সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাণিজ্যচুক্তি সম্পন্ন না হওয়ায় ২৫ শতাংশ শুল্কের কোপ পড়েছে ইতিমধ্যেই। রুশ তেল কেনার জেরে আরও ২৫ শতাংশ শুল্কের কোপ পড়ার কথা আগামী ২৭ আগস্ট। সবমিলিয়ে ৫০ শতাংশ মার্কিন শুল্কের খাঁড়া ঝুলছে ভারতের উপর। এহেন পরিস্থিতিতে ট্রাম্পের মারের দাওয়াই খুঁজতে ৭ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে জরুরি বৈঠকে বসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সূত্রের খবর, সোমবার রাতে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ৭ লোককল্যাণ মার্গে শুরু হচ্ছে এই বৈঠক।
সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যাচ্ছে, মোদির বাসভবনে হতে চলা এই বৈঠকে উপস্থিত থাকছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ ও বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল। এছাড়াও মন্ত্রিসভার আরও ৫ সদস্য থাকবেন বৈঠকে। হাইভোল্টেজ এই বৈঠকের মূল লক্ষ্য হবে আলোচনার মাধ্যমে বাণিজ্য সমস্যার সমাধানের রাস্তা খোঁজা। পাশাপাশি আমেরিকায় পণ্য রপ্তানি বন্ধ হলে ভারতের ঠিক কতখানি আর্থিক ক্ষতি হতে পারে সেটাও খতিয়ে দেখা হবে। সেক্ষেত্রে চিনের পথে হেঁটে আমেরিকার উপর পালটা শুল্ক চাপানো যেতে পারে কিনা সেটাও খতিয়ে দেখা হবে এই বৈঠকে।
উল্লেখ্য, ভারত-মার্কিন বাণিজ্য চুক্তির পথে মূল বাধা হয়ে উঠেছে কৃষি ক্ষেত্র। আমেরিকা চায় ভারতের কৃষি ও পশুপালন ক্ষেত্রে প্রবেশ করতে। তবে ভারত স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে কোনওভাবেই কৃষকদের স্বার্থের সঙ্গে আপস করা হবে না। এই অবস্থায় দুই দেশের প্রতিনিধিদলের বাণিজ্য আলোচনা দফায় দফায় বিফল হয়েছে। এই ইস্যুতে গত ২৫-২৯ আগস্ট পর্যন্ত দিল্লিতে ষষ্ট দফার বৈঠকের কথা ছিল ভারত ও মার্কিন প্রতিনিধিদের মধ্যে। যদিও অজ্ঞাত কারণে সে বৈঠক আপাতত বাতিল করেছে আমেরিকা। এই অবস্থায় ২৭ আগস্ট থেকে ভারতের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপার কথা রয়েছে। যদিও ট্রাম্প আভাস দিয়েছেন এখনই ২৫ শতাংশ বাড়তি শুল্ক ভারতের উপর নাও চাপানো হতে পারে। তবে ট্রাম্পের আভাসে আশ্বস্ত হওয়ার কোনও জায়গা নেই বলেই মনে করছে কূটনৈতিক মহল।
এদিকে এই জরুরি বৈঠক এমন একটি সময়ে হচ্ছে যখন ভারত সফরে এসেছেন চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই। সোমবার তাঁর সঙ্গে বৈঠক করছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর। ওয়াং ই-এর সঙ্গে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিরও। এই পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক মহলের দাবি, শুল্ককে অস্ত্র করে গোটা বিশ্বে দাপট দেখাতে শুরু করেছে আমেরিকা। তার কুফল ভুগছে এশিয়ার অন্যান্য দেশগুলি। এই অবস্থায় ট্রাম্পের দাওয়াই হিসেবে একজোট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ভারত ও চিনের। সাম্প্রতিক সময়ে মোদির চিন সফর ও চিনের তরফে ভারতের পাশে থাকার আশ্বাস সেই সম্ভাবনার দিকেই ইঙ্গিত দিচ্ছে। সমস্ত সম্ভাবনার দিক পাশাপাশি রেখে মোদির জরুরি বৈঠক থেকে কী উঠে আসে সেদিকেই নজর দেশের।