বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: ভোটাধিকার যাত্রায় পাটনায় দাঁড়িয়ে ‘ভোট চুরি’ এবার হাইড্রোজেন বোমা ফাটাবেন বলে হুমকি দেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। চব্বিশ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই পালটা দিল গেরুয়া শিবির। মঙ্গলবার বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য এক্স হ্যান্ডেলে দাবি করেন, “যাঁরা ভোটচুরির অভিযোগ করছেন তাঁরাই ভোট চুরি করছেন।” কংগ্রেসের মুখপাত্র পবন খেরার নাম উল্লেখ করে মালব্য অভিযোগ করেন, খেরার দিল্লিতে ভোটার তালিকায় দুই জায়গায় নাম রয়েছে। তিনি দু’টি ভোটার কার্ড ব্যবহার করেন। দু’টি ভোটার কার্ডের ছবিও এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করেন এই বিজেপি নেতা।
মহারাষ্ট্র ও হরিয়ানার ভোটের পর থেকেই ভোটার তালিকা নিয়ে সরব হন রাহুল গান্ধী। এই দুই রাজ্যে সরকার ও কমিশন মিলিতভাবে ভোটার তালিকায় জল মিশিয়েছে। সম্প্রতি কর্নাটকের একটি লোকসভা কেন্দ্রের উল্লেখ করে কীভাবে জল মেশানো হয়েছে সেই ব্যাখ্যা দেন রাহুল। বিহারেও নিবিড় ভোটার তালিকা সংশোধনের পিছনে জাল ভোটার ঢোকান ও প্রকৃতদের নাম বাদ দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করে বিরোধী ইন্ডিয়া জোট। ভোটারদের সচেতন করতে বিহারে ‘ভোটাধিকার যাত্রা’ করে কংগ্রেস ও আরজেডি। সোমবার যাত্রার শেষদিন ভোটার তালিকা নিয়ে ‘হাইড্রোজেন বোমা’ ফাটানোর হুমকি দেন রাহুল। লোকসভার বিরোধী দলনেতার হুমকির পালটা হিসাবে কংগ্রেসের শীর্ষস্তরের নেতা পবন খেরাকে হাতিয়ার করল বিজেপি।
মালব্যর অভিযোগ, দিল্লিতে জঙ্গপুরা ও নতুন দিল্লির দু’টি বুথের পবন খেড়ার নাম রয়েছে। তাঁর অভিযোগ, রাহুল গান্ধী আসলে ছাদ থেকে ‘ভোট চোরি’ বলে চিৎকার করছেন। তাই নিজের দলের নেতাদের দেখতে পাচ্ছেন না। এখন জানা গিয়েছে যে পবন খেরারই দুটি সক্রিয় ভোটার কার্ড ও নম্বর রয়েছে। মালব্যের শেয়ার করা বিবরণ অনুসারে, খেরার দু’টি ভোটার কার্ডের নম্বর হল – এক্সএইচসি১৯৯২৩৩৮992338 এবং এসজেই০৭৫৫৯৬৭। প্রথমটি জঙ্গপুরার এবং দ্বিতীয়টি নতুন দিল্লি বিধানসভার। বিজেপি নেতা মালব্যর দাবি, ভারতের নির্বাচন কমিশনকে এর তদন্ত করতে হবে।
বিজেপির ওই অভিযোগের পরই আসরে নামে নির্বাচন কমিশন। কমিশনের তরফে পবন খেরাকে নোটিস পাঠিয়ে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের দাবি, জনপ্রতিনিধি আইন অনুযায়ী, দুটো ভোটার কার্ড রাখা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এক বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে। কারণ দেখান, কেন আপনার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করা হবে না। প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে খেরা জানান, এর জন্য কমিশন দায়ী। কংগ্রেস নেতা দাবি করেন, তিনি ১৬ সালে নয়াদিল্লি নির্বাচনী এলাকা থেকে স্থানান্তরিত হয়েছিলেন এবং ভোটার তালিকা থেকে তার নাম মুছে ফেলার জন্য যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করেন। অসঙ্গতির জন্য নির্বাচন কমিশনকে দায়ী করেন।