শুভজিৎ দত্ত, নাগরাকাটা: চা বাগানের স্টাফ, সাব-স্টাফদের নয়া বেতন চুক্তি নিয়ে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডাকল শ্রম দপ্তর। আগামী ৫ অগাস্ট শিলিগুড়ির স্টেট গেস্টহাউসের কনফারেন্স হলে বৈঠকটি হবে। তাতে অনলাইনে উপস্থিত থাকার কথা শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটকেরও। দাবি মোতাবেক বৈঠক ডাকার খবরে নিজেদের প্রস্তাবিত আন্দোলন কর্মসূচি আপাতত স্থগিত রাখার কথা ঘোষণা করেছে বাগান কর্মচারীদের যৌথ মঞ্চ স্টাফ অ্যান্ড সাব-স্টাফ জয়েন্ট কমিটি। রবিবার চালসার ওয়েস্ট বেঙ্গল টি গার্ডেন এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাকক্ষে নিজেদের মধ্যে একটি বৈঠকের পর স্টাফ অ্যান্ড সাব-স্টাফ জয়েন্ট কমিটি ওই ঘোষণা করেছে। সংগঠনের আহ্বায়ক আশিস বসু বলেন, ‘ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডাকার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই। আগামী ৫ অগাস্টের আলোচনার গতিপ্রকৃতি দেখে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
নতুন বেতন চুক্তি সম্পাদনে বৈঠক ডাকার দাবিতে আগামী ২৯ থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত সমস্ত চা বাগানে গেট মিটিংয়ের ডাক দিয়েছিল স্টাফ ও সাব-স্টাফদের ওই যৌথ মঞ্চ। এর মাঝে গত ২৪ জুলাই শ্রম দপ্তরের উত্তরবঙ্গের অতিরিক্ত শ্রম কমিশনার পার্থ বিশ্বাস ত্রিপাক্ষিক বৈঠক আহ্বানের চিঠি দেন সংশ্লিষ্ট সব মহলে। ওই বৈঠকে উপস্থিত থাকার জন্য মালিকপক্ষের ১১টি শ্রমিকদের ৩৪টি সংগঠনের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে।
রবিবার স্টাফ অ্যান্ড সাব-স্টাফ জয়েন্ট কমিটি নিজেদের সভায় ঠিক করেছে, ৫ অগাস্টের বৈঠকে চা বলয়ের প্রতিটি ব্লক থেকে ১০ জন করে বাগান কর্মচারী শিলিগুড়িতে যাবেন। তাঁরা বৈঠক স্থলের বাইরে থাকবেন। ৩ দিনের গেট মিটিং স্থগিত রাখা হলেও সোমবার স্টাফ, সাব-স্টাফরা প্রতিটি বাগানে কাজের শেষে বিকেলবেলা নিজেদের মধ্যে সভা করবেন। ত্রিপাক্ষিক বৈঠক আহ্বানের বিষয়টি সবাইকে জানিয়ে দেওয়ার জন্যই এই উদ্যোগ। এদিন ওই মঞ্চের সভায় উপস্থিত ছিলেন সুকান্ত নাহা, অমর বড়াইকের মতো সংগঠকরা।
স্টাফ অ্যান্ড সাব-স্টাফ জয়েন্ট কমিটি জানিয়েছে, ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর বাগান কর্মচারীদের পুরোনো বেতন চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে এখনও পর্যন্ত তাঁরা ওই পুরোনো হারেই বেতন পাচ্ছেন। ফলে কর্মচারীদের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে পুরোনো চুক্তি ফুরোনোর আগেই ২০২৩-এর ২১ ডিসেম্বর মালিকপক্ষের শীর্ষ সংগঠন কনসালটেটিভ কমিটি অফ প্ল্যান্টার্স অ্যাসোসিয়েশনকে (সিসিপিএ) চিঠি দিয়ে নতুন চুক্তির বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এরপর গত বছরের ফেব্রুয়ারি, অগাস্ট ও ডিসেম্বরে ফের চিঠি দেওয়া হয়। দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয় শ্রম দপ্তরেও। যদিও এখনও পর্যন্ত কোনও সুরাহা মেলেনি।