অভিরূপ দাস: ফের বাংলায় ভিন রাজ্যের ভেজাল ওষুধ। এবার ড্রাগ কন্ট্রোল বোর্ডের ল্যাবরেটরিতে গুনমান পরীক্ষায় ফেল করল ইউরিম্যাক্স ডি (URIMAX-D) টামসুলোসিন হাইড্রোক্লোরাইড ডুটাস্টেরাইড ট্যাবলেট। জানা গিয়েছে, এই ওষুধ যে সংস্থার তাদের কারখানা আরবসাগরের তীরে গোয়ায়। প্রস্টেটের অসুখের গুরুত্বপূর্ণ ওষুধ এই ইউরিম্যাক্স ডি। প্রস্টেট বেড়ে গেলে চিকিৎসকরা আকছার এই ওষুধ প্রেসক্রাইব করেন। সেই ওষুধ জাল বেরনোয় চিন্তায় চিকিৎসকরা।
ইন্সটিটিউট অফ চাইল্ড হেলথের অধ্যক্ষ ডা. জয়দেব রায় জানিয়েছেন, ওষুধের মানের সঙ্গে কোনওভাবেই সমঝোতা করা যাবে না। তাঁর ব্যক্তিগত মত, “লাভের জন্য ওষুধ সংস্থা ওষুধের দাম সামান্য বাড়াক। কিন্তু অতিরিক্ত লাভের জন্য ওষুধে নিম্নমানের উপাদান ব্যবহার বেআইনি।” বিগত কয়েকমাসে গুচ্ছ গুচ্ছ জাল ওষুধ বাজেয়াপ্ত করেছে রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোল বোর্ড। অবস্থা এমনই নতুন সংস্থার ওষুধ প্রেসক্রাইব করতে ভয় পাচ্ছেন চিকিৎসকরা। ডা. জয়দেব রায় জানিয়েছেন, “অনেক সময় প্রেসক্রিপশনে কোনও ওষুধ লিখে দিচ্ছি সেটা হয়তো রোগীর পরিবার দোকানে পাচ্ছেন না। একই কম্পোজিশনের অন্য ওষুধ পাচ্ছেন। কিন্তু সেই কোম্পানি আনকোরা-নতুন। এমন সংস্থার ওষুধ কিনতে ভয় পাচ্ছেন ক্রেতারা। আমরাও বারণ করছি।”
সম্প্রতি যে ইউরিম্যাক্স-ডি ট্যাবলেট গুণমান পরীক্ষায় ফেল করেছে তার ব্যাচ নম্বর 4GH0097, মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার তারিখ নভেম্বর ২০২৫। রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোল বোর্ড জানিয়েছে, একটি নামী সংস্থা এই ওষুধ তৈরি করেছে। তাদের কারখানা গোয়ায়। ড্রাগ কন্ট্রোলের ইন্সপেক্টর চঞ্চল দত্ত বাজেয়াপ্ত করেন এই ওষুধ। জানা গিয়েছে, বাজেয়াপ্ত করার সময় ওষুধের স্ট্রিপ ছিল অক্ষুন্ন।
বঙ্গের স্টেট ড্রাগ টেস্টিং ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করা হতেই ড্রাগ কন্ট্রোলের আধিকারিকদের চক্ষু চড়কগাছ। নির্দিষ্ট ব্যাচ নম্বরের এই ওষুধ যে গুণমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেনি তার নোটিস পাঠানো হয়েছে স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ দপ্তরে। নোটিস পাঠানো হয়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা, ডেপুটি ডিরেক্টর হেলথ সার্ভিস, প্রতিটি জেলার ড্রাগ কন্ট্রোলারের কাছে। রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোল বোর্ডের এক কর্তা জানিয়েছেন, বাংলার প্রতিটি খুচরো বিক্রেতাদের জানানো হচ্ছে দোকানে এই নির্দিষ্ট ব্যাচ নম্বরের ওষুধ থাকলে অবিলম্বে তা প্রত্যাহার করতে হবে। উল্লেখ্য, গত ২১ ফেব্রুয়ারি হাওড়ার আমতায় জাল ওষুধ চক্রের পর্দা ফাঁস হয়। ১৭ লক্ষ টাকার জাল ওষুধ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। এবার সেই হাওড়া থেকেই জাল ওষুধ ধরল রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোল বোর্ড।