‘চাকরি ছেড়ে দেব’, তৃণমূল কর্মীর হাতে ‘আক্রান্ত’ হয়ে কান্নায় ভেঙে পড়লেন চাপড়া কলেজের অধ্যক্ষ

‘চাকরি ছেড়ে দেব’, তৃণমূল কর্মীর হাতে ‘আক্রান্ত’ হয়ে কান্নায় ভেঙে পড়লেন চাপড়া কলেজের অধ্যক্ষ

ব্যবসা-বাণিজ্যের /BUSINESS
Spread the love


সঞ্জিত ঘোষ, নদিয়া: নদিয়ার চাপড়ায় দীর্ঘদিন ধরেই দেখা যাচ্ছে একাধিক সরকারি জায়গায় ও রাস্তার পাশে জঙ্গল সাফাই করে দিচ্ছে একশ্রেণির মানুষ। গাছ যাতে ধ্বংস না হয় সে জন্য ওই অধ্যক্ষ সেই সব জায়গায় সকলকে সচেতন করতে বোর্ড লাগিয়েছিলেন। সেই বোর্ডগুলিকে ভেঙে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। শুধু বোর্ড ভেঙেই শান্ত হলেন না ,কলেজের অধ্যক্ষকে বেধড়ক মার তৃণমূল কর্মীর দাদার! আতঙ্কে চাকরি ছাড়তে চাইছেন ওই অধ্যক্ষ। সকলের সামনে সেই ঘটনার কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন নদিয়ার চাপড়ার গভর্নমেন্ট জেনারেল ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ। অভিযুক্ত এলাকায় ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ তাঁকে ধরছে না বলে দাবি করেছেন স্বয়ং অধ্যক্ষ।

গত ২০২১ সালে শুভাশিস পাণ্ডে চাপড়া কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে নিযুক্ত হন। তিনি মূলত কীটপতঙ্গ রক্ষা, তাদের বংশবিস্তার এবং কৃষিকাজের ফলন বৃদ্ধি নিয়ে গবেষণা করেন। পাশাপাশি পরিবেশ রক্ষার জন্যে গোটা দেশজুড়ে তিনি কাজ করেছেন। প্রায় পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে চাপড়ায় কর্মরত। ওই এলাকাতে যাতে কীটপতঙ্গ অবলুপ্তি না হয়, সেই কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন অধ্যক্ষ। আর তাতেই নাকি বাধ সেধেছে অনেকে। জানা গিয়েছে, চাপড়ায় দীর্ঘদিন ধরেই দেখা যাচ্ছে একাধিক সরকারি জায়গায় ও রাস্তার পাশে নয়ানজুলির ধারে ঝোপ-জঙ্গল সাফাই করে দিচ্ছে এক শ্রেণির মানুষ। অধ্যক্ষ সেই সব জায়গায় পরিবেশ রক্ষার জন্য সচেতন করতে বোর্ড লাগিয়েছিলেন। সেই বোর্ডগুলিকে ভেঙে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। পরবর্তীতে বুধবার তিনি নিরাপত্তারক্ষীকে সঙ্গে নিয়ে বোর্ডগুলি মেরামতি করতে যান। তখনই এক ব্যক্তি তাঁকে প্রশ্ন করে, কার অনুমতি নিয়ে বোর্ড লাগাচ্ছেন তিনি? এরপরই নিরাপত্তারক্ষীর সামনে তাঁকে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ অধ্যক্ষের।

শুভাশিস পাণ্ডের আরও দাবি, যাঁর বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ উঠেছে, তাঁর ভাই হাটখোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল কংগ্রেসের সদস্য। অভিযুক্ত অজয় ঘোষ নিজেও তৃণমূল কর্মী। বিরোধীরা বলছেন, ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে নয়নজুলি ভরাট-সহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে। শাসকদলের প্রভাব খাটিয়ে সরকারি জায়গা পরিষ্কার করে জবরদখল করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ। অধ্যক্ষ আক্রান্ত হওয়ার পর তাঁকে চিকিৎসার জন্য চাপড়া গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অধ্যক্ষ শুভাশিস পাণ্ডে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে চাপড়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি মানসিক যন্ত্রণায় কেঁদে ফেলেন। বলেন, “আমাকে এখান থেকে মুক্তি দিন, ডিপার্টমেন্টকে বলব অন্য কোনও জায়গায় আমাকে বদলি করে দিক। যদি তাও সম্ভব না হয়, তাহলে চাকরিটাও ছেড়ে দেব।” চরম আতঙ্ক ঘিরে ধরেছে তাঁকে। বলেন, “আমাকে যেভাবে মারধর করা হয়েছে, তাতে আমি এই কলেজে কিছুতেই আর কাজ করতে চাই না।” অন্যদিকে এই ঘটনায় অভিযুক্ত অজয় ঘোষকে জানতে চাওয়া হয় কেন তিনি অধ্যক্ষকে মারলেন? উত্তরে অজয় ঘোষ বলেন, “সেই সময় আমার মানসিক অবস্থা ভালো ছিল না। সেখানে যদি নিজের বাবাও থাকত, আমি তাঁকেও মারতাম। আমি উত্তেজনার বশে এই কাজ করেছি। অধ্যক্ষের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। যদিও এই ঘটনায় এখনও অভিযুক্ত অধরা।”



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *