সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘গাজার মাটি থেকে হামাসকে নিশ্চিহ্ন করে তবেই থামা হবে’, মার্কিন যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব খারিজ করে স্পষ্ট বার্তা দিল ইজরায়েল। অর্থাৎ নেতানিয়াহু বুঝিয়ে দিলেন গাজার মাটিতে নরসংহার জারি থাকছে। আমেরিকার দেওয়া প্রস্তাব হামাস মেনে নিয়েও বাতিল হয়ে গেল ইজরায়েলের আপত্তিতে।
শেষ বার গত মার্চ মাসে যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব সাক্ষরিত হয়েছিল হামাস ও ইজরায়েলের মধ্যে। তার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর নতুন করে হামাসের বিরুদ্ধে ভয়াবহভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ে ইহুদি সেনা। গাজাকে অবরুদ্ধ করে লাগাতার হামলায় মৃত্যু হচ্ছে হাজার হাজার নাগরিকের। এই পরিস্থিতিতে দাড়ি টানতে সম্প্রতি আমেরিকার তরফে দুই পক্ষকে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেওয়া হয়। যেখানে বলা হয়, হামাস দুই দফায় ১০ জন পণবন্দিকে মুক্তি দেবে, যার বিনিময়ে হবে ৭০ দিনের যুদ্ধবিরতি। এই ৭০ দিনে দুই পক্ষ স্থায়ী শান্তির লক্ষ্যে আলোচনা করবে। মার্কিন রাষ্ট্রদূত স্টিভ বিটকফের এই প্রস্তাবে সম্মতি জানায় হামাস।
তবে ইজরায়েল প্রশাসন মার্কিন প্রস্তাব খারিজ করে জানায়, আমেরিকার তরফে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, ১০ পণবন্দির মুক্তির বিনিময়ে ৭০ দিনের যুদ্ধ বিরতির। আমরা কোনওভাবেই এই প্রস্তাবের পক্ষে নই। ইজরায়েলের এক আধিকারিক জানান, এই প্রস্তাব কোনওভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। এমন আর্জি মেনে নেওয়ার অর্থ হামাসের সামনে আত্মসমর্পণ করা। ফলে ইজরায়েল এই প্রস্তাব খারিজ করছে। পাশাপাশি সোশাল মিডিয়ায় ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু লেখেন, ‘আমি ভীষণভাবে আশাবাদী আজ অথবা কাল আমি হামাসের বিরুদ্ধে চলা আমাদের এই যুদ্ধের বিস্তারিত তথ্য পণবন্দিদের কাছে পৌঁছে দিতে পারব।’ অর্থাৎ নেতানিয়াহু কার্যত বুঝিয়ে দিলেন, হামাসকে শেষ করে পণবন্দিদের উদ্ধারের ইঙ্গিত দিলেন তিনি।
উল্লেখ্য, গত কয়েকমাসে গাজাকে অবরুদ্ধ করে ভয়ংকর অভিযান চালাচ্ছে ইজরায়েল। সম্প্রতি এক রিপোর্টে জানা যায়, গাজার ২০ লক্ষ বাসিন্দার মধ্যে বেশিরভাগই ভয়ংকর অপুষ্টির শিকার। ত্রাণ না পৌঁছলে মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সেখানে ১৪ হাজার শিশুর মৃত্যুর আশঙ্কা রয়েছে। এর পরই গাজার ত্রাণ পাঠানোর অনুমতি দেয় ইজরায়েল। যদিও উত্তর গাজায় ত্রাণ পাঠানোর অনুমতি দেওয়া হয়নি ইজরায়েলের তরফে। কারণ ওই অঞ্চলে গাজার বাসিন্দাদের উচ্ছেদের কাজ শুরু হয়েছে। অর্থাৎ জোরকদমে চলছে গাজা দখল পর্ব। এই অবস্থায় যুদ্ধবিরতিকে লোকসান হিসেবে দেখছে ইজরায়েল।