সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারত-পাক সংঘাতের মাঝেই এবার বিস্ফোরক দাবি রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী সেরগেই লাভরভের। অভিযোগ করলেন, ভারত ও চিনকে একে অপরের বিরুদ্ধে দাঁড় করানোর চেষ্টা করছে পশ্চিমী বিশ্ব। ‘ডিভাইড অ্যান্ড রুল’-এর অঙ্ক কষে এশিয়ার দুই শক্তিশালী দেশের মধ্যে সংঘাত তৈরি করতে তৎপর পশ্চিমের দেশগুলি। আর্থিকভবে তাদের দুর্বল করার এই ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সতর্ক হওয়ার বার্তা দিলেন রুশ বিদেশমন্ত্রী।
চিন ও ভারতকে ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে উল্লেখ করে রুশ বিদেশমন্ত্রী বলেন, “এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের বর্তমান পরিস্থিতির দিকে নজর দিন। পশ্চিমের দেশগুলি চিন বিরোধী মনোভাব তুলে ধরতে ওই অঞ্চলকে ‘ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল’ হিসেবে উল্লেখ করতে শুরু করেছে। ওদের পরিকল্পনা এর ফলে আমাদের দুই বন্ধু রাষ্ট্র ভারত ও চিনের মধ্যে সংঘাত আরও তীব্র হবে।” শুধু তাই নয়, পশ্চিমী দুনিয়া দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ১০টি দেশের সম্মিলিত গোষ্ঠী দ্য অ্যাসোসিয়েশন অফ সাউথেস্ট এশিয়ান নেশন (ASEAN)-এর ভূমিকাকে দুর্বল করতে তৎপর। লাভরভ বলেন, “বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের মতো পশ্চিমীরা এখানেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে চায়।” উল্লেখ্য, ASEAN হল আর্থিক ও নিরাপত্তা-সংক্রান্ত সহযোগিতা তৈরির লক্ষ্যে ১০ দেশকে নিয়ে গঠিত একটি গোষ্ঠী। যার মধ্যে রয়েছে, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ফিলিপিন্স, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, ব্রুনেই, মায়ানমার, কম্বোডিয়া, লাওস ও ভিয়েতনাম।
পশ্চিমের ষড়যন্ত্র ফাঁস করে রুশ বিদেশমন্ত্রী বলেন, চিনের প্রভাব ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে এশিয়ায়। ভারতও অর্থনৈতিকভাবে নজর কাড়তে শুরু করেছে। এই পরিস্থিতিতে দুই দেশকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিলে লাভ পশ্চিম বিশ্বের। এশিয়ার বাকি দেশগুলিকে সহজে ব্যবহার করতে পারবে আমেরিকা-সহ ইউরোপের অন্যান্য দেশগুলি। তাই আপাতত চিন ও ভারত দুই প্রতিবেশীর আধিপত্য কমাতে দুজনকে সংঘাতের ময়দানে মুখোমুখি দাঁড় করাতে সক্রিয় হয়েছে পশ্চিম।
অবশ্য রাশিয়ার এই সন্দেহ যে অমূলক নয় তা ইতিমধ্যেই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। বিশ্বব্যাপী মার্কিন আধিপত্যে রাশ টানতে চিন যে তার শিকড় বিস্তার করতে শুরু করেছে তা হাড়ে হাড়ে বুঝতে পারছে আমেরিকা। এই অবস্থায় চিনকে জব্দ করতে আমেরিকা ঝুঁকেছে ভারতের দিকে। পাকিস্তানের সঙ্গে যুযুধান ভারতকে আবারও লড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে চিনের বিরুদ্ধে। পশ্চিমীদের পরিকল্পনা এভাবে চিন ও ভারতকে অশান্ত করে তুলতে পারলে বিশ্ব বাজারে এশিয়ার উত্থান আটকে দেওয়া সম্ভব। যার সুফল পাবে আমেরিকা-সহ অন্যান্য দেশ। ফলে পশ্চিমের পাতা ফাঁদে পা না দেওয়ার আর্জি জানাল রাশিয়া।