সঞ্জিত ঘোষ, নদিয়া: কৃষ্ণনগরের তরুণী ঈশিতা মল্লিক ‘খুনের’ ঘটনার পরতে পরতে রহস্য। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত প্রেমিক দেশরাজ সিং পলাতক। দু’জনের মধ্যে সম্পর্কে অনেক আগেই ফাটল ধরেছিল বলে খবর। সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে যেতে চাইছিলেন ঈশিতা। আর সেই থেকেই প্রতিহিংসা, আক্রোশ থেকে এই খুন? সেই প্রশ্ন উঠেছে। বেশ কিছু চ্যাট, ইমেল কৃষ্ণনগরের পুলিশের হাতে এসেছে। একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে দেশরাজের একটি মেসেজ পেয়েছেন তদন্তকারীরা। সেই গ্রুপে একটি বন্দুকের ছবি পোস্ট করে ‘ডেডবডি সুন’ ক্যাপশন দিয়েছিল দেশরাজ! তাহলে কি আগেই খুনের ছক কষে ফেলেছিল সে? সেই প্রশ্ন উঠেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, সম্পর্ক শেষ করতে চাইছিলেন ঈশিতা। সম্পর্ক বাঁচাতে দেশরাজ তাঁকে ইমোশনাল ব্ল্যাকমেল করতে থাকে। নিজের হাত কাটা, গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টার ভিডিও দেশরাজ তাঁকে পাঠিয়েছিল। কিন্তু তাতেও মন গলেনি ঈশিতার। তারপরই কি তাঁকে খুনের ছক করা হয়? সেই প্রশ্ন আরও জোরালো হয়েছে। ঈশিতা ও দেশরাজের বন্ধুদের নিয়ে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছিল। সেখানেই ওই বন্দুকের ছবি পোস্ট করেছিল দেশরাজ। সঙ্গে লিখেছিল – ‘ডেডবডি সুন’। কার মৃতদেহের কথা বলেছিল সে? এ প্রশ্নের উত্তর এখন স্পষ্ট। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুরের খুড়তুতো ভাই নীতিন প্রতাপ সিং-এর সঙ্গে আগেই যোগাযোগ করেছিল দেশরাজ। দুজন মিলেই কি ওই তরুণীকে খুনের পরিকল্পনা করে? প্রশ্ন থাকছে।
দেশরাজ আদতে উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা। বাংলায় উত্তর ২৪ পরগনার বীজপুরে থাকত।কৃষ্ণনগরের বাড়িতে ঢুকে ঈশিতাকে নৃশংসভাবে খুনের পর উত্তরপ্রদেশে দেশরাজ পালিয়েছে বলে পুলিশ মনে করছে। দেশরাজকে ধরতে কৃষ্ণনগর পুলিশের তিনটি দল উত্তরপ্রদেশের তিনটি ভিন্ন ঠিকানায় পৌঁছেছে। সার্চ ওয়ারেন্টের ভিত্তিতে দেশরাজের বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়েছে। সেখান থেকে একটি সিম কার্ড উদ্ধার হয়েছে বলে খবর। সেই সিম কার্ড থেকে তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ সূত্র পাওয়া যেতে পারে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরাকারা দেশরাজকে এই খুনে সাহায্য করেছে? পালাতেই বা কারা সাহায্য করল? সেই তথ্যও জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।