স্টাফ রিপোর্টার: এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর পাকিস্তান বোর্ড প্রধান তথা এশীয় ক্রিকেট কাউন্সিল চেয়ারম্যান মহসিন নকভির হাত থেকে ট্রফি নেয়নি ভারত। তা নিয়ে তীব্র চাপানউতোর চলছে। শুধু তাই নয়, সমগ্র এশিয়া কাপকেই রাজনীতির ছায়া ঘিরে ছিল প্রবল ভাবে। পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের সঙ্গে খেলা শেষে হাত মেলায়নি সূর্যকুমার যাদব-সহ ভারতীয় টিম। পাক বধ দেশের সেনাবাহিনীকে উৎসর্গ করেছেন সূর্য। হ্যারিস রউফ-সাহিবজাদা ফারহানরা আবার কেউ বিতর্কিত উৎসব, কেউ বিতর্কিত অঙ্গভঙ্গি করে শাস্তির মুখে পড়েছেন। যা দেখে বিরক্ত ভারতের প্রথম বিশ্বজয়ী অধিনায়ক কপিল দেব। তিনি বলে দিয়েছেন, খেলার সঙ্গে রাজনীতিকে মেশানো কখনওই উচিত নয়। খেলাকে খেলার মতো থাকতে দেওয়া উচিত।
“আমি শুধু এটুকু বলতে চাই, খেলার সঙ্গে রাজনীতিকে গুলিয়ে ফেলা ঠিক নয়। সেটা যেমন ক্রিকেটারদের বুঝতে হবে, তেমনই প্রচারমাধ্যমকেও বুঝতে হবে। ক্রীড়াবিদ হিসেবে আমি দেখতে চাই যে, খেলাটা নিয়ে সবাই ভাবুক। বাকি কিছুকে তার সঙ্গে না মিশিয়ে,” এক সাক্ষাৎকারে বলে দিয়েছেন কপিল। তাঁর তিরাশির বিশ্বজয়ী দলের উইকেটকিপার সৈয়দ কিরমানি এত রাখঢাক করেননি। তিনি সরাসরিই সমালোচনা করেছেন ভারতীয় টিমের। এক সাক্ষাৎকারে কিরমানি বলেছেন, “বিদেশ থেকে আমাকে আমার বন্ধুরা জিজ্ঞাসা করছে, ভারত এটা কী করল? কেন চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরেও ট্রফি নিল না? আমাকে বলতে পারেন, আমি ওদের কী উত্তর দেব? সত্যিই আমার কাছে কোনও উত্তর নেই।” কিরমানির বক্তব্য হল, ক্রিকেটকে জেন্টেলম্যান্স গেম বলা হয়। কিন্তু বিশ্বজুড়ে ক্রিকেটারদের মধ্যে ভদ্রতা ক্রমশ কমছে।
“এখনকার দিনে আমি ক্রিকেটারদের মধ্যে কোনও ভদ্রতাই দেখতে পাই না। অভব্য আচরণ করে ওরা মাঠে। কুৎসির অঙ্গভঙ্গি করে। কেন এ ভাবে সব জায়গায় রাজনীতি ঢুকে পড়বে? পরিষ্কার বলছি, এশিয়া কাপে যা দেখলাম, গা ঘিনঘিন করছে। লজ্জা লাগছে।” সঙ্গে তাঁর সংযোজন, “আরে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ কি আজ থেকে হচ্ছে? আমরা খেলিনি? আমাদের সময় দু’দেশের রাজনৈতিক উত্তাপের উর্ধ্বে উঠে ক্রিকেটাররা খেলত। পাকিস্তানি ক্রিকেটাররা কত বার খেলতে এসেছে আমাদের দেশে। আমরা গিয়েছি ওদের দেশে। দেখা হলে, জিজ্ঞাসা করেছে পরিবারের সবাই কেমন রয়েছে? আমার বক্তব্য খুব সহজ। খেলার মাঠের বাইরে যা ঘটছে, সে সমস্তকে সেখানেই রেখে এসো। তার পর খেলতে নামো। টিমের জয় বা টুর্নামেন্ট জিতে তুমি যে অর্থ রোজগার করছো, তার সঙ্গে রাজনীতিকে মিশিয়ে দিও না।”
কিরমানি যে ভারতের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদবকে উদ্দেশ্য করেই কথাটা বললেন, আলাদা করে না বললেও চলে। কারণ, এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর সূর্য ঘোষণা করে দেন যে, টুর্নামেন্ট থেকে তাঁর প্রাপ্ত সমস্ত অর্থ তিনি দেশের সেনা আর পহেলগাঁও সন্ত্রাসে নিহতদের পরিবারকে তিনি দিয়ে দিতে চান। “আমাদের সময় দু’দেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে কী সুন্দর সম্পর্ক ছিল। হাসি ঠাট্টা চলত। উষ্ণ অভ্যর্থনা পেতাম। কিন্তু এ যুগের ক্রিকেটাররা যা করছে, দেখে অবসাদে চলে যাচ্ছি। একজন ক্রিকেটার হিসেবে মাথা হেঁট হয়ে যাচ্ছে,” বক্তব্য তাঁর।