সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মুহুর্মুহু মিসাইল হামলা, যুদ্ধ বিমানের গর্জনে কালো ধোঁয়ায় ঢেকে মধ্যপ্রাচ্যের আকাশ। রিপোর্ট বলছে, ইরান ও ইজরায়েল যুদ্ধে মৃতের সংখ্যা লাফিয়ে বাড়ছে। ক্ষয়ক্ষতির বহরও নেহাত কম নয়। তবে প্রাণ ও সম্পত্তিহানির চেয়ে ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর কাছে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি বলে মনে হয়েছে যুদ্ধের জেরে ছেলের বিয়ে পিছনোর ঘটনা। ক্ষয়ক্ষতির হিসাব তুলে ধরতে গিয়ে নেতানিয়াহুর এহেন ‘ব্যক্তিগত ক্ষতি’র তথ্য প্রকাশ্যে আসতেই চরম আকার নিল বিতর্ক।
সম্প্রতি ইজরায়েলের সেনাবাহিনীর তরফে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, গত বৃহস্পতিবার ইজরায়েলের বিরশেবা শহরের এক হাসপাতালে আছড়ে পড়েছে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র। যার জেরে ব্যপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সেখানে। এই হামলা প্রসঙ্গেই সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে নেতানিয়াহু বলেন, “আমার ছেলের বিয়ে দ্বিতীয়বারের জন্য পিছিয়ে দিতে হয়েছে। এই ঘটনায় আমার স্ত্রী ও হবু পুত্রবধূ অত্যন্ত কষ্ট পেয়েছেন। আমরা প্রত্যেকেই কোনও না কোনওভাবে যুদ্ধের ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছি।” একইসঙ্গে ব্রিটেনের ‘ব্লিটজ’ যুদ্ধ পরিস্থিতির সঙ্গে ইজরায়েলের বর্তমান সংকটের তুলনা করেন। নিজের স্ত্রীকে ‘নায়িকা’র সঙ্গে তুলনা করেন।
নেতানিয়াহুর এই মন্তব্য প্রকাশ্যে আসতেই বিতর্ক চরম আকার নিয়েছে। ইরানের হামলায় এখনও পর্যন্ত ইজরায়েলে মৃত্যু হয়েছে ২৫ জন সাধারন নাগরিকের। মিসাইলের হামলায় ঘরবাড়ি হারিয়েছেন আরও বহু মানুষ। এই সময়ে দাঁড়িয়ে নেতানিয়াহুর এই ‘ব্যক্তিগত ক্ষতি’ মন্তব্যকে অনুভুতিহীন ও আত্মপ্রচার বলে আখ্যা দিয়েছেন সেখানকার সাধারণ মানুষ ও রাজনীতিবিদরা। নেসেট সদস্য গিলাদ কারিভ বলেন, ‘যুদ্ধের জেরে দেশের এমন বহু পরিবার রয়েছে যারা কখনও বিয়ের অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পারবেন না। কারণ তাঁরা জীবিত নেই। সেই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর মুখে এমন মন্তব্য মানায় না।’
উল্লেখ্য, ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর পুত্র আভনের নেতানিয়াহু ও অমিত ইয়ার্দেনির বাগদান পর্ব সম্পন্ন হয়েছে আগেই। কথা ছিল, গত সোমবার সাতপাকে বাঁধা পড়বেন তাঁরা। তবে সে বিয়েতে বাধ সেধেছে যুদ্ধ। ‘দ্য টাইমস অফ ইজরায়েল’ সূত্রের খবর, একদিকে ইরান ও ইজরায়েলের যুদ্ধ, অন্যদিকে দেশের অন্দরে ব্যাপক সমালোচনার মুখে এই বিয়ে আপাতত স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই প্রসঙ্গেই মুখ খুলে এবার বিতর্কের মুখে পড়লেন নেতানিয়াহু।