‘চাঁদের বুড়ি’ থেকে শনির বলয়, নিজেদের তৈরি টেলিস্কোপে আকাশপানে চোখ রাখছে ছাত্রছাত্রীরা

‘চাঁদের বুড়ি’ থেকে শনির বলয়, নিজেদের তৈরি টেলিস্কোপে আকাশপানে চোখ রাখছে ছাত্রছাত্রীরা

বৈশিষ্ট্যযুক্ত/FEATURED
Spread the love


অর্ণব দাস, বারাসত: ‘বিপুলা এ পৃথিবীর’ যতটুকু জানি, তার চেয়ে ঢের কম জানি মহাবিশ্বের রহস্যের কথা। মহাকাশের রহস্য চির অজানা, তাই তা এত আগ্রহের। তবে সেই রহস্যভেদের চেষ্টার বাইরে আজকাল শৈশব, কৈশোর ডুবে থাকে মোবাইলে। সেই অভ্যাস বদলে পড়ুয়াদের মহাজাগতিক জগৎ এই আগ্রহ বাড়িয়ে তুলতে তৎপর গোবরডাঙার এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। তার জন্য আবার প্রয়োজন টেলিস্কোপ। অনেক ক্ষেত্রেই সকলের কেনা সম্ভব হয়ে ওঠে না। সেকথা মাথায় রেখে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা গোবরডাঙার রেনেসাঁস ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে কচিকাঁচারা তৈরি করে ফেলল টেলিস্কোপ। যার নূন্যতম খরচ ৩০০, ৪০০ টাকা। মোবাইলে আসক্তি কমাতে ‘নিজের হাতে তৈরি টেলিস্কোপে নিজের আকাশ দেখা’ – এই চিন্তাভাবনা থেকেই এই উদ্যোগটি নেওয়া হয়েছে বলেই জানিয়েছে গোবরডাঙার রেনেসাঁস ইনস্টিটিউটের সদস্যরা।

পড়ুয়াদের আরও বিজ্ঞানমনস্ক করে তুলতে একাধিক উদ্যোগ নিয়ে থাকে এই সংস্থা। এবার তাদের একদিনের কর্মশালাতেই লেন্স, লেন্স হোল্ডার, বডি টিউব এবং অ্যাডজাস্টমেন্ট স্ক্রু দিয়ে ৭ থেকে ১৫ বছর বয়সি জনা কুড়ি-বাইশ পড়ুয়া বানিয়ে ফেলল ১০টি ৫০মিলিমিটারের টেলিস্কোপ। তাতে চোখ রেখে খুদেরা অনায়াসেই দেখতে পেয়েছে চাঁদের পাহাড়, চাঁদের গর্ত, চাঁদের প্যাটার্ন-সহ সৌরকলঙ্ক। লেন্স আর একটু বাড়ালেই দেখা যাবে বৃহস্পতি চারটি উপগ্রহ।

গোবরডাঙার এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সাহায্যে স্কুলের কচিকাঁচারা নিজেদের তৈরি টেলিস্কোপেই আকাশ দেখছে। নিজস্ব ছবি।

জানা গিয়েছে, যেই পড়ুয়ার মহাকাশ দেখার জন্য প্রথম টেলিস্কোপে চোখ রাখবে, তারা কর্মশালা থেকে ৪০ মিলিমিটার টেলিস্কোপ নিজেরাই তিন-চারশো টাকা খরচে বানাতে শিখেছে। তাঁরাই ৭০০০, ৮০০০ টাকা খরচে ৯০মিলিমিটারের টেলিস্কোপ তৈরিও শিখে গিয়েছে। তাতে শনির বলয় পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে। ওয়ার্কশপে টেলিস্কোপ আপডেট করা থেকে মেরামত – সবটাই শিখেছে পড়ুয়ারা। আগ্রহ তৈরি হয়েছে অন্যান্যদেরও। রেনেসাঁস ইনস্টিটিউটের সদস্য পার্থ ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, “অভিভাবকদের থেকে সবসময় ছেলেমেয়েরা মোবাইলে আসক্ত হয়ে উঠছে। তাই তাদের হাতে বিকল্প কিছু তুলে দেওয়া প্রয়োজন। আর পড়ুয়ার যদি নিজের হাতে টেলিস্কোপ তৈরি করে ফেলে, তাহলে উৎসাহে নিজেরাই আকাশ দেখা শুরু করবে। যত দেখবে তত শিখবে। চোখে দেখার বাইরেও কত মহাজাগতিক জিনিস রয়েছে, তা উপলব্ধি করতে পারবে। এতে অনেকেই অ্যাস্ট্রোফিজিক্স বা অ্যাস্ট্রোনমির প্রতি আরও আগ্রহ বাড়বে।”

প্রথমবার টেলিস্কোপ তৈরি করে সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী দীপ্তা মুখোপাধ্যায় জানিয়েছে, ”প্রথমবার মহাকাশ দেখে ভীষণ খুশি। নতুন অভিজ্ঞতা। বিষয়টি খুবই আগ্রহের।” এভাবেই পড়ুয়াদের আকাশ দেখা চলুক, শুভেচ্ছা জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *