ডায়মন্ড হারবার: ২ (মিকেল, জবি)
ইস্টবেঙ্গল: ১ (আনোয়ার)
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ডার্বির জয়ী দল হোঁচট খায় পরের ম্যাচেই। চিরপ্রচলিত এই প্রবাদটিকে সত্যি প্রমাণিত করল ইস্টবেঙ্গল। বুধবার যুবভারতীতে ডুরান্ডের সেমিফাইনালের রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে ডায়মন্ড হারবারের কাছে ১-২ গোলে হেরে গেল অস্কার ব্রুজোর ছেলেরা। একটা সময় ইস্টবেঙ্গলে খেলতেন জবি জাস্টিন। সেই ‘ঘরের ছেলে’র গোলেই জয়সূচক গোলেই কুপোকাত হতে হল ইস্টবেঙ্গলকে। আর অভিষেকেই মাঠে ফুল ফুটিয়ে ডুরান্ড কাপের ফাইনালে উঠল ডায়মন্ড হারবার। কিবু ভিকুনার দলের সামনে শনিবার ফাইনালে প্রতিপক্ষ নর্থইস্ট।
এদিন অনবদ্য প্রথমার্ধ দেখল দুই দলের সমর্থকরাই। ৪ মিনিটে প্রথম আক্রমণ শানায় ইস্টবেঙ্গল। ডান প্রান্তিক আক্রমণ থেকে জোড়া কর্নারও পায়। ডায়মন্ড ডিফেন্স সজাগ থাকায় গোল হয়নি। ৮ মিনিটে গোলের সুযোগ পেয়ে যায় কিবু ভিকুনার দলও। হালিচরণ নার্জারির শট কোনও মতে রুখে দেন প্রভসুখান সিং গিল। ১৫ মিনিটে বল তিন কাঠির মধ্যে রাখতে পারেননি মিগুয়েল। ১৮ মিনিট জবি জাস্টিন অনায়াসেই এগিয়ে দিতে পারতেন ডায়মন্ড হারবারকে। ২১ মিনিটে আনোয়ার আলির শট রুখে দেম ডায়মন্ড গোলকিপার মিরশাদ মিচু।
বোঝাই যাচ্ছে, প্রতি মুহূর্তে তুল্যমূল্য লড়াই চলেছে দুই দলের মধ্যে। ২৩-২৫ মিনিটের মিনিটের ব্যবধানে ডায়মন্ড হারবার এফসি প্রথম গোলের দু’টি সুবর্ণ সুযোগ তৈরি করে। প্রথম শটটি ক্রসবারে লাগলেও, দ্বিতীয় সুযোগটি হেলায় হারান জবি জাস্টিন। অনবদ্য পাস পেয়েও ক্রসবারের উপর দিয়ে উড়িয়ে দেন তিনি। ৩৭ মিনিটে লুকার দূরপাল্লার শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ৪১ মিনিটে হেড গোলের মধ্যে রাখতে পারেননি দিয়ামান্তাকোস। পরের মিনিটেই সুযোগ নষ্ট বিপিন সিংয়ের। বিরতির ঠিক আগে মহেশের আক্রমণ আটকে দেন বিপক্ষের গোলকিপার। প্রথমার্ধের খেলা শেষ হয় গোলশূন্য অবস্থায়।
দ্বিতীয়ার্ধে নুঙ্গা ও এডমুন্ডকে তুলে নামানো হয় প্রভাত লাকরা ও জিকসন সিংকে। তবে ৫০ মিনিটে মহেশের থেকে বল পেলেন দিয়ামান্তাকোস ফার্স্ট পোস্টে বল রাখতে গিয়ে সাইড নেটে মেরে বসেন। ৫৪ মিনিটে মিগুয়েলের কর্নার থেকে বল পেয়ে ফাঁকা গোল পেয়েও বল দিয়ামান্তাকোসের হেড বাইরে চলে যায়। ৫৬ মিনিটে বিপিন সিংও মিস করলেন। এভাবেই যেন গোল মিসের প্রদর্শনীতে মেতে ওঠেন লাল-হলুদ ফুটবলাররা। ৬৪ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে দুরন্ত শট নেন জিকশন সিং। আটকে দেন ডায়মন্ড গোলকিপার। ফিরতি বলে আবারও শট নিয়েছিলেন তিনি। আবার সেভ করেন মিরশাদ।
৬৫ মিনিটে মিকেলের অনিন্দ্যসুন্দর ব্যাকভলিতে এগিয়ে যায় ডায়মন্ড হারবার। কিন্তু এই আনন্দ বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি ডায়মন্ডের। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই গোল শোধ ইস্টবেঙ্গলের। মাঝমাঠ থেকে নেওয়া শটে বিশ্বমানের গোল করে লাল-হলুদকে সমতায় ফেরান আনোয়ার আলি। ৭২ মিনিটে সল ক্রেসপোর জায়গায় মাঠে নামেন রশিদ। পিতৃবিয়গের কারণে দেশে ফিরে গিয়েছিলেন। ডার্বি খেলতে পারেননি। কিন্তু এদিন ভারতে ফিরেই সেমিফাইনালে নেমে পড়লেন তিনি। গোটা মাঠ উঠে দাঁড়িয়ে তাঁকে কুর্নিশ জানায়। ৭৯ মিনিটে বাঁ পায়ের বাঁক খাওয়ানো শট পোস্টে লেগে প্রতিহত হয়। ৮৩ মিনিটে কর্নার থেকে বল পেয়ে বল লাল-হলুদের জালে জড়িয়ে দেব জবি জাস্টিনের। গোলের পর উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে দেখা যায়নি প্রাক্তন এই ইস্টবেঙ্গলি ফুটবলারকে। ৮৫ মিনিটে সহজ সুযোগ পেয়েও বাইরে মারেন রশিদ। ৮৯ মিনিটে বিপিন সিং ও প্রভাত লাকরার জায়গায় নামানো হল পিভি বিষ্ণু ও ডেভিড লালহানসাঙ্গাকে। তাতেও কাজের কাজ কিছু হয়নি। গোল মিসের মহড়ায় মেতে ম্যাচ মাঠে ফেলে এল ইস্টবেঙ্গল।