জোর করে বিয়ে দেওয়া আটকান, ঝাড়গ্রামের মেয়েদের কাছে নজির রাজশ্রী

জোর করে বিয়ে দেওয়া আটকান, ঝাড়গ্রামের মেয়েদের কাছে নজির রাজশ্রী

ইন্ডিয়া খবর/INDIA
Spread the love


সুনীপা চক্রবর্তী, ঝাড়গ্রাম: স্বপ্নের উড়ানে জাতীয় স্তরের রেফারি তিনি। বহু আগেই খেলাধুলোর কারণে পেয়েছেন সিভিক ভলান্টিয়ারের চাকরি। কিন্তু নিজের দাঁতে দাঁত চেপে লড়াইয়ের দিনগুলোই এখন অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছে ছোট ছোট মেয়েদের। বিয়ের পিড়িতে যাদের বসাতে চায় পরিবারের লোকজন, তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে এই বছর পঁচিশের জাতীয় স্তরের রেফারি রাজশ্রী হেমরম। এখন একটাই সাধনা জঙ্গলমহলের প্রতিশ্রুতিবান খেলোয়াড়দের পাশে থেকে মানসিক শক্তি যোগানো।

বর্তমানে রাজশ্রী মাস্টর অফ ফিজিক্যাল এডুকেশনের ছাত্রী। মাঠ ও মাঠের বাইরে লড়াইয়ের পাশাপাশি ঘাম ঝড়াচ্ছেন। মাঠের বৃত্তে ধরে রাখতে চাইছে তাঁর সহ যোদ্ধাদের। গোপীবল্লভপুরের পারুলিয়া গ্রামের মেয়ে নয়াগ্রাম থানা বালিকা বিদ্যালয়ে পড়াশুনা করার সময় জঙ্গলমহল ফুটবল কাপে চ্যাম্পিয়ান হয়ে ২০২১ সালে সিভিক ভলান্টিয়ারের চাকরি পান তিনি। ছোটবেলা থেকেই অদম্য খেলার প্রতি ভালোবাসা তাকে মাঠের বাইরে রাখতে পারেনি ফুটবলের রেডকার্ডের মতো কোনও সামাজিক ফতোয়া। পড়া, খেলাধুলা এক যোগে চালিয়ে গিয়েছেন তিনি।

২০১৭ সাল থেকে গোপীবল্লভপুরে ইন্ডিয়ান ফুটবল ফেডারেশনের ব্যবস্থাপনায় চলত মেয়েদের রেফারি প্রশিক্ষণ দেওয়ার অ্যাকাডেমি। জাতীয় স্তরের রেফারি শিক্ষক শুভঙ্কর খামরুই এর নেতৃত্বে চলত প্রশিক্ষণ। কিন্তু করোনা পরবর্তী সময়ে সেই অ্যাকাডেমি এখন গোপীবল্লভপুর ২ ব্লকের বেলিয়াবেড়ায়। বর্তমানে, শুভঙ্করবাবুর চেষ্টায় চলছে এই অ্যাকাডেমি। সিনিয়র আর জুনিয়র মিলিয়ে প্রশিক্ষণরত ১৬ জন মহিলা। অ্যাকাডেমি চালাতে রাজশ্রী-সহ সিনিয়াররা বিভিন্নভাবে সাহায্য করেন। এই অ্যাকাডেমিরই প্রশিক্ষণরত আট থেকে দশ জন মেয়েকে তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়েছে। একজনকে প্রায় বিয়ে হয়ে যাওয়া থেকে আটকাতে পারা গিয়েছিল। আর একজনকে বিয়ের পর বেঁধে রাখা হয়েছিল। তাকে উদ্ধার করা গেলেও ফের বিয়ে দেওয়া হয়েছিল।

বর্তমানে জাতীয় স্তরের রেফারির যোগ্যতা অর্জন করেছেন এই অ্যাকাডেমির মাহি টুডু, মুনি খিলাড়ি, সোনামনি মুর্মু, সন্ধ্যা রানারা। তাদেরও বিয়ের চাপ আসছে। সেই জায়গা থেকেই বিশ্ব আদিবাসী দিবসের সূচনা অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীকে সামনে পেয়ে তাদের চাকরির জন্য আবেদন করেছেন। তাঁর কথায়, “রেফারিং করে ম্যাচ পিছু অর্থ মেলে। সারা বছর ম্যাচ থাকে না। অর্থনৈতিক একটা স্থিতিশীল অবস্থা থাকলে আমরা সবাই অ্যাকাডেমি চালতে সাহায্য করতে পারব। এর পাশাপাশি নিজেদের জন্য অন্য কারও কাছে হাত পাততে হবে। খেলার পাশাপাশি সংসার চালানো অনেক সহজ হবে। কথায় কথায় বিয়ে দেওয়ার মতো পরিস্থিতি মোকাবিলা করা যাবে।”



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *