প্রসূন বিশ্বাস: ইতিহাস বলছে, এখনও অবধি ঘরের মাঠে আইএসএল ফাইনাল জিততে পারেনি কোনও টিম। অতীতে এফসি গোয়া, কেরালা ব্লাস্টার্স বেঙ্গালুরু এফসি হেরেছে। গতবার একই ফল হয়েছে মোহনবাগানেরও। ফেভারিট হয়েও ঘরের মাঠে মুম্বই সিটি এফসির কাছে হারতে হয়েছিল শুভাশিস বসুদের। সেই ম্যাচে মোহনবাগান কোচের চেয়ারে ছিলেন আরেক স্প্যানিশ কোচ আন্তেনিও লোপেজ হাবাস। তিনিও লিগ-শিল্ড জিতেছিলেন। শনিবাসরীয় সন্ধ্যায় অতীতের এই ইতিহাস কি বদলাতে পারবেন জোসে মোলিনা?
বরাবর শান্ত, ধীর স্থির মোহনবাগানের স্প্যানিশ কোচ এই তথ্য নিয়ে মাথা ঘামাতে নারাজ। অতীত আর ভবিষ্যৎ নিয়ে খুব বেশি ভাবনা-চিন্তা করেন না তিনি। বারবার বলেন, বর্তমান নিয়ে বাঁচতে ভালোবাসেন। স্বাভাবিকভাবে ইতিহাসকে বদলে ফেলে শনিবার নতুন চিত্রনাট্য লিখতে পারবেন? উত্তরে আত্মবিশ্বাসী মোলিনা বলেন, “এখানে আমরা এসেছি লড়াই করতে। অতীত নিয়ে ভাবি না। এখন জয় ছাড়া আর অন্য কিছু মাথায় নেই।” বরং ঘরের মাঠে ভরা গ্যালারিকে দ্বাদশ ব্যক্তি বলেই মনে করছেন মোহনবাগানের হেডস্যর। বাস্তববাদী মোলিনা দৃষ্টিনন্দন ফুটবলের চেয়েও জয়কেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। ফাইনালে নামার আগে তিনি যোগ করছেন, “আমরা সমর্থকদের জন্য খেলি। ওদের খুশি করাই আমাদের কাজ। জিতলে সমর্থকরা খুশি হবেন। যদি না পারি তাহলে ওরা খুশি হবে না। স্কোর লাইন যাই হোক শনিবার জয়টা প্রয়োজন।”
লিগ-শিল্ড জয়ের ফলে ফুটবলারদের আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে রয়েছে বলে মনে করছেন মোলিনা। একই সঙ্গে প্রতিপক্ষ বেঙ্গালুরু এফসি-কেও যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছেন। তিনি বলছেন, “মোটিভেশনের চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছি আমরা। আমরা শিল্ড জিতেছি। সেমিফাইনালেও যথেষ্ট কঠিন ম্যাচ খেলেই ফাইনালে উঠেছি। এবার ডবল করতে মুখিয়ে আছি। এটাই আমাদের মোটিভেশন। প্রতিপক্ষ সত্যি কঠিন। ফাইনাল সবসময়ই কঠিন হয়, তা যে প্রতিপক্ষই থাকুক না কেন।” ফাইনালে উঠে আসার জন্য মোলিনা ধন্যবাদ দিচ্ছেন ফুটবলারদেরও।
তবে শুক্রবার অনুশীলনে যেভাবে কামিংসদের তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে পর্যবেক্ষণ করছিলেন, তাতে বেশ বোঝা যাচ্ছিল, শনিবার জয় না আসা পর্যন্ত এতটুকু রাশ হালকা করতে নারাজ মোহনবাগান কোচ। কামিংসদের শরীরিভাষায় যতটা আত্মবিশ্বাসের ছাপ রয়েছে, কোচ যেন ততটাই সতর্ক। হয়তো গতবার ফাইনালে মোহনবাগানের কোচের চেয়ারে তিনি ছিলেন না। কিন্তু আত্মবিশ্বাসী হয়েও যে অল্পের জন্য ট্রফি হাত থেকে ফস্কে যায়, তা শুভাশিসদের থেকে জেনেছেন তিনি। তাই গতবারের ফলকে সরাসরি গুরুত্ব দিতে না চাইলেও, বলাই যায় সেই হার থেকে দলকে শিক্ষা নিতে বলেছেন মোলিনা।