সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হামাস নিধনযজ্ঞে এবার ইজরায়েলের সেনার হাত থেকে রেহাই পেল না গাজার একমাত্র গির্জা। সম্প্রতি ওই গির্জায় ইহুদি সেনার গোলাবর্ষণের জেরে গির্জার যাজক গ্যাব্রিয়েল রোমালেনিও-সহ তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। পাশাপাশি আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১০ জন। নৃশংস এই হামলার নিন্দায় সরব হয়েছে সব মহল। চাপের মুখে এই ইস্যুতে মুখ খুলেছেন খোদ ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। এই ঘটনা ভুলবশত বলে দাবি করেছেন তিনি।
গাজায় নরকের দ্বার খুলে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। তাঁর সেই হুঁশিয়ারি যে কথার কথা নয় গত দু’বছরে তা মর্মে মর্মে উপলব্ধি করেছে গোটা বিশ্ব। হামাস ধ্বংসের নামে ইজরায়েলের হামলায় মৃত্যু হয়েছে হাজার হাজার নারী ও শিশুর। এই হামলা থেকে বাঁচতে গাজার শয়ে শয়ে মানুষ শিশু ও প্রতিবন্ধীরা আশ্রয় নিয়েছিলেন এই গির্জায়। সেখানেই কামান থেকে গোলা ছোড়ে ইজরায়েলের সেনা। এই হামলার পর দুঃখপ্রকাশ করে নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, গাজার হলিফ্যামিলি গির্জায় ভুল করে গোলা চলেছে। এই হামলায় ইজরায়েল গভীরভাবে শোকপ্রকাশ করছে। যে কোনও নিরীহ ব্যক্তির প্রাণহানি দুঃখজনক। আমরা এই ঘটনার জন্য দুঃখপ্রকাশ করছি।
তবে এই হামলাকে অনিচ্ছাকৃত ভুল বলে দাবি করলেও গাজায় হামলা চালাতে কোনও খামতি রাখছে না ইজরায়েল। লাগাতার বোমা ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা জারি রয়েছে সেখানে। চলতি সপ্তাহেই গাজার নুসাইরাত শরণার্থী শিবির থেকে জল ভরতে যাওয়া শিশুদের উপর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় নেতানিয়াহুর সেনা। এই হামলায় মৃত্যু হয়েছে ৬ শিশু-সহ ৮ জনের। এদিকে রিপোর্ট বলছে গত ২১ মাস ধরে লাগাতার ইজরায়েলের হামলায় এখনও পর্যন্ত গাজায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৮,৬০০-র বেশি মানুষের। যাঁদের মধ্যে বেশিরভাগই শিশু ও মহিলা।
অন্যদিকে আরও একটি রিপোর্ট বলছে, ইজরায়েল সেনার হামলার জেরে গোটা গাজা উপত্যকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। খাদ্য ও জলসংকট চরম আকার নিয়েছে। থালা হাতে ত্রাণের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা বুভুক্ষদের ভিড়ে চলছে হামলা। রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার দপ্তরের সাম্প্রতিক রিপোর্ট বলছে, এহেন হামলায় অন্তত ৭৯৮ জন প্যালেস্তিনীয়র মৃত্যু হয়েছে। তীব্র জলসংকটে ত্রাণ শিবির গুলিতে জল বিতরণ করছে সেখানকার স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলি। সেখানেও ভুল করে মৃত্যু বিলির পর, এবার গাজার একমাত্র গির্জাতেও হামলা ইজরায়েলের।