লোখণ্ডওয়ালা দুর্গোৎসবের ৩০ বছর উদযাপন আমার জন্য অত্যন্ত গর্বের মুহূর্ত। ১৯৯৬ সালে মুম্বইয়ের বুকে শুরু হওয়া এই পুজো এখন এক বিশাল উৎসবে পরিণত হয়েছে। আমার পুজোর সাবেকিসজ্জা এখন বিশ্বজুড়ে চর্চিত। বম্বের বুকে বাঙালি ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রাখার প্রচেষ্টা সফল হয়েছে।” অভিজিতের পুজোর সাবেকি প্রতিমা গড়েন বর্ধমানের মৃৎশিল্পীরা। থিমপুজো কোনওকালেই পছন্দ নয় গায়কের। তাঁর কথায়, “থিমের পুজো আবার কী? কী বানাতে গিয়ে কী বানিয়ে দেবে! আমি সনাতনী পুজোতেই বিশ্বাসী।”
ভোগে থাকে খিচুড়ি, লাবড়া, বেগুনি, চাটনি, রসগোল্লা। আবার অবাঙালিদের জন্য ভেজ চপ, পনিরের রকমারি স্ন্যাকসও থাকে। পুজো কমিটির প্রত্যেক পুরুষ সদস্য সাজেন একরকম ধুতি-পাঞ্জাবিতে। এবছরও তাই হচ্ছে। দশমীতে এখানকার মূর্তি বিসর্জন হয় না। তার বদলে ভোগের জন্য সেদিন তৈরি হয় স্পেশ্যাল মেনু। খিচুড়ির বদলে সেদিন দর্শনার্থীদের দেওয়া হয় পোলাও। বিসর্জন হয় একাদশীতে। ফি বছর ঢাকিরা আসেন পশ্চিম বাংলার মুর্শিদাবাদ থেকে। ৪০ জন ঢাকি আসেন। চলে ঢাকের তালে ধুনুচি নাচ। অভিজিতের পুজোয় মুম্বইয়ের রূপসীদের ধুনুচি নাচও দেখার মতো। আর লোখান্ডওয়ালা দুর্গোৎসব মানেই বলিউডের তারকা সমাহার। অভিজিতের পুজোয় ৭ দিনে লোক হয় ৪ থেকে ৫ লক্ষ।