গানের সোনালি চতুর্ভুজ

গানের সোনালি চতুর্ভুজ

আন্তর্জাতিক INTERNATIONAL
Spread the love


  • অভীক চট্টোপাধ্যায়

আধুনিক বাংলা গানের জগতে যাঁদের অননুমেয় সুরকার হিসেবে চিহ্নিত করা যায়, তার মধ্যে নচিকেতা ঘোষ হলেন অন‍্যতম। বাংলা গানের জগতে অনুমানের অসাধ‍্য সুরসৃষ্টির ব‍্যাপারে, তাঁর পূর্বসূরি হিসেবে নাম করা যায় সুরসাগর হিমাংশু দত্ত ও অনুপম ঘটকের। বাকি দুজনের মতোই নচিকেতা সুরারোপিত একাধিক গানকে পাশাপাশি রাখলে, বিস্ময় জাগে, তা একই সুরকারের সৃষ্টি ভেবে! তবে নচিকেতার কাজের সংখ‍্যা অন‍্য দুই কিংবদন্তির তুলনায় বেশি এবং অবশ্যই নিজস্বতায় ভরা। যা তাঁকে অন‍্যদের থেকে আলাদা করে চেনায়। অনেক উদাহরণ এ বিষয়ে দেওয়া যায়। যা এক অন‍্য আলোচনার বিষয়। আমরা বরং নজর দিই একটি বিশেষ দিকে।

            যে ১৯৫০-এর দশকে সংগীত পরিচালক নচিকেতার উত্থান, সেই সময় আধুনিক এবং ছায়াছবির গান টগবগে যৌবনে উপনীত। ঝাঁকে ঝাঁকে অসামান্য প্রতিভাবান গীতিকার, সুরকার ও গায়ক-গায়িকাদের মাধ‍্যমে একের পর এক গান মাতিয়ে চলেছে বাংলার চরাচর। এর মধ্যে নচিকেতার সুরপ্রতিভার বিচ্ছুরণ, নিজেকে স্বতন্ত্র রূপে প্রতিষ্ঠা করল। ১৯৫০ দশক থেকে ১৯৭০ দশকের শেষ অবধি বাংলার প্রায় সমস্ত বিশিষ্ট শিল্পীর একাধিক গান জনপ্রিয় হয়েছে তাঁর সুরে। যার মধ্যে অন‍্যতম প্রধান দুই পুরুষ-কণ্ঠ ― হেমন্ত মুখোপাধ্যায় ও মান্না দে। নচিকেতা-সৃজনে এঁদের প্রায় সব গানই বাংলা গানের জগতে একেকটি মাইলস্টোন। যা আজও সজীব শ্রোতা-হৃদয়ে। তবে এই দুই কিংবদন্তিই বেসিক আধুনিক গানের তুলনায় এই সুরকারের সুরে ছায়াছবিতে বেশি গেয়েছেন। সেখানে অধিকাংশ গান কিন্তু লেখা গৌরীপ্রসন্ন মজুমদারের।

          নচিকেতা ঘোষের সুরে হেমন্ত-কণ্ঠ প্রথমবার মুখরিত হয় ১৯৫৬ সালে ‘অসমাপ্ত’ ছবিতে― ‘কান্দো কেনে মন রে…’ গানে। লোকসংগীতের আঙ্গিকে অভিনব কম্পোজিশন! প্রসঙ্গত, নচিকেতার কাছে অনুমতি নিয়ে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, এই সুরে তাঁর সুরারোপিত মারাঠি ছবি ‘নায়কিনিয়া সাজ্জা’ (১৯৫৭)-তে লতা মঙ্গেশকর ও সমবেত কণ্ঠের সহযোগে গেয়েছিলেন― ‘তাণ্ডা চলে চলে রে…’। এর পর চলল যুগলের জয়যাত্রা। উত্তম-ঠোঁটে ‘পৃথিবী আমারে চায়’ (১৯৫৭) ছবিতে  দুটি অভাবনীয় কম্পোজিশন, ‘ঘরের বাঁধন ছেড়েই যদি…’ ও ‘দূরের মানুষ কাছে এসো…’। মহানায়কেরই লিপে ‘বন্ধু’ (১৯৫৮) ছবির ‘মৌ বনে আজ মৌ জমেছে…’ এবং ‘মালতী ভ্রমরে…’ কি ভোলা যায়। সম্পূর্ণ দুই বিপরীত চলনের কম্পোজিশন। জটিল স্ক‍্যানিং। কিন্তু সবমিলিয়ে মন ভরানো।

শাস্ত্রীয় গানের ছোঁয়া মাখানো দ্বিতীয় গানটি প্রথমে হেমন্ত গাইতে চাননি। নচিকেতার জোরাজুরিতে গাইলেন। আর তার ফলে কী হল, তা নতুন করে বলা মানে বোকামি। এর পর ‘ইন্দ্রাণী’ (১৯৫৮)। চিরজনপ্রিয় জুটি উত্তম-সুচিত্রার ছবি। হেমন্ত-র একক কণ্ঠে ‘সূর্য ডোবার পালা…’ ও গীতা দত্তের সঙ্গে ‘নীড় ছোটো ক্ষতি নেই…’ গানের সুরে যেমন প্রেমের বন‍্যা, তেমনি হেমন্তরই গাওয়া ‘ভাঙরে ভাঙরে ভাঙ…’ গানের কম্পোজিশনে গণসংগীতের আভাস। ‘চাওয়া পাওয়া’ (১৯৫৯) ছবিতে সুচিত্রা-ঠোঁটে সন্ধ‍্যা মুখোপাধ‍্যায়ের অপূর্ব রোমান্টিক গানের পরেই হেমন্ত-কণ্ঠে উত্তম গেয়ে ওঠেন  ‘যদি ভাবো এ তো খেলা নয়…’। তালছাড়া গানটি যেন প্রেমম‍য় বাতাসে ভেসে চলা সুররচনার মধ‍্যে দিয়ে গিয়ে শিল্পীর অপরূপ কণ্ঠে মূর্ত হয় এবং নায়িকার গানের প্রত‍্যুত্তর হয়ে ওঠে। এভাবেই ‘পার্সোনাল অ্যাসিস্ট‍্যান্ট’ (১৯৫৯) ‘হাত বাড়ালেই বন্ধু’ (১৯৬০), ‘ধন‍্যি মেয়ে’ (১৯৭১) ইত‍্যাদি ছবিতে নচিকেতা-হেমন্ত উৎপাদিত জনপ্রিয় গানের একাধিক অসামান্য নজির রয়েছে। ১৯৭২ সালে ‘স্ত্রী’  ছবিতে একক কণ্ঠে গাইলেন ‘খিড়কি থেকে সিংহদুয়ার…’ ও ‘সাক্ষী থাকুক ঝরাপাতা…’। আর এই ছবিতেই হেমন্ত-মান্না দ্বৈতকণ্ঠের দুটি গান, দুই কিংবদন্তির একত্রে পরিবেশন হিসেবে সেরা হয়ে আছে― ‘হাজার টাকার ঝাড়বাতিটা…’ ও ‘সখি কালো আমার ভালো লাগে না…’।

          নচিকেতার সুরে হেমন্ত-র গাওয়া প্রথম বেসিক গান ১৯৫৭ সালে― ‘মেঘ কালো আঁধার কালো…’। একটি চিরজনপ্রিয় সৃষ্টি। এর পর, ১৯৬২ সালে ‘তার আর পর নেই…’ ও ‘তুমি এলে অনেকদিনের পরে…’ (মুকুল দত্তের লেখা প্রথম বাংলা গান)। এভাবেই ‘কোন পাখি ধরা দিতে চায়…’, ‘এক গোছা রজনীগন্ধা…’ ইত‍্যাদি একের পর এক অসামান্য গান বিভিন্ন বছরে হেমন্ত-কণ্ঠ থেকে ঝরে পড়েছে নচিকেতার সুরারোপে।

          হেমন্ত মুখোপাধ‍্যায়ের মতোই মান্না দে-ও নচিকেতার সুরসৃজন প্রথমবার কণ্ঠে ধারণ করেছিলেন ছায়াছবিতে। ১৯৫৭ সালে ‘হরিশ্চন্দ্র’ ছবিতে প্রতিমা বন্দ‍্যোপাধ‍্যায়ের সঙ্গে দ্বৈতকণ্ঠে মান্না  গাইলেন, ‘কোথা তুমি মহারাজ…’। এর পর অনেকদিনের বিরতি। আসলে, এই সময়ে প্রায় দশ বছর নচিকেতা ছিলেন মুম্বইয়ে, হিন্দি ছবির আঙিনায়। তিনি ফিরে আসার পর, আবার বাংলা গানের দুনিয়ায় জড়িয়ে গেলেন পুরোপুরিভাবে।

           ১৯৬৯ সালে মুক্তি পেল উত্তম-সুপ্রিয়া অভিনীত ‘চিরদিনের’। এতে নচিকেতার সুরে মান্না-কণ্ঠ গানের বন‍্যা বইয়ে দিল। ‘মানুষ খুন হলে পরে…’, ‘ফুল পাখি বন্ধু আমার ছিল…’, ‘তুমি আমার চিরদিনের…’ (সহযোগী শিল্পী সন্ধ‍্যা মুখোপাধ্যায়), ‘লাল নীল সবুজেরই মেলা বসেছে…’। শুনলেই বোঝা যায়, প্রত‍্যেকটি গানের সুরগঠন একে অপরের থেকে কতটা আলাদা। ছবির কাহিনী, চরিত্র-ধরন ও সিচুয়েশন অনুযায়ী গানগুলি অসম্ভব বৈচিত্র্যের রূপ নিয়ে মিলেমিশে গেছে। এই ছবি থেকেই নচিকেতা-মান্না জুটি প্রতিষ্ঠা পেয়ে গেল। এরপর দুরন্ত গতিতে শুরু হল যুগলের সংগীতাভিযান। ‘বিলম্বিত লয়’-এ (১৯৭০) শাস্ত্রীয় ধাঁচে কিন্তু মেলোডিতে ভরা ‘বেঁধোনা ফুল মালাডোরে…’ (সহযোগী শিল্পী আরতি মুখোপাধ‍্যায়)। একই বছর ‘নিশিপদ্ম’ ছবিতে সম্পূর্ণ দুটি বিপরীতধর্মী কম্পোজিশন― ‘না না না আজ রাতে…’ এবং ‘যা খুশি ওরা বলে বলুক…’।

উত্তমকুমারের অনবদ্য অভিনয় সহ প্রথম গান মাতন তোলে দৃশ‍্যে। সঙ্গে অসামান্য অভিনয়-সংগত জহর রায়ের। আর দ্বিতীয় গানটির অর্থবহ বাণীর সঙ্গে সুরের আদর্শ আলিঙ্গন ‘অনঙ্গ দত্ত’-র (উত্তমকুমার) অন্তর্নিহিত সত্তাকে পরিষ্কার করে দেয়। ‘ধন‍্যি মেয়ে’ (১৯৭১) ছবিতে মান্নার দুরন্ত ভঙ্গিতে গাওয়া ‘সব খেলার সেরা বাঙালির তুমি ফুটবল…’ তো ফুটবলপাগল বাঙালির থিম সঙে পরিণত হয়েছে। ‘সুজাতা’-য় (১৯৭৪) তুলনামূলকভাবে কম জনপ্রিয় ‘কত না নদীর জন্ম হয়…’ মন ছুঁয়ে যায়। অনবদ্য কমেডি ‘মৌচাক’-এ (১৯৭৫) ‘এবার মলে সুতো হব…’, ‘তা বলে কি প্রেম দেবে না…’ ও ‘পাগলা গারদ কোথায় আছে…’ (সঙ্গে আশা ভোঁসলে ও সমবেত কণ্ঠ) গানগুলির সুরে যেমন বৈচিত্র্যে ভরা মজা এনেছেন নচিকেতা, তেমনই তার প্রতি সুবিচার করেছেন মান্না।

         এবার ‘সন্ন‍্যাসী রাজা’ (১৯৭৫)। মহানায়ক অভিনীত অন‍্যতম সেরা ছবি। এ ছবিতে ছোট-বড় মিলিয়ে ৯টি গান গেয়েছিলেন মান্না। যেভাবে শুরুর ‘কাহারবা নয় দাদরা বাজাও…’ থেকে একের পর এক বিভিন্ন চলনের গান পেরিয়ে ‘ভালোবাসার আগুন জ্বালাও…’ এবং শেষে তারানা অবধি পৌঁছায় সংগীত আয়োজন, তা যেন পরতে-পরতে তুলে ধরে ‘রাজা’-র অন্তর্দর্শনের একেকটি রূপ। কাহিনী, চরিত্র ও দৃশ‍্যবিন‍্যাসকে যা সুনিপুণ ভঙ্গিতে এগিয়ে নিয়ে যায়। এই একটি ছবির গানই সুরকার নচিকেতার অপরিসীম সাংগীতিক ক্ষমতা বোঝার ব‍্যাপারে যথেষ্ট। এরকম বর্ণময় সুরবৈচিত্র্যের সম্ভার, বিস্ময়ে হতবাক করে আমাদের। এর পর, ‘হোটেল স্নো ফক্স’ (১৯৭৬), ‘আনন্দমেলা’ (১৯৭৬), ‘সেই চোখ’ (১৯৭৬), ‘ব্রজবুলি’ (১৯৭৯) ইত্যাদি ছবিতেও নচিকেতা-মান্না সংযোগে বেশকিছু মনে রাখার গান হয়েছে।

         আবারও ‘সন্ন্যাসী রাজা’ প্রসঙ্গে একটি কথা। এই ছবিতে যখন ‘রাজা’ হয়ে যান ‘সন্ন্যাসী’, তখন হঠাৎই কাহিনী ও দৃশ‍্যের পটপরিবর্তন ঘটে। দেখা যায়, ভোরের সূর্যের ঊষা-আলোকে সমুদ্রের ধার দিয়ে চলেছেন কয়েকজন সন্ন‍্যাসী। আর তখনই অপরূপ সুরে ভেসে আসে উপনিষদের স্তোত্র― ‘কা তব কান্তা কস্তে পুত্রাঃ…’। এর আগে পর্যন্ত মান্না দে-র রাজত্ব চলার পর, এই স্তোত্রসংগীতে দেবকণ্ঠের অধিকারী হেমন্ত মুখোপাধ্যায় উদ্ভাসিত হলেন। ভক্তি ও প্রেমের এক ব‍্যাখ‍্যাতীত আবহ রচিত হল মুহূর্তে। এই জন‍্যেই বোধহয় বলা হয়, নচিকেতা ঘোষ শুধু একজন বৈচিত্র্যময় সুরকারই নন, গান অনুযায়ী শিল্পী নির্বাচন বা শিল্পী অনুযায়ী গান তৈরির ক্ষেত্রেও ছিলেন অতুলনীয় সাংগীতিক বোধের অধিকারী।

          হেমন্ত মুখোপাধ‍্যায়ের মতোই ছবির গানের তুলনায় নচিকেতা-সুরে মান্না দে-র বেসিক গানের সংখ্যা অনেক কম। ১৯৭১-এ ‘‘ক’ফোঁটা চোখের জল…’’ ও ‘আকাশপানে চেয়ে চেয়ে…’, ১৯৭৪-এ ‘আমার ভালোবাসার রাজপ্রাসাদে…’, ‘ওগো বরষা তুমি ঝোরো না গো…’, ‘তুমি একজনই শুধু বন্ধু আমার…’ এবং ‘যদি কাগজে লেখো নাম…’। শুধুমাত্র উল্লেখেই স্পষ্ট, গানগুলি আজও কীভাবে বিরাজমান শ্রোতামনে।

         এতক্ষণ উল্লিখিত দুই শিল্পীর গানগুলির কয়েকটি বাদে অধিকাংশই গৌরীপ্রসন্ন মজুমদারের লেখা। যিনি ছিলেন নচিকেতা ঘোষের অভিন্নহৃদয় বন্ধু এবং এই জুটির সৃষ্টি অজস্র বেসিক ও ছবির গান বিভিন্ন শিল্পীর কণ্ঠে ইতিহাস হয়ে আছে। ১৯৫৮ সালে হেমন্ত মুখোপাধ‍্যায়ের গাওয়া এই যুগল-নির্মিত একটি গানের উল্লেখ ছাড়া, নচিকেতাকে নিয়ে যে কোনও বলাই অসম্পূর্ণ থেকে যায়। ধরাছোঁয়ার বাইরে এক ঐশ্বরিক স্ক‍্যানিং-এ গড়া গানটিতে সুরকার করেছেন ডিমিনিশিং কর্ডের প্রয়োগ। সম্ভবত গানটিকে নচিকেতার সেরা কম্পোজিশন বললে বোধহয় অত‍্যুক্তি হয় না। হেমন্ত-কণ্ঠে গানটি যে স্তরে পৌঁছেছে, সে এক অনন্ত জগতের বিষয় বলে যেন মনে হয়― ‘আমার গানের স্বরলিপি লেখা রবে/ পান্থপাখির কূজন কাকলি ঘিরে/ আগামী পৃথিবী কান পেতে তুমি শুনো/ আমি যদি আর নাই আসি হেথা ফিরে…’। ১৯৭৬ সালের ১২ অক্টোবর মাত্র ৫১ বছর বয়সে চলে যান এই ক্ষণজন্মা সংগীত পরিচালক।

তাঁর প্রয়াণের পরে, একটি লেখায় গৌরীপ্রসন্ন বলেছিলেন, শিল্পী পিন্টু ভট্টাচার্য যখন নচিকেতা ঘোষের চলে যাওয়ার আগের দিন তাঁর কাছে গিয়েছিলেন, তখন নাকি, ‘আমার গানের স্বরলিপি লেখা রবে গানটাকে বাজাতে বলে নচি।’ গানটি যখন চলছে, সুরকারের ‘দু’চোখে শ্রাবণের অঝোর ধারা’। সারাজীবনের অজস্র সুর-সাম্রাজ্যের অধীশ্বর এই সংগীত-কারিগর জীবনের শেষ সময়ে শুনতে চেয়েছিলেন এই গানটি। তাহলে কি এই গানটিকেই তিনি তাঁর সমগ্র সৃষ্টির মধ‍্যে এভাবেই শ্রেষ্ঠত্বের মর্যাদা দিয়ে গিয়েছিলেন জীবনের অন্তিম সময়ে?

         এ কথা তো দ্বিধাহীন ভাবে সত্যি, শতবর্ষে উপনীত অবিস্মরণীয় সংগীত পরিচালক নচিকেতা ঘোষের সুররচনায় সৃজিত গানগুলি, গৌরীপ্রসন্নর লেখা, হেমন্ত-মান্না সহ অন‍্য সব শিল্পীর কণ্ঠে, আগামী পৃথিবীকে কান পেতে শুনতেই হবে।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *