জি-৭ কী, সদস্য না হয়েও কেন ভারত এই বৈঠকে ডাক পায়? আন্তর্জাতিক মঞ্চে কেন সমালোচিত গোষ্ঠীটি?

জি-৭ কী, সদস্য না হয়েও কেন ভারত এই বৈঠকে ডাক পায়? আন্তর্জাতিক মঞ্চে কেন সমালোচিত গোষ্ঠীটি?

জীবনযাপন/LIFE STYLE
Spread the love


সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ১৬ ও ১৭ জুন কানাডার কানানাস্কিস শহরে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে জি৭ বৈঠক। সম্মেলনে যোগ দিতে সোমবারই কানাডায় পৌঁছবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বলা বাহুল্য, খালিস্তানি ইস্যু ঘিরে দু’দেশের মধ্যে সংঘাতের পর এই প্রথম কানাডা সফরে যাচ্ছেন মোদি। স্বাভাবিকভাবেই তাঁর এই সফরকে কেন্দ্র করে যথেষ্ট কৌতূহল তৈরি হয়েছে।

জি-৭ কী?

জি৭ -এর পুরো কথা হল ‘গ্রুপ অফ সেভেন’। এটি বিশ্বের সাতটি উন্নত অর্থনীতির দেশগুলির একটি গোষ্ঠী। এই সাতটি দেশ বছরে একবার মিলিত হয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বিষয়ে আলোচনা করে। ১৯৭৩ সালে খনিজ তেলের সংকটের কারণে গোটা বিশ্বে অর্থনীতির চাকা স্লথ হয়ে গিয়েছিল। সেই সংকটের মোকাবিলা করতেই জি-৭ গঠনের উদ্যোগ নিয়েছিল সাতটি দেশ।

জি-৭-এর সদস্য কারা?  

জি-৭ গোষ্ঠীর সদস্য দেশগুলি হল ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, ব্রিটেন, জাপান, আমেরিকা এবং কানাডা। ভারত কিন্তু এই গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত নয়। তাহলে এই বৈঠকে কেন ডাক পায় ভারত? নিয়ম অনুযায়ী, অয়োজক দেশ এই গোষ্ঠীর বাইরে থাকা অন্য একটি দেশকে সম্মেলনে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানায়। সেই সূত্রেই কয়েক বছর ধরে এই বৈঠকে আমন্ত্রণ পেয়ে আসছে ভারত। এবছর ভারতের পাশাপাশি এই বৈঠকে আমন্ত্রিত ইউরোপীয় ইউনিয়ন, আইএমএফ, বিশ্ব ব্যাঙ্ক এবং রাষ্ট্রসংঘও।

এবছর জি-৭ বৈঠকের আলোচ্য বিষয় কী?

এই বছর দ্বিতীয়বারের জন্য কানাডার কানানাস্কিস শহরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে জি-৭ বৈঠক। বৈঠকের আলোচ্য বিষয় হল গোটা বিশ্বের নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক স্থিতিস্থাপকতা এবং পারস্পরিক প্রযুক্তিগত সহযোগিতা। অর্থনীতি সংক্রান্ত আলোচ্য বিষয়গুলির মধ্যে থাকবে জ্বালানি, খনিজ পদার্থের সরবরাহ, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং সাইবার নিরাপত্তা। এছাড়াও বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তন এবং লিঙ্গসাম্যের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি নিয়েও এবারের জি-৭ বৈঠকে আলোচনা হবে বলে জানা গিয়েছে। তবে, এই সমস্ত পূর্বপরিকল্পিত অনুষ্ঠানে ছায়া ফেলছে ইরান ও ইজরায়েলের সংঘাত। তাছাড়া, খামখেয়ালি মার্কিন প্রেসিডেন্ট এক্ষেত্রে একটা বড় ফ্যাক্টর। ট্রাম্পের শুল্ক হুমকি এবং কানাডার সার্বভৌমত্ব নিয়ে করা মন্তব্যে ছায়া ফেলবে না তো বৈঠকে? কীভাবে ট্রাম্প-নীতি সামলাবেন আয়োজক দেশ কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি, সেটাও দেখার।   

জি-৭ নিয়ে কেন বিতর্ক?

অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলা করার জন্য এই গোষ্ঠীর জন্ম হলেও জি-৭ নিয়ে বিস্তর বিতর্ক রয়েছে। আন্তর্জাতিক মহলে একাধিকবার সমালোচনারও শিকার হয়েছে গোষ্ঠীটি। এর মূল কারণ হল জিডিপি হ্রাস। বিগত বেশ কিছু বছরে সদস্য দেশগুলির সম্মিলিত জিডিপি হ্রাস পয়েছে। ফলে এর প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন তুলেছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম শক্তিশালী অর্থনীতির দেশ হল চিন। অন্যদিকে, জাপানকে কড়া টক্কর দিয়ে চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হওয়ার পথে ভারত। কিন্তু তা সত্ত্বেও এই দুই দেশ জি-৭ গোষ্ঠীর স্থায়ী সদস্য নয়।

এবারের জি-৭ সম্মেলন যোগ দেওয়ার জন্য মোদিকে ফোন করেছিলেন কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি। সম্প্রতি ভারত-কানাডার মধ্যে যে টানাপোড়েন চলছে, সেই আবহে কার্নির এই ফোন যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। খলিস্তান ইস্যুতে সম্প্রতি দু’দেশের মধ্যে সম্পর্কে চিড় ধরে। সেই আবহেই মোদি জি-৭ সম্মেলনে যোগ দেবেন কি না, তা নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছিল। তবে সেই জল্পনা উড়িয়ে কার্নির আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে জি-৭ বৈঠকে যোগ দিচ্ছেন মোদি।  কানাডার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মোদির দ্বিপাক্ষিক বৈঠকেরও সম্ভাবনা রয়েছে। এই বৈঠকে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের উন্নতি ঘটতে পারে বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *