সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তিনবছর ধরে ভয়ংকর যুদ্ধ চলছে রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে। একে অপরকে ঝাঁজরা করে দিচ্ছে দুই দেশ। কিন্তু এই সংঘাতের শুরুটা হয়েছিল ২০১৪ সালে। ক্রাইমিয়া দখল করে রুশ ফৌজ। এই ভূখণ্ডকে নিজেদের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসাবেই দাবি করে কিয়েভ। এবার এই ক্রাইমিয়াকেই রাশিয়ার অংশ হিসাবে মান্যতা দিতে পারে আমেরিকা! এভাবেই হয়তো যুদ্ধ থামানোর ‘শেষ’ চেষ্টা করবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই খবরে নিঃসন্দেহে রক্তচাপ বেড়েছে ইউক্রেনের। তারাও একচুল জমি মস্কোর হাতে তুলে দিতে রাজি নয়।
২০১৪ সালে ক্রাইমিয়া দখল করে রাশিয়া। তারপর থেকেই সেখানে মস্কো সমর্থিত প্রশাসন কাজ করছে। উপদ্বীপটিতে রুশ সেনাঘাঁটিকে বারবার নিশানা করে হামলা চালিয়েছে ভলোদিমির জেলেনস্কির বাহিনী। পালটা আঘাত হেনেছে মস্কোও। যুদ্ধ থামাতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের অন্যতম শর্তই হল, এই উপদ্বীপটিকে রাশিয়ার অংশ হিসাবে ঘোষণা করতে হবে। সূত্রের খবর, এবার সেই পথেই হাঁটতে চলেছে আমেরিকা। শান্তি চুক্তির আলোচনায় ট্রাম্প ঘোষণা করতে পারেন ক্রাইমিয়া রাশিয়ারই।
কিন্তু ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, “আমরা রাশিয়াকে কোনও জমি ছেড়ে দিয়ে মাথানত করব না। ক্রাইমিয়া হোক বা অন্য কোনও ভূখণ্ড, কোনও অঞ্চলই আমরা রাশিয়াকে ছেড়ে দেব না। যুদ্ধবিরতির আগে আমাদের ভূখণ্ড নিয়ে কোনও আলোচনা হতে পারে না।” তবে আমেরিকাও আর দু’দেশের সংঘাতে মাথা ঘামাতে চাইছে না। দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় ফিরে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামিয়ে দেওয়ার কথা বলেছিলেন ট্রাম্প। এমনকী রুশ নীতি বদলে একাধিক ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে দুষতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আর জেলেনস্কির সঙ্গে কখনও নিজে ফোনে কথা কিংবা প্রতিনিধি পাঠিয়ে শান্তি চুক্তির জন্য মরিয়া চেষ্টা চালিয়েছিলেন ট্রাম্প। কিন্তু তিনি বুঝতে পারছেন এতদিন তিনি যা করেছেন তা অরণ্যে রোদন।
গতকালই শুক্রবার মার্কিন বিদেশ সচিব মার্কো রুবিও জানান, “আমরা অনেক চেষ্টা করেছিলাম রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করার। কিন্তু প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আর মধ্যস্থতা করতে রাজি নন। আমরা আর কয়েক সপ্তাহ দেখব। তারপর অন্য কাজে মন দেব। এখন যা পরিস্থিতি তাতে ওরা শান্তিচুক্তি নিয়ে আগ্রহী নয়। আমরা আর সময় অপচয় করব না। ট্রাম্প বৃথাই এতদিন শক্তিক্ষয় করেছেন।” ফলে এবার ক্রাইমিয়া দিয়েই পুতিনকে শান্ত করার শেষ চেষ্টা করবে ওয়াশিংটন। কিন্তু ইউক্রেন কোনওভাবেই তা মানবে না। দু’দেশের দর কষাকষি আরও দীর্ঘ হলে হাত তুলে নেবে আমেরিকা। তাই পরিস্থিতি আরও জটিল থেকে জটিলতর হয় কিনা তা নিয়েই এখন উদ্বেগ বাড়ছে।