সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ২০৪ রান তাড়া করতে নেমে মাত্র ২৭ রানে অলআউট হয়ে গিয়েছে ক্যারিবিয়ানরা। ১৪.৩ ওভারেই শেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজের যাবতীয় প্রতিরোধ। লজ্জার এই নজির গড়ার পর ক্যারিবিয়ান দল নিয়ে এখন ময়নাতদন্ত অব্যাহত। এই পরিস্থিতিতে একটি জরুরি বৈঠকও ডাকা হয়েছে ক্যারিবিয়ান বোর্ডের তরফে। আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে ক্লাইভ লয়েড, ভিভ রিচার্ডস, ব্রায়ান লারাকে। যদিও এই দুরবস্থার জন্য প্রাক্তন ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক লারা নাম না করে আইপিএল-সহ সমস্ত ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগকে দোষারোপ করেছেন। অন্যদিকে, কার্ল হুপার ক্যারিবিয়ান বোর্ডের কর্তাদের কাঠগড়ায় তুলেছেন।
লারা বলেন, “আমারা প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলে জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছিলাম। কাউন্টি ক্রিকেটে খেলাকেও দারুণ মর্যাদার মনে করতাম। কিন্তু এখন ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে। এই সময়কার ক্রিকেটাররা বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি দলে খেলে দেশে হয়ে খেলার চেষ্টা করছে। আর ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট চুক্তি নির্ভর। তাই কেবল ক্রিকেটারদের দোষ দিলে হবে না।” অর্থাৎ, নাম না করে কিংবদন্তি এই ক্রিকেটার দায়ী করেছেন আইপিএল-সহ বিশ্বের বিভিন্ন টি-টোয়েন্টি লিগকে।
বর্তমানে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের প্রভাব এতটাই গভীর যে, প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলতে চান না বহু ক্রিকেটার। ‘ফ্র্যাঞ্চাইজি প্রথম’, এই মডেলের দিকে ক্রমশ এগিয়ে চলেছে ক্রিকেট। এখন ক্রিকেটাররা অনেক বেশি টি-টোয়েন্টি কেন্দ্রিক চোখ ধাঁধানো চুক্তির অফারও পান। যা গোটা বিশ্বে ফ্র্যাঞ্চাইজিদের বিনিয়োগে সমৃদ্ধ। সেখানে টেস্টের চেয়ে টি-টোয়েন্টি খেলে অনেক বেশি পারিশ্রমিক পাচ্ছেন ক্রিকেটাররা। তাই লারার মন্তব্যের পর অনেকেই বলছেন, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ডের উচিত সবার আগে জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের জন্য মোটা অঙ্কের চুক্তির বিষয় নিশ্চিত করা।
ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটের বর্তমান হালের জন্য কার্ল হুপার দায়ী করেছেন ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজের কর্তাদের। তাঁর মন্তব্য, “কোনওভাবেই দায় এড়াতে পারবে না বোর্ড। এরজন্য কর্তাদের দায় নিতেই হবে। তাঁদের কিছু সিদ্ধান্তের জন্যই এমন লজ্জাজনক ফলাফল। দলে প্রচুর রদবদল হয়েছে। মনে হয় না, এত পরিবর্তনের দরকার ছিল। কারণ ফলাফলে তো উন্নতি নেই।”
প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়া করে ২২৫। জবাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ থেমে যায় ১৪৩ রানে। দ্বিতীয় ইনিংসে শামার জোসেফ ও আলজারি জোসেফের দাপটে অস্ট্রেলিয়াও ১২১ রানের বেশি করতে পারেনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে জিততে হলে ২০৪ রান করতে হত। প্রথম দু’টি টেস্টে হেরে থাকা নড়বড়ে ক্যারিবিয়ান ব্যাটিং অর্ডার যে গোলাপি বলে রানটা তুলতে পারবে না, তা কার্যত দেওয়াল লিখন ছিল। কিন্তু তারা যে ১৪.৩ ওভারে মাত্র ২৭ রানে অলআউট হয়ে যাবে, তা ভাবা যায়নি। সেই কারণে কিংবদন্তি ক্রিকেটারদের ক্যারিবিয়ান বোর্ড দ্বারস্থ হয়েছে। তাঁদের আগমনে কি আদৌ গরিমা ফিরবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের? সময়ই এর উত্তর দেবে।