সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পহেলগাঁও হামলায় পাক জঙ্গিগোষ্ঠী লস্কর-ই-তৈবার হাত দেখছে ভারত। সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি বাতিল করে সরকারিভাবে পাকিস্তানকে নোটিস পাঠিয়েছে নয়াদিল্লি। এই কড়া পদক্ষেপে পালটা হুমকি দিয়েছে ইসলামাবাদও। প্রাক্তন পাক বিদেশমন্ত্রী তথা পাকিস্তান পিপলস পার্টির প্রধান বিলাওয়াল ভুট্টো দাবি করেছিলেন, ভারত যাই বলুক সিন্ধু পাকিস্তানেরই নদ থাকবে। হয় এখান দিয়ে জল বইবে, নয়তো ওদের (ভারতীয়দের) রক্ত। এবার এই মন্তব্য নিয়েই বিলাওয়ালকে তুলোধোনা এইআইএমআইএম প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়েইসি। অতীত মনে করিয়ে দিয়ে বললেন, “তোমার মাকেও জঙ্গিরাই মেরেছিল।”
কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রী সিআর পাটিল জানিয়ে দিয়েছেন সন্ত্রাসের মদতদাতা পাকিস্তান সিন্ধু নদ থেকে একফোঁটা জলও যেন না পায় তা নিশ্চিত করবে ভারত। ভারতের তরফে যে চিঠি দেওয়া হয়েছে তাতে বলা হয়েছে, চুক্তির উদ্দেশ্যকে নস্যাৎ করে দিয়ে জম্মু-কাশ্মীরে লাগাতার হামলা চালাচ্ছে পাকিস্তান। সীমান্ত সন্ত্রাস ছড়াচ্ছে ইসলামাবাদ। সেকারণেই এই চুক্তি বাতিল করেছে নয়াদিল্লি। এরপরই গত শুক্রবার এক জনসভায় বিলাওয়াল ভুট্টো বলেন, “সিন্ধু নদ আমাদের। আর আমাদেরই থাকবে। হয় এখান দিয়ে জল বইবে, নয়তো ওদের (ভারতীয়দের) রক্ত।”
প্রাক্তন পাক বিদেশমন্ত্রীর এই মন্তব্য নিয়ে আজ সোমবার প্রশ্ন করা হয় ওয়েইসিকে। কড়া ভাষায় তিনি বলেন, “ওঁর বোকার মতো মন্তব্য করা উচিত নয়। ওঁর মনে নেই ওঁর ঠাকুরদার সঙ্গে কী ঘটেছিল? ওঁ কি ভুলে গিয়েছে যে ওঁর মাকেও জঙ্গিরাই মেরেছিল। সব কিছু জেনেও ওঁর এইরকম বোকার মতো মন্তব্য করা উচিত নয়। ওঁর কোনও ধারণা আছে কী বলছে? আমি একটা কথাই বলব, আমেরিকা যদি ওদেরকে কিছু না দেয়, তাহলে ওরা দেশ চালাতে পারবে না। আর উলটে ওরা আমাদের ছোট করার চেষ্টা করছে।” বলে রাখা ভালো, ২০০৭ সালের ২৭ ডিসেম্বর রাওয়ালপিন্ডির এক নির্বাচনী সমাবেশ শেষে আত্মঘাতী হামলা হয় বিলাওয়ালের মা বেনজির ভুট্টোর উপর। বিস্ফোরণে প্রাণ হারান তিনি। এদিন সেকথাই স্মরণ করালেন ওয়েইসি।
১৯৬০ সালে বিশ্ব ব্যাঙ্কের মধ্যস্থতায় সিন্ধু জলচুক্তি সই করে ভারত ও পাকিস্তান। চুক্তি অনুযায়ী, বিতস্তা ও চন্দ্রভাগার জলের উপরে পাকিস্তানের অধিকার ৮০ শতাংশ, ভারতের ২০ শতাংশ। তবে চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, ভারত ওই জল ব্যবহার করলেও তা আটকাতে পারবে না পাকিস্তান। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরেই নয়াদিল্লির দাবি ছিল, সিন্দু জলচুক্তিতে সংশোধন করতে হবে। কারণ ভারতের নদীবাঁধ দেওয়া ইসলামাবাদের প্রবল আপত্তি। এই নিয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে নালিশ জানানো পাকিস্তানের কূটনৈতিক কৌশল হয়ে ওঠে। গতবছর সেপ্টেম্বর মাসে এই চুক্তিতে সংশোধন চেয়ে ইসলামাদকে কড়া নোটিসও পাঠায় ভারত। এবার পহেলগাঁও হামলার পরে সিন্ধু জলচুক্তি নিয়ে ভারত চরম পদক্ষেপ করেছে ভারত। এই পদক্ষেপকে যুদ্ধ ঘোষণার সমকক্ষ বলে তোপ দেগেছে পাকিস্তান।