নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: অপারেশন সিঁদুর আবহে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সংঘর্ষবিরতিতে মধ্যস্ততা করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প? এই নিয়ে এবার সংসদে কেন্দ্রকে বিঁধল তৃণমূল। শুক্রবার এনিয়ে সংসদে লিখিত প্রশ্ন করেন তৃণমূল সাংসদ মালা রায়, দীপক অধিকারী-সহ চারটি বিরোধী দলের সাংসদরা। সেই প্রশ্নেরই উত্তর দেয় কেন্দ্রীয় সরকার।
লিখিত প্রশ্নে বিরোধী সাংসদরা জানতে চান, অপারেশন সিঁদুর আবহে সংঘর্ষবিরতিতে ডোনাল্ড ট্রাম্প মধ্যস্থতা করেছিল? তাছাড়া এর পরিপ্রেক্ষিতে আমেরিকা কি ভারতের উপর কোনও বাণিজ্যিক শর্ত চাপিয়েছিল? এর উত্তরে বিদেশ প্রতিমন্ত্রী কীর্তিবর্ধন সিং জানান, সংঘর্ষবিরতি নিয়ে শুধুমাত্র দু’দেশের DGMO-র মধ্যে আলোচনা হয়। তাছাড়া পাকিস্তানের তরফে আগে যোগাযোগ করা হয়েছিল। তারাই সংঘর্ষবিরতির জন্য আবেদন জানিয়েছিল। এই বিষয়টি মার্কিন প্রেসিডেন্ট-সহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের কাছে স্পষ্ট করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
সংঘর্ষবিরতির জন্য আমেরিকার তরফে কোনও বাণিজ্যিক শর্ত চাপানো হয়েছিল কিনা এই প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী জানান, ভারত-পাকিস্তানের মধ্য উত্তেজনার মধ্যেই আমেরিকার উপরাষ্ট্রপতি জে ডি ভ্যান্সকে জানানো হয়েছিল পাকিস্তান যদি কোনও বড় আক্রমণ চালায় তবে ভারতও চুপ করে বসে থাকবে না। তবে সেই আলোচনায় বাণিজ্যিক কোনও বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়নি বলে তিনি জানান।
প্রসঙ্গত, গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় প্রাণ হারান নিরীহ পর্যটকরা। এরপরই পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরে প্রত্যাঘাত করে ভারত। অপারেশন সিঁদুরে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় ৯টি জঙ্গি ঘাঁটি। পাকিস্তানে হামলার দাবি তুলে পালটা আক্রমণ করে শাহবাজ শরিফের দেশের সেনা। ভারতীয় সেনাও পালটা উত্তর দেয়। উত্তেজনার আবহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দু’দেশের মধ্যে সংঘর্ষ বিরতির কথা ঘোষণা করেন। যদিও সেসময় ভারত সাফ জানিয়ে দিয়েছিল, আমেরিকা নয়, পাকিস্তানের অনুরোধে সাড়া দিয়েই সংঘর্ষবিরতি ঘোষণা করা হয়েছে। এরপর সর্বদলীয় প্রতিনিধি দল বিভিন্ন দেশে গিয়ে পাকিস্তানের সন্ত্রাসী মনোভাব তুলে ধরে। সেই সময়ও বিধানসভায় পাক অধিকৃত কাশ্মীর দখলের প্রসঙ্গ উঠে এসেছিল মমতার মুখে। কিন্তু ভারত-পাক সেই অশান্তির আবহে পিওকে থেকে যায় পিওকে-তেই। সেই কারণেই প্রশ্ন ওঠে, তাহলে কি ট্রাম্পের কথা মতো চলছে মোদি সরকার? একুশে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকেও সেই একই প্রশ্ন তোলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধায়। আর এবার সংসদে এই নিয়ে লিখিত প্রশ্ন করলেন তৃণমূল সাংসদরা।