কোহলি, আপনি সব পেয়েছির দেশ! আনন্দাশ্রু আপনাকেই মানায়

কোহলি, আপনি সব পেয়েছির দেশ! আনন্দাশ্রু আপনাকেই মানায়

বৈশিষ্ট্যযুক্ত/FEATURED
Spread the love


অর্পণ দাস: বিরাট কোহলি, আপনি সব পেয়েছির দেশ। ওয়ানডে বিশ্বকাপ, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, ব্যক্তিগত স্তরে অসংখ্য খেতাব, কী নেই আপনার ঝুলিতে? আপনি ‘কিং’, ‘চেজ মাস্টার’। দেশের জার্সিতে আপনি ব্যাট হাতে নামলে সমালোচক থেকে প্রতিপক্ষ, সবাই সমীহ করে চলে। অবশেষে এবার সেখানে জুড়ল আইপিএল ট্রফিও। আঠারোটা বছর কাটল আর আপনার নামের পাশের বিরাট ঢ্যাঁড়া চিহ্নটাও মুছে গেল। আর কোনও দিন কথা শুনতে হবে না, রাজা, আপনার আইপিএল খেতাব কোথায়?

ক্রিকেট ঈশ্বর বোধহয় ভারসাম্যের খেলায় প্রতিদিন পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সাজান। ঐতিহাসিক লর্ডসে শচীন তেণ্ডুলকরের সেঞ্চুরি নেই, অল্পের জন্য ১০০ গড় হাতছাড়া হয়েছে ডন ব্র‍্যাডম্যানের। সবারই অপ্রাপ্তির পাল্লায় অল্পবিস্তর বাটখাড়া চাপানোই থাকে। সে আপনি যত পরিশ্রমই করুন না কেন, পরশপাথর আপনার নাগালে আসবে না। এতদিন আরসিবি আর কোহলি যেন সেই ট্র‍্যাপিজের খেলায় এক সুতোয় গাঁথা ছিল। অবশেষে বারবার চারবারে এসে শিকে ছিঁড়ল। শচীন তেণ্ডুলকরকেও অনন্ত প্রতীক্ষায় থাকতে হয়েছিল। ছনম্বর বিশ্বকাপে এসে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বাদ পেয়েছিলেন মাস্টার ব্লাস্টার। নিজের পঞ্চম বিশ্বকাপে এসে আর্জেন্টিনাকে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন করেছিলেন এলএম ১০। উলটো দিকের পোডিয়ামে আর নয়, এবার কোহলির হাতে বহু প্রতীক্ষিত আইপিএল ট্রফি।



এবার যেন সব গ্রহ-নক্ষত্র একযোগে মিলে গিয়েছিল। না, পারফরম্যান্সের নিরিখে বলা হচ্ছে না। সে তো কম বেশি ওঠানামা করেই। ২০১৬-তেও অপ্রতিরোধ্য মনে হয়েছিল আরসিবি’কে। কোহলি একাধিকবার আইপিএলে অরেঞ্জ ক্যাপ পেয়েছেন। সেসব করেও ঘরে কাপ আসেনি। ঘর পোড়া গরু সিঁদুরে মেঘ দেখলে ডরায়। অতএব, মেলানো শুরু হল তিথিনক্ষত্র, পুঁজিপাথি ইত্যাদি। আঠারোতম আইপিএল, কোহলির জার্সি নম্বর আঠারো। কেউ মহাকুম্ভে আরসিবি’র জার্সি পরে স্নান করছে। কেউ বা হামাগুড়ি দিয়ে উঠছে তিরুপতি মন্দিরে। মসজিদ-গুরুদ্বারেও ভক্তদের ভিড়। যত মত তত পথ এসে মিশুক একটাই লক্ষ্যে। আইপিএল জয়ের পর কোহলির কান্না দেখে মনে হচ্ছে, উপরওয়ালা কথা রেখেছেন! এবার পিএসজি প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছে। ফুটবল দুনিয়ায় বহু ক্লাব এবার প্রথমবার ট্রফি জিতেছে। চলতি বছরটা যেন ‘বঞ্চিত’দের বঞ্চনামুক্তির বছর।

বছর দুয়েক আগে এই নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়াম একটা স্বপ্নভঙ্গ দেখেছিল। এদিন ফাইনালে নামার আগে কি সেই রাতটার কথা মনে হচ্ছিল কোহলির? দেশ হোক বা ফ্রাঞ্চাইজি, দুটো দলের মধ্যে শুধু এই একজনই কমন ছিলেন। মাঝের দুটো বছরে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতে কুড়ি-কুড়ির ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়েছেন। টেস্ট ছেড়েছেন। ক্রিকেট থেকে সন্ন্যাস নেওয়ার সমস্ত জল্পনা উসকে দিয়েছেন। ‘শান্তির খোঁজে’ তীর্থস্থানে গিয়েছেন, ‘গুরু’র আশ্রয় নিয়েছেন। ৩ জুন, ২০২৫, আইপিএলের মঞ্চে বহুপ্রতীক্ষিত ‘শান্তি’ পেলেন।

এটা নিশ্চিত যে, সফর এবারই শেষ হবে না। আরও হয়তো কয়েক বছর খেলবেন। কিন্তু এত আয়োজনের মধ্যে একটা আশঙ্কা থেকেই যায়। মাঠে আগ্রাসী কোহলিকেই দেখে সবাই অভ্যস্ত। তিনি লম্ফঝম্প করবেন, বিপক্ষকে খোঁচা দেবেন, মোদ্দা কথা সব আলো তাঁর উপরেই। অধিনায়ক না হয়েও নেতা। বয়সের সঙ্গে অনেক পরিবর্তন এলেও নিজেকে কখনও খোলসের মধ্যে ভরে ফেলেন না। সব পেয়েছির দেশেও সেই কোহলিকেই দেখতে চায় ক্রিকেট দুনিয়া। হে সাবালক আইপিএল, দয়া করে বিরাটের ছেলেমানুষি কেড়ে নিও না।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ






Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *