তিনি কন্যা, তিনিই পত্নী, দেবালয়ে একাধিক পরিচয়, কীভাবে বিদ্যার দেবী হয়ে উঠলেন সরস্বতী?

তিনি কন্যা, তিনিই পত্নী, দেবালয়ে একাধিক পরিচয়, কীভাবে বিদ্যার দেবী হয়ে উঠলেন সরস্বতী?

জ্যোতিষ খবর/ASTRO
Spread the love


সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বসন্ত পঞ্চমী। শীতের শেষ ছোঁয়াটুকু মেখে নতুন রূপে সেজে ওঠার দিন। প্রকৃতি যেন সদ্য তরুণীরূপে ধরা দেয়। এই দিনই বিদ্যার দেবী সরস্বতীর আরাধনায় মেতে ওঠেন শিক্ষার্থীরা। বিদ্যা, বুদ্ধি, জ্ঞান, শিল্প-সাহিত্য-সঙ্গীত-কলা বিভাগের দায়িত্ব যে তাঁর কাঁধেই। তবে পুরাণে সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মার মানসকন্যা সরস্বতীর জন্ম নিয়ে রয়েছে একাধিক কাহিনি।

ধর্মীয় পুরাণে কথিত আছে, পৃথিবী সৃষ্টির পর সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মা দেখেন তাঁর ছাড়া প্রায় সব দেবদেবীর পুজো হয় মর্ত্যে। তাঁদের তীর্থস্থানও আছে। শুধু নেই তাঁর কোনও মন্দির। কোথায় ব্রহ্মাতীর্থ করা যায় সেই নিয়ে চিন্তায় পড়েন সৃষ্টিকর্তা। সেই লক্ষ্যেই ‘সর্বরত্নময়ী শিলা’ ছুড়ে দেন বসুন্ধরার বুকে। সেই শিলা এসে পড়ে চমৎকারপুর নামে একটি স্থানে। জায়গা তো পাওয়া গেল, কিন্তু সেখানে নিত্যপুজোর জন্য দরকার নদী। তখনই দেবী সরস্বতীকে সেই জায়গায় যাওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়। কিন্তু নদীর সঙ্গে বিদ্যার দেবীর কী সম্পর্ক? চলমান জ্ঞানের জন্য দেবীকে নদীরূপেও কল্পনা করা হয়। হিমালয়ের সিমুর পর্বতে তাঁর উৎপত্তি। সেখান থেকে হরিয়ানার আম্বালা জেলায় সমতলভূমিতে নদীরূপে অবতরণ করেন দেবী।

কিন্তু এখানেও সমস্যা। দেবী গঙ্গার অভিশাপে ৫ হাজার বছর ধরে নদী হিসাবে থাকতে বাধ্য হন সরস্বতী। কিন্তু মর্ত্যে তিনি বিরাজ করতে পারবেন না। লোকজনের স্পর্শে তাঁর ভয়। সমস্যার সমাধান করেন ব্রহ্মা। চমৎকারপুরে পাতাললোকের সঙ্গে যুক্ত একটি হ্রদ খনন করেন তিনি। সেখানেই দেবী সরস্বতী বিরাজ করতে শুরু করেন অন্তঃসলিলা হয়ে।

ভাগবত পুরাণ আবার অন্য কথা বলে, শুম্ভ ও নিশুম্ভ দৈত্য বধের সময় দেবীর দুর্গার শরীর থেকে জন্ম হয় দেবী প্রকৃতির। তিনি কৌশিকী। আবার মনে করা হয়, শ্রীকৃষ্ণের জিহ্বা থেকে বিদ্যার দেবীর জন্ম। স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণইগদেবীর আরাধনার প্রবর্তন করেন।

আবার পদ্মপুরাণে রয়েছে ভিন্ন কথা, সেখানে দেবী দক্ষরাজের কন্যা, কাশ্যপ মুণির পত্নী দেবী। আবার এক জায়গায় দেবী নারায়ণের পত্নী। তাঁর সতীন গঙ্গা। দেবী গঙ্গা আবার দেবাদি দেবের উপপত্নী। সেই সূত্রে শিবের কন্যা কী করে, সেই প্রশ্নও ওঠে।

দেবীর জন্মের একাধিক ইতিহাসই যেন তাঁর এক পরিচয়। দেবতাকূলে দেবী নানান পরিচয় পেয়েছেন। তবে বির্তক যাই থাক, বঙ্গের পড়ুয়াদের কাছে বা যে কোনও শিক্ষার্থীর জন্য তিনি যুগের পর যুগ বিদ্যার দেবী বলে পরিচত। সবশেষে বলতেই হয়, ‘ভদ্রকাল্যৈ নমো নিত্যং সরস্বত্যৈ নমো নমঃ’।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *