বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: উত্তরে বৃষ্টি অব্যাহত। ১০ আগস্ট পর্যন্ত ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া দপ্তর। কয়েক দিন একটানা বৃষ্টির জেরে মঙ্গলবার সেভক-রংপো রেল প্রকল্পের ৭ নম্বর সুড়ঙ্গে ভূমিধস ঠেকাতে তৈরি বিরাট ‘স্লোপ প্রোটেকশন গার্ডওয়াল’ ধসে যায়। যদিও প্রাণহানির কোনও ঘটনা ঘটেনি। এদিকে সোমবার রাতের বৃষ্টিতে ফুলেফেঁপে উঠেছে একাধিক পাহাড়ি ছোট নদী। জলবন্দি হয়েছে ফুলবাড়ি ২ অঞ্চলের জয়নগর কলোনি, ক্রান্তি, টটগাও এবং ময়নাগুড়ির বিস্তীর্ণ এলাকা। এদিকে সোমবার রাতে পাহাড়ে ভারী বৃষ্টি না হওয়ায় অনেকটাই স্বস্তি ফিরেছে পাহাড়ে। সিকিম ও উত্তরের কোথাও নতুন করে ভূমিধসের ঘটনা ঘটেনি।
কয়েকদিন টানা বৃষ্টির জেরে মঙ্গলবার সকালে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে সেবক থেকে রংপো রেলপ্রকল্পের গার্ডওয়াল। রবিঝোরার কাছে ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক বরাবর ৭ নম্বর টানেলের সামনের দিকে ভূমিধস ঠেকাতে তৈরি হয়েছিল এই স্লোপ প্রোটেকশন গার্ডওয়াল। সোমবার সেখানে ফাটল দেখা দিলেও মেরামত করা সম্ভব হয়নি। এদিন পুরোপুরি সেটি ভেঙে যায়। মূল প্রকল্প নিয়ে কতটা ঝুঁকি থাকছে? সেই প্রশ্ন উঠছে। ওই রেলপথ নির্মাণ সংস্থা ইরকনের প্রজেক্ট ডিরেক্টর মহেন্দ্র সিং বলেন, “অবিরাম বৃষ্টির জন্য স্লোপ প্রোটেকশন গার্ডওয়াল ভেঙেছে। মূল প্রকল্পেরও ক্ষতি হয়নি। জোরকদমে কাজ চলছে।” এদিকে মঙ্গলবার সকাল থেকে দিনভর বিক্ষিপ্তভাবে মাঝারি বৃষ্টি হয়েছে উত্তরের বিস্তীর্ণ এলাকায়। বৃষ্টির জেরে প্রতিটি ছোট নদী ফুলেফেঁপে উঠেছে। শিলিগুড়ির জোড়াপানি নদী সংলগ্ন ফুলবাড়ি-২ অঞ্চলের জয়নগর কলোনির কয়েকটি বাড়ি জলমগ্ন হয়েছে। ক্রান্তি, টটগাও এবং ময়নাগুড়ির বসতি এলাকায় জল দাঁড়িয়েছে। সোমবার রাতে পাহাড়ে ভারী বৃষ্টি হয়নি। ফলে নতুন করে তিস্তা, তোর্সা, জলঢাকা ও রায়ডাকের জলস্তর বাড়েনি। যদিও প্রতিটি নদী অত্যন্ত খরস্রোতে বইছে বলে খবর।

১০ নম্বর জাতীয় সড়কে বিভিন্ন জায়গায় ধস নামছে। আগামী বুধবার পর্যন্ত জাতীয় সড়ক বন্ধ রাখা হয়েছে। শুধু তাই নয়, রংপো থেকে মুনসং-লাভা-গরুবাথান হয়ে শিলিগুড়ি যাওয়ার রাস্তা কাটারার কাছে ভূমিধসে অবরুদ্ধ। নিরাপত্তার জন্য ওই সড়কের ৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ এলাকায় যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। ঘুরপথে যাতায়াত করছে গাড়ি। ফলে রাস্তায় গাড়ির লম্বা লাইন দেখা যাচ্ছে। তার মধ্যে ভারী বৃষ্টি হলে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। অতি ভারী বৃষ্টি, ধসের কারণে বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। কবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে? যোগাযোগ ব্যবস্থা কতদিনে স্বাভাবিক হতে পারে? সেই বিষয়ে এখনই পরিষ্কার বার্তা দিচ্ছে না প্রশাসন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন