সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জমি কেলেঙ্কারি মামলায় আরও বিপাকে সোনিয়া গান্ধীর জামাই ও সাংসদ প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর স্বামী রবার্ট বঢরা। তাঁর বিরুদ্ধে জমি দুর্নীতি মামলায় চার্জশিট জমা দিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। যেখানে দাবি করা হয়েছে গুরুগ্রামে জমি দুর্নীতির মাধ্যমে বেআইনিভাবে ৫৮ কোটি টাকা পকেটস্থ করেছেন রবার্ট। ইডির দাবি, এই টাকার মধ্যে ৫ কোটি টাকা ব্লু ব্রিজ ট্রেডিং প্রাইভেট লিমিটেড থেকে এবং ৫৩ কোটি টাকা স্কাই লাইট হসপিটালিটি প্রাইভেট লিমিটেড থেকে নিয়েছেন তিনি। ইডির দাবি এই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত রয়েছেন হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টর, ভূপিন্দর সিং হুডা-সহ আরও বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী।
২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে রবার্ট বঢরা, তৎকালীন হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী ভূপিন্দর সিং হুডা, রিয়েল এস্টেট সংস্থা ডিএলএফ এবং একজন প্রপার্টি ডিলারের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছিল। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, নথি জাল করা এবং প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে। ইডি-র চার্জশিট অনুসারে, ২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে একটি আবাসন প্রকল্প তৈরির জন্য ওমকারেশ্বর প্রপার্টিজ থেকে গুরুগাঁওয়ের শিকোপুরে ৭.৫ কোটি টাকা দিয়ে ৩.৫৩ একর জমি কিনেছিল রবার্ট বঢরার মালিকানাধীন সংস্থা, ‘স্কাইলাইট হসপিটালিটি’। কিন্তু প্রকল্পটির কোনও কাজ হয়নি। পরে ওই জমিটি স্কাইলাইট হসপিটালিটি ৫৮ কোটি টাকায় বিক্রি করেছিল রিয়েল স্টেট জায়ান্ট ডিএলএফকে।
ইডির দাবি, ১৫ কোটি টাকার জমি মাত্র ৭ কোটি টাকায় কিনেছিল বঢরার সংস্থা। পুরো টাকার লেনদেন হয় চেকের মাধ্যমে। এভাবে প্রায় ৪৫ লক্ষ টাকার শুল্ক ফাঁকি দেওয়া হয়। পরে সেই জমি ৫৮ কোটি টাকায় বিক্রি করা হয়। শুধু তাই নয়, পুরো জমির মিউটেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছিল মাত্র একদিনে। সাধারণত যা হতে সময় লাগে বেশ কয়েকমাস। ইডির দাবি, এই লেনদেনের আড়ালে রয়েছে বিরাট অঙ্কের কারচুপি। তাদের আশঙ্কা, এই মাধ্যমে বিপুল অর্থপাচার হয়েছে। জমিটি বেচে যে বিরাট মুনাফা করেছিল স্কাইলাইট হসপিটালিটি, সেই অর্থ কোথা থেকে এল, সেই মানি ট্রেইলের সন্ধান করছে কেন্দ্রীয় সংস্থা।
উল্লেখ্য, গত মাসের শেষে এই আর্থিক দুর্নীতি মামলায় রবার্টের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দিয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। রবার্টের বিরুদ্ধে তহবিল তছরূপ প্রতিরোধ আইন (পিএমএলএ)-এর একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে ৩ থেকে ৭ বছরের কারাদণ্ডের পাশাপাশি অপরাধমূলক কাজের মাধ্যমে অর্জিত সমস্ত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করাও হতে পারে। যদিও গোটা ঘটনাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে তোপ দেগে রবার্টের পাশে দাঁড়িয়েছেন তাঁর শ্যালক রাহুল গান্ধী। তিনি বলেছেন, ‘গত ১০ বছর ধরে রবার্টকে হেনস্থা করছে এই সরকার। আমার জামাইবাবুর বিরুদ্ধে উইচ হান্টিং চলেছে।’ রাহুল স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, ‘আমি প্রিয়াঙ্কা, রবার্ট ও ওদের বাচ্চাদের সঙ্গে আছি। আমার বিশ্বাস ওরা এই অপচেষ্টার বিরুদ্ধে লড়াই করার মতো দৃঢ়চেতা ও সাহসী। সত্য প্রকাশ্যে আসবেই।’