সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘ডিপ ফ্রিজ’ তৈরির সময়েই মায়ের প্রয়াণ। আর সেই ছবিই অর্জুন দত্তকে এনে দিল জাতীয় পুরস্কার। পরিচালকের আক্ষেপ, ‘মাকে ডিপ ফ্রিজ দেখাতে পারিনি।’ কিন্তু মায়ের সঙ্গে সন্তানের নাড়ির টান তো চিরকালীন। অর্জুন বলছেন, “জাতীয় পুরস্কার পাওয়ার পর মনে হচ্ছে, মা উপর থেকে কলকাঠি নাড়াল বুঝি…।” আর এই পুরস্কার স্বর্গত মাকেই উৎসর্গ করলেন তিনি।
৭১তম জাতীয় পুরস্কারের তালিকায় ‘সেরা বাংলা ছবি’র শিরোপা পেল ‘ডিপ ফ্রিজ’। এক প্রাক্তন দম্পতির বিচ্ছেদের পরের অভিজ্ঞতার গল্প নিয়ে এই ছবি তৈরি করেছেন পরিচালক অর্জুন দত্ত। যিনি এর আগে ‘অব্যক্ত’, ‘গুলদস্তা’, ‘শ্রীমতী’র মতো সিনেমা উপহার দিয়েছেন বাঙালি দর্শককে। এবার চতুর্থ সিনেমার সুবাদেই জাতীয় পুরস্কার ধরা দিল অর্জুনের হাতে। শুক্র সন্ধেয় সংবাদ প্রতিদিন ডট ইন-এর কাছে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছিলেন ‘ডিপ ফ্রিজ’-এর দুই অভিনেতা আবির চট্টোপাধ্যায় এবং তনুশ্রী চক্রবর্তী। পরিচালক কী বলছেন?
উচ্ছ্বাস নয়, বরং জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্তির পর অর্জুন মিস করছেন তাঁর মাকে। তাই ফিরে গেলেন এই ছবি তৈরির দিনগুলিতে। যেসময়ে তাঁর মা অসুস্থ ছিলেন। রোগভোগের সঙ্গে যুদ্ধ করছিলেন বীরবিক্রমে। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। কিন্তু যে সিনেমা তৈরির সময়ে মায়ের যুদ্ধের সাক্ষী থেকেছিলেন অর্জুন, সেই ছবিই তাঁকে জাতীয় সম্মান এনে দিল। পরিচালকের মন্তব্য, “‘ডিপ ফ্রিজ’-এর শুটিং শুরু হল যখন, তখন মায়ের অসুস্থতার কথা প্রথম জানতে পারি। এমএনডি- এর মতো অসুস্থতার সঙ্গে যুদ্ধ করতে করতে মা চলে গেল। ‘ডিপ ফ্রিজ’-এর ফিল্মিং, পোস্ট প্রোডাকশন, এই পুরো সময়টা জুড়ে মায়ের সেই নিরন্তর যুদ্ধ, অবশেষে চলে যাওয়া। অর্জুনের আক্ষেপ, “মাকে ‘ডিপ ফ্রিজ’ দেখাতে পারিনি। আজ মনে হচ্ছে, আমার এই জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্তি, এ যেন আমার মা উপর থেকে কলকাঠি নাড়িয়ে করে ফেলল! এই পুরস্কারটা আমি তোমায় দিলাম মা, এই পুরস্কার আমার নয়।” পাশাপাশি অর্জুন এও জানিয়েছেন যে, “পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব বাড়ার পাশাপাশি ভালো কাজ করার তাগিদও বাড়ল।”
প্রসঙ্গত, ‘ডিপ ফ্রিজ’ ছবিতে অভিনয় করেছেন আবির চট্টোপাধ্যায়, তনুশ্রী চক্রবর্তী, দেবযানী চট্টোপাধ্যায়, অনুরাধা মুখোপাধ্যায় প্রমুখ। এই খবর প্রকাশ্যে আসার পর টিমের সকলেই স্বাভাবিকভাবে উচ্ছ্বসিত। আবির চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমি অসম্ভব খুশি হয়েছি। এই আনন্দ প্রকাশ করার ভাষা নেই আমার কাছে। একই দিনে আমার ছবি ‘ডিপ ফ্রিজ’-এর জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্তি এবং একই সঙ্গে আমার নতুন ছবির মুক্তি। আমি আপ্লুত।” অন্যদিকে তনুশ্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে অভিনেত্রী বলেন, “একমাত্র বাংলা ছবি যা এবছর সেরার শিরোপা জিতেছে। এবছর এতগুলো বাংলা ছবি ছিল। যেগুলো খুবই ভালো ছবি। অর্জুনের (দত্ত) এটা প্রাপ্য ছিল।”