ছত্তিশগড়ে কোণঠাসা, আস্তানা বানাতে ‘সেফ প্লেস’ জঙ্গলমহলে নজর মাওবাদীদের? সতর্ক পুলিশ

ছত্তিশগড়ে কোণঠাসা, আস্তানা বানাতে ‘সেফ প্লেস’ জঙ্গলমহলে নজর মাওবাদীদের? সতর্ক পুলিশ

জ্যোতিষ খবর/ASTRO
Spread the love


সুনীপা চক্রবর্তী, ঝাড়গ্রাম: ছত্তিশগড়ে কোণঠাসা মাওবাদী স্কোয়াড। যৌথবাহিনীর সাঁড়াশি আক্রমণে নাস্তানাবুদ নকশালরা। সংঘর্ষে একাধিক শীর্ষ নেতা-সহ বহু সদস্যের মৃত্যু হয়েছে। তাই এবার গা ঢাকা দিতে ‘সেফ প্লেস’ খুঁজছে তারা। তবে কি মাওবাদীরা এখন নিজেদের পুরনো ডেরা জঙ্গলমহলের জেলাগুলিতে আশ্রয় নিচ্ছে? এই প্রশ্নই এখন সর্বত্র। এর মাঝে ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ ১৩ জন মাওবাদীর গতিবিধি ট্র্যাক করতে পেরেছে।

সূত্রের দাবি, এই স্কোয়াডটি বর্তমানে ঝাড়গ্রামের পার্শ্ববর্তী ঝাড়খণ্ড রাজ্যের পশ্চিম সিংভূমের সারান্ডা জঙ্গল লাগোয়া এলাকায় রয়েছে। পুলিশের পাওয়া শেষ খবর অনুযায়ী, তারা ওই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে সরকার বিরোধী মানসিকতা ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। এরা জঙ্গলমহলের ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া,পশ্চিম মেদিনীপুর মতো জেলাগুলির উপর নজর রেখেছে বলে সূত্রের খবর। যদিও ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশের শীর্ষ আধিকারিকরা জানিয়েছেন, ছত্তিশগড় থেকে মাওবাদীরা এসে আশ্রয় নিয়েছে এখানে এমন কোনও তথ্য কেন্দ্রীয় বা রাজ্য গোয়েন্দা বিভাগে নেই। তবে ইতিহাস মাথায় রেখে জেলার আন্তঃরাজ্য সীমানা এবং একসময় মাওবাদী অধ্যুষিত এলাকার থানাগুলিকে সতর্ক করা হয়েছে। নজরদারি

একসময় বাম জমানার দীর্ঘ অনুন্নয়নকে হাতিয়ার করে মাওবাদীদের সংগঠনের ভিত গড়ে উঠেছিল। তৎকালীন সরকার বিরোধী জনমত গঠন করেছিল। ২০০৮ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত (রাজ্যে পালা বদলের আগে পর্যন্ত) মাওবাদী সন্ত্রাসের তীব্রতা ছিল। যার প্রকাশ ঘটেছিল ২ নভেম্বর ২০০৮ সালে শালবনিতে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের কনভয়ে বিস্ফোরণের মধ্যে দিয়ে। কিন্তু বর্তমানে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, রাস্তাঘাট,বাড়ি, বিনামূল্যে চাল-সহ সার্বিক উন্নয়ন একেবারে গ্রামীণ এলাকা থেকে সর্বস্তরে হয়েছে। বিকাশ, জয়ন্ত, জাগরি, সুচিত্রা-সহ বহু মাওবাদী অস্ত্র ছেড়ে আত্মসমর্পণ করেছে। জেলাতে ৭৭০ জন মাওবাদী স্কোয়াড সদস্য আত্মসমর্পণ করে চাকরি পেয়েছে। মাওবাদীদের হাতে নিহত পরিবার থেকে প্রায় ৩৫০ জন চাকরি পেয়েছে।

এই অবস্থা জেলায় সরকার বিরোধী ইস্যু মাওবাদীদের হাতে নেই। কিন্তু এই সব স্কোয়াড সদস্যরা শাসক দলের নেতাদের প্রভূত উন্নতি, গাড়ি,বাড়ি এবং দুর্নীতিকে তুলে ধরে একেবারে প্রত্যন্ত এলাকার মানুষকে বোঝানোর ছক কষছে বলে খবর। যদিও বেলপাহাড়ি বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে মানুষের সঙ্গে কথা বলে একটা জিনিস বোঝা গিয়েছে, তাঁরা আর সেই সব রক্তাক্ত দিন দেখতে চান না। বিশেষ করে মহিলারা, যাঁদেরকে একসময় সামনে রেখে মাওবাদীরা ঘুঁটি সাজিয়ে ছিল, তাঁরা আজ অনেক সচেতন লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, কন্যাশ্রী প্রকল্পগুলির সুবাদে। যদিও এখনও মদন মাহাতো,জবার মতো বেশ কিছু মাওবাদী স্কোয়াড নেতা ফেরার আছে। যদিও জবার মা লুলকি মাহাতো জামিরডিহা গ্রামের বাসিন্দা সরকারি বাড়ি পেয়েছেন। তাঁর ছোট ছেলে হোমগার্ডে চাকরিও পেয়েছেন। সব মিলিয়ে তারা এখন অনেকটাই স্বচ্ছল। গত সপ্তাহে ঝাড়খণ্ডের পূর্ব সিংভূম জেলার কমলাপুর থানার পুলিশ বেলপাহাড়ি জামিরডিহা গ্রামের ফেরার মাওবাদী নেত্রী জবা, বিদরি গ্রামের মঙ্গল সিং সর্দার এবং গোপীবল্লভপুর থানার পাথরনাশা গ্রামের মালতির বাড়িতে আদালতের নির্দেশের নোটিস সাঁটিয়েছিল।

এই ঘটনা, ১৩ স্কোয়াড সদস্যের পশ্চিম সিংভূম জেলার জঙ্গল এলাকায় গতিবিধি নানা জল্পনার জন্ম দিচ্ছে। এই বিষয়ে ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশ সুপার অরিজিৎ সিনহা বলেন ” জঙ্গল মহলে মাওবাদীদের আস্তানা গাড়ার কোনও তথ্য আমাদের কাছে নেই। তবে পুলিশ সতর্ক রয়েছে এবং যথাযথ নজরদারি চালাচ্ছে।”



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *