সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইলেকট্রিক মিস্ত্রির ছেলে থেকে ক্রিকেটার। যাত্রাটা সহজ ছিল না। তিনি তিলক বর্মা, গোটা ভারতের নয়নের মণি। তাঁর ব্যাটের দাপটে পাকিস্তানকে হারিয়ে এশিয়াসেরা হয়েছে ভারত। হায়দরাবাদ থেকে তাঁর উঠে আসা। অনেকেই হয়তো জানেন না, তাঁর ক্রিকেটার হয়ে ওঠার নেপথ্যে সংগ্রামের কথা। একটা সময় ব্যাট কেনার টাকা পর্যন্ত ছিল না তাঁর পরিবারের। কীভাবে জীবনের মোড় ঘুরল?
তিলকের বাবা নম্বুরি নাগারাজু পেশায় ইলেকট্রিক মিস্ত্রি। মা গায়ত্রীদেবী গৃহবধূ। এমন পরিবার থেকে ক্রিকেটার হওয়ার যাত্রাটা কখনই সহজ নয়। কিন্তু সেই স্বপ্নটা দেখেছিলেন নাগারাজু। সেই স্বপ্ন ছোঁয়ার জন্য কোনও রকম গাফিলতি করেননি তিনি। সেই আবেগকে ছেলের মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন। হয়তো সেই কারণে ছোটবেলা থেকেই ক্রিকেট অন্তপ্রাণ ছিল তিলক।
বাবার দেওয়া প্লাস্টিকের ব্যাট থেকে স্বপ্ন বোনা শুরু। সেই ব্যাটই তখন স্বপ্নের উইলো ব্যাট। কারণ, সেই সময় ব্যাট কেনার মতো টাকা ছিল না তিলকের। সেই ব্যাট নিয়েই ঘুমোতে যাওয়া। সেই ব্যাটই হরিহর আত্মার মতো সব সময়ের সঙ্গী। সেই তিলকের দায়িত্ব নিয়েছিলেন ছোটবেলার কোচ, সালাম বায়াশ।
তখন তার বয়স মাত্র ১১। টেনিস ক্রিকেট খেলছিল ছোট্ট তিলক। নিখুঁতভাবে শট খেলছিল সে। তিলকের অসাধারণ শৈলীতে মুগ্ধ হন বায়াশ। ব্যস, সেই শুরু। এরপর ভাগ্যের চাকা ধীরে ধীরে ঘুরতে থাকে। সব সময় পাশে দাঁড়িয়েছেন তিলকের। খুবই উৎসাহ দিতেন। তবে কেবল শুকনো উৎসাহ নয়, খাবার থেকে ক্রিকেটের সরঞ্জাম – সবই দিতেন তিলককে। সেই তিলকই এখন ভারতের নায়ক।
তিলক বর্মা যে ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে প্রশিক্ষণ নিতেন, তা ছিল হাদরাবাদের লিঙ্গামপল্লিতে। যা তার বাড়ি চন্দ্রায়ণ গুট্টা থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে। একদিনও ফাঁকি দিতে না অনুশীলনে। বায়াশ যখন ভোর ৫টায় তিলককে জাগিয়ে অ্যাকাডেমিতে নিয়ে যেতেন, মাঝেমাঝে বাইকে ঘুমিয়ে পড়ত। কিন্তু বাইশ গজে বাঘের বাচ্চার মতো দাপিয়ে বেড়ানো তিলক এখন ভারতীয় দলে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। তাঁর স্বপ্নের ইনিংসে এশিয়া কাপ ঘরে তুলল ভারত।