সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভোটমুখী বিহারে স্থায়ী বসবাসকারীর শংসাপত্র পেলেন ‘ডগ বাবু’। যাঁর বাবার নাম ‘কুত্তা বাবু’ এবং মা ‘কুতিয়া দেবী’। শংসাপত্র অনুযায়ী ‘ডগ বাবু’ পাটনার কৌলিচকের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। সঙ্গে রয়েছে বিহার সরকারের সিলমোহর। ওই সার্টিফিকেটে ছবি দেওয়া একটি কুকুরের। সম্প্রতি সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল সেই শংসাপত্র। বিষয়টি সামনে আসার পরই নির্বাচন কমিশনকে তীব্র কটাক্ষ করেছে কংগ্রেস, তৃণমূল-সহ বিরোধীরা। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সাধারণ মানুষের নাম বাদ দিয়ে কুকুরের নামে রেসিডেন্সিয়াল সার্টিফিকেট দেওয়া হচ্ছে। এই রেসিডেন্সিয়াল সার্টিফিকেট এসআইআরের ক্ষেত্রে কমিশন গ্রহণ করছে। সাধারণ মানুষের ভোটাধিকার ছিনিয়ে নিয়ে কুকুরের নামে ফেক ভোটার আইডি কার্ড করেছে যাতে ভোট লুঠ করে বিজেপিকে বাড়তি সুবিধা দেওয়া যায়। এই ঘটনা দিনের আলোর মতো পরিষ্কার।”
ঘটনাটি পাটনার কাছেই ছোট শহর মুসৌরির। রাজ্যজুড়ে চলতে থাকা ভোটার তালিকা সংশোধন এবং নাগরিক রেকর্ড আপডেটের সময়ই এই ‘আশ্চর্যজনক’ রেসিডেন্স সার্টিফিকেট পাওয়া গিয়েছে। যেখানে ডগ বাবুর ছবির জায়গায় রয়েছে একটি কুকুরের ছবি। ঠিকানা লেখা আছে মুসৌরি পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কৌলিচক। সার্টিফিকেটটিতে মুরারি চৌহান নামে রাজস্ব বিভাগের এক কর্তার ডিজিটাল স্বাক্ষর রয়েছে। এই ডিজিটাল স্বাক্ষরই নথিটির সত্যতার প্রমাণ।
বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পরই নীতীশ কুমারের নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকারকে তীব্র আক্রমণ শানিয়েছে বিরোধীরা। সোশাল মিডিয়ায় কংগ্রেস লিখেছে, ‘কুকুরটি বুথে উপস্থিত হয়ে বিজেপিকে ভোট দেবে। তারা সম্ভবত ডগ বাবুকে প্রার্থীও করবে এবং সমস্ত বিজেপি কর্মীরা তাকে ভোট দেবে। বিজেপি এবং নীতিহীন নির্বাচন কমিশন মিলে একটি অপরাধ সিন্ডিকেট চালাচ্ছে। এটা তাদের নির্বাচনী ব্যবস্থায় কারসাজির নগ্ন উদাহরণ।’
তৃণমূল কংগ্রেসের কটাক্ষ, ‘গরিব ও প্রান্তিক নাগরিকদের বৈধ আধার এবং রেশন কার্ড জাল হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে। অন্যদিকে, এই ধরনের একই শংসাপত্রকে বৈধ হিসাবে গ্রহণ করা হচ্ছে। তা হলে কি ভোটার তালিকা থেকে প্রকৃত মানুষদের বাদ দেওয়া হবে আর ‘ডগ বাবু’-রা হবে যোগ্য ভোটার?’ বিতর্ক শুরু হতেই তড়িঘড়ি ওই সার্টিফিকেট বাতিল করা হয়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাফাই, কীভাবে এমন একটি অযৌক্তিক নথি জারি করা হয়েছে এবং ট্রাজস্ব বিভাগের কর্তা তাতে স্বাক্ষর করেছেন, সেই বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।