চুরুলিয়া থেকে সংগ্রহশালা সরানোর চেষ্টা! নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে আর্থিক তছরূপের অভিযোগ কবির পরিবারের

চুরুলিয়া থেকে সংগ্রহশালা সরানোর চেষ্টা! নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে আর্থিক তছরূপের অভিযোগ কবির পরিবারের

রাজ্য/STATE
Spread the love


শেখর চন্দ্র, আসানসোল: ‘ভুল হয়ে গেছে বিলকুল / আর সব কিছু ভাগ হয়ে গেলেও / ভাগ হয় নি কো নজরুল।’ দেশভাগের সময় ভাগ না হলেও স্বাধীনতার ৭৮ বছর পর নজরুলকে নিয়ে শুরু হয়েছে টানাটানি। নজরুল অ্যাকাডেমি বনাম কাজি নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে শুরু হয়েছে নজরুলের পান্ডুলিপি থেকে শুরু করে বিদ্রোহী কবির ব্যবহৃত সামগ্রী রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে দড়ি টানাটানি। সোমবার নজরুলের জন্মভিটে চুরুলিয়ায় এক সাংবাদিক সম্মেলন করে তাঁর ভাইপো কাজি আলি রেজা ও নাতনি সোনালি কাজি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কবির ব্যবহৃত সামগ্রী কুক্ষিগত করে আর্থিক তছরূপের অভিযোগ আনলেন।

নজরুলের ভ্রাতুষ্পুত্র কাজি আলি রেজা প্রশ্ন তোলেন,নজরুলের ভিটে সংস্কারের জন্য আসানসোলের সাংসদ শত্রুঘ্ন সিনহা ১০ লক্ষ টাকা এবং পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক নরেন চক্রবর্তী ৫ লক্ষ টাকা অনুদান দেন। সেই টাকা কোথায় গেল? যদিও সোনালি কাজি এবং আলি রেজার অভিযোগ অস্বীকার করে নজরুল অ্যাকাডেমির অস্তিত্ব নিয়েই প্রশ্ন তোলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার চন্দন কোনার। তিনি বলেন, “এখন নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ রয়েছে অ্যাকাডেমির সবকিছু। মিউজিয়াম সংস্কারের কাজ চলায় তাঁর ব্যবহৃত সমস্ত সামগ্রী চুরুলিয়া থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে আসা হচ্ছে। এর পিছনে অন্য কোনও অসৎ উদ্দেশ্য নেই।”

উল্লেখ্য, কাজী নজরুল ইসলামের জন্মভিটে চুরুলিয়ায় অবস্থিত নজরুল অ্যাকাডেমি অধিগ্রহণ করেছে কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়। ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে রানিগঞ্জ রেজিস্ট্রার অফিসে রেজিস্ট্রি হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজ্য উচ্চশিক্ষা দপ্তরের উদ্যোগে এই অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। ঠিক হয় যা কিছু রক্ষণাবেক্ষণ করার মতো, তেমন সব কিছুই এখানে রক্ষিত থাকবে। বিশ্বভারতীতে যেমন কবিগুরুর ব্যবহৃত জিনিসপত্র রক্ষণাবেক্ষণ করা আছে, ‘নজরুল সেন্টার ফর সোস্যাল এন্ড কালচারাল স্টাডিস’-এর মাধ্যমে তেমনই কর্মকাণ্ড শুরু হয়।

কবির ভাইপো কাজি মজাহার হোসেন এই অ্যাকাডেমির প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ছিলেন। তিনি সরকারের কাছে বারবার এই অ্যাকাডেমি অধিগ্রহণের আবেদন জানিয়ে ছিলেন। তিনি মারা যাওয়ার পর তাঁর ভাই রেজাউল করিম ও অ্যাকাডেমির সদস্যরা এই প্রক্রিয়া চালিয়ে যান। তিনিও প্রয়াত হয়েছেন। কবির হাতের লেখা, গানবাজনার যন্ত্রপাতি, পদক, বই-সহ যাবতীয় অন্য জিনিস রক্ষণাবেক্ষণ করা সম্ভব হয়ে না ওঠায়, তাঁরা সরকারের কাছে এটি অধিগ্রহণ করার আর্জি জানিয়েছিলেন চুরুলিয়ার কবির পরিবার। নজরুলের জন্মভূমিতে রয়েছে একটি গ্রন্থাগার,সংগ্রহশালা, জমি-জায়গা। নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় এই সমস্ত কিছু অধিগ্রহণ করেছে। নজরুল অ্যাকাডেমি চেয়েছিল, কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় কবির জন্মভূমিতেই হোক। তা হয়নি।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *