জার্সি ওড়ানো সৌরভের হুঙ্কার, কিং কোহলির আগ্রাসন! লর্ডসে পূর্বসুরিদের ‘ট্রিবিউট’ গিলের

জার্সি ওড়ানো সৌরভের হুঙ্কার, কিং কোহলির আগ্রাসন! লর্ডসে পূর্বসুরিদের ‘ট্রিবিউট’ গিলের

সিনেমা/বিনোদন/থিয়েটার
Spread the love


সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইংল্যান্ড যখন দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে, তখন তৃতীয় দিনের খেলা শেষ হতে বাকি মাত্র ৭ মিনিট। প্রত্যাশামতোই শুভমান গিল বল তুলে দিলেন জশপ্রীত বুমরাহর হাতে। দু’টো বল যেতে না যেতেই দেখা গেল দুই ইংরেজ ব্যাটার বেন ডাকেট, জ্যাক ক্রলিরা নানান বাহানায় সময় নষ্ট করছেন। দিনের শেষদিকে নতুন বলের সুইং সামলানোটা যে কোনও ব্যাটারের পক্ষেই কঠিন। সে কারণেই কোনওভাবে দ্বিতীয় ওভার বল করার সময় যাতে ভারত না পায়, ইংরেজ ব্যাটাররা সেই চেষ্টাই করছিলেন। এ ঘটনায় রীতিমতো তেতে ওঠেন ভারত অধিনায়ক গিল। যেভাবে তিনি আগ্রাসন দেখেছিয়েছেন লর্ডসে, তাতে যেন পূর্বসুরিদেরই ‘ট্রিবিউট’ দিয়েছেন গিল। আর তা এখন রীতিমতো চর্চার বিষয়। অনেকেই তো আবার শুভমানের আগ্রাসনে ছায়া দেখছেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এবং বিরাট কোহলিরও। 

ন্যাটওয়েস্ট ট্রফি জয়ের সেই স্মৃতি কেই বা ভুলতে পারে? লর্ডসে সেই ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের জার্সি ওড়ানোর দৃশ্য তো রীতিমতো আইকনিক হয়ে রয়েছে ক্রিকেটের ইতিহাসে। ক্রিকেট তো বটেই, যে কোনও ক্রীড়াক্ষেত্রেই আগ্রাসনের প্রতীক হিসেবে এই দৃশ্যকে দৃষ্টান্ত হিসেবে তুলে ধরা যায়। তাঁর টিম ইন্ডিয়ার দাপটের সামনে বাঘা বাঘা ক্রিকেটাররা নতজানু হতে বাধ্য হয়েছিলেন। সেই তালিকায় ছিলেন অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ডের মতো শক্তিশালী দেশের ঝানু খেলোয়াড়রা। চোখে চোখ রেখে খেলে বিদেশের মাটিতে ধারাবাহিকভাবে জিততে শেখানো মানুষটার নাম কিন্তু সৌরভই।

আসা যাক বিরাট কোহলির কথায়। তাঁর আগ্রাসনও কিন্তু সৌরভ পরবর্তী জমানায় উদাহরণ। অধিনায়ক থাকাকালীন বহুবার প্রতিপক্ষ ক্রিকেটারদের সঙ্গে সৌরভের মতোই তর্কে জড়িয়েছেন। সতীর্থদের আগলেও রেখেছেন। ইংল্যান্ডের মাটিতে তো একবার জো রুটের দিকেই আঙুল তুলে তেড়ে গিয়েছিলেন। তৃতীয় দিনের শেষ লগ্নে শুভমান হয়তো ‘শুভস্য শীঘ্রম’ ভঙ্গিতে তাঁর বোলারদের দিয়ে অন্তত দু’টো ওভার বল করাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ইংরেজ ব্যাটাররা সময় নষ্টের যে অভিনয়টা করলেন, তাতে টেস্ট ক্রিকেট কতটা ধোপদুরস্ত থাকল, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েই গেল।

কে বলে শুভমান গিল ‘দুর্বল’ চরিত্রের? আসলে সময় অনুযায়ী নিজেকে মেলে ধরতে জানেন তিনি। আর হ্যাঁ, আর-একটা কথা। তাঁর গুরু কিন্তু যুবরাজ সিং। ক্রিকেট মাঠে তাঁর আগ্রাসনের কথাও প্রসিদ্ধ। ২০০৭ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অ্যান্ড্রু ফ্লিনটপের সঙ্গে বাদানুবাদের কথা তো মিথের পর্যায়ে। এর ঠিক পরের ওভারে স্টুয়ার্ট ব্রডকে ৬ বলে ছয় ছক্কা হাঁকিয়ে ফ্লিনটপের কটূক্তির জবাব দিয়েছিলেন যুবি। এই সেই ফ্লিনটপ, যিনি ওয়াংখেড়েতে সিরিজ ড্রয়ের পর খালি গায়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছিলেন। যদিও এর বদলা ন্যাটওয়েস্ট ফাইনাল জিতে সুদে-আসলে নিয়েছিলেন সৌরভ। ভারতীয় ক্রিকেটের এই তিন দশক অনেককিছু বদল হলেও কিন্তু আগ্রাসনের চরিত্রের বদল হয়নি। এমনকী সামনে থেকে মহেন্দ্র সিং ধোনিকে ঠান্ডা মাথায় নেতৃত্ব দিতে দেখা গেলেও তাঁর কাছে আগ্রাসনের সংজ্ঞাটা কিন্তু অন্যরকমের ছিল। একেবারে ‘সাইলেন্ট কিলারে’র ভূমিকায় বিপক্ষের অস্ত্র ভোঁতা করে দেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধহস্ত ছিলেন ‘থালা’। আসলে পূর্বজদের কাছ থেকে যেন গুরুমন্ত্রে দীক্ষা নিয়েই এভাবে ‘সাহসী’ হতে পারছেন শুভমান। অধিনায়কের এই মেজাজটাই চতুর্থ দিন দেখা গেল টিম ইন্ডিয়ার বাকি ক্রিকেটারদের মধ্যেও। শুভমানকে দেখে সত্যিই মনে হচ্ছে, টিম ইন্ডিয়ার উত্তর প্রজন্মের দায়িত্ব সঠিক মানুষটার কাঁধেই বর্তেছে।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *