কোটি টাকার বিমা পাইয়ে দেওয়ার নামে প্রতারণা কোচবিহারে! গ্রেপ্তার যুবক, জড়িত কলকাতার চক্রও!

কোটি টাকার বিমা পাইয়ে দেওয়ার নামে প্রতারণা কোচবিহারে! গ্রেপ্তার যুবক, জড়িত কলকাতার চক্রও!

সিনেমা/বিনোদন/থিয়েটার
Spread the love


বিক্রম রায়, কোচবিহার: বিমার মোটা অঙ্কের টাকা পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে লক্ষ, লক্ষ টাকা প্রতারণা করার চক্রের হদিশ পেল পুলিশ। গত বছর অক্টোবর মাসে কোচবিহারের দিনহাটার বাসিন্দা মনিলকুমার রায়কে ‌১ কোটি ২৯ লক্ষ টাকার বিমা পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখানো হয় বলে অভিযোগ। এরপর কয়েক ধাপে তাঁর কাছ থেকে ৮৭ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছিল! সেই ঘটনায় অভিযোগ পেয়ে পুলিশ তদন্তে নেমে উত্তর ২৪ পরগনার বারাকপুরের মোহনপুর থানা এলাকার দেবপুকুর থেকে সঞ্জয় কুমার ধর নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে। তার অ্যাকাউন্টে এই জালিয়াতি কাণ্ডের টাকার ঢুকেছিল বলে অভিযোগ।

শুধু সেই ঘটনাই নয়, সঞ্জয়ের গ্রেপ্তারের পর কোচবিহারে ২০২২ সালে ঘটে যাওয়া প্রায় ৩ লক্ষ ৫২ হাজার টাকার প্রতারণার একটি ঘটনার যোগ রয়েছে বলেও পুলিশ জানতে পেরেছে। কোচবিহারের পুলিশ সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্য বলেন, “২০২৪ সালের অক্টোবর মাসের কোচবিহার সাইবার ক্রাইম থানায় একটি প্রতারণার অভিযোগ আসে। সেখানে অভিযোগ করা হয়েছিল ১ কোটি ২৯ লক্ষ ৪৩ হাজার ৮৫০ টাকা বিমা বাবদ পাইয়ে দেওয়ার নাম করে মনিলকুমার রায়কে ৮৬ লক্ষ ৯৯ হাজার ১৮৪ টাকা প্রতারণা করা হয়েছে। ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ উত্তর ২৪ পরগনার মোহনপুর থেকে সঞ্জয় কুমার ধর নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে। ওই ব্যক্তির অ্যাকাউন্টে এই প্রতারণার টাকা ঢুকেছিল। তাছাড়া কোচবিহারে পরিতোষচন্দ্র পাল নামে এক ব্যক্তি ২০২২ সালে একটি সাড়ে তিন লক্ষ টাকার প্রতারণার অভিযোগ করেছিলেন। সেই ঘটনাতেও সঞ্জয়ের যোগ পাওয়া গিয়েছে।”

জানা গিয়েছে, বিভিন্ন বিমা কোম্পানির নামে রীতিমতো ফোন করে প্রলোভন দেখানোর একটি চক্র সক্রিয় রয়েছে। আর তার অন্যতম পান্ডা সঞ্জয়কুমার ধর। কোনও ব্যক্তিকে চিহ্নিত করার পর প্রথমে তাঁকে মোটা অঙ্কের বিমার টাকা পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখানো হত। তারপর বিভিন্ন অছিলায় তাঁর কাছে থেকে কিছু টাকা নেওয়া হত এবং সেই টাকা নেওয়ার কাজ কয়েক ধাপে চলত। এই পদ্ধতিতেই সঞ্জয় দীর্ঘদিন থেকে এই প্রতারণার চক্র চালিয়ে যাচ্ছিল। সেই খপ্পরেই দিনহাটার মনিলকুমার রায় পড়েছিলেন! তিনি প্রায় ৮৭ লক্ষ টাকা হারিয়ে ফেলেছেন। সেই টাকা উদ্ধারের চেষ্টা পুলিশ করছে। এই ঘটনায় ধৃত ব্যক্তির অ্যাকাউন্টে প্রায় তিন কোটি টাকার হদিশ মিলেছে। সেগুলো বিভিন্ন প্রতারণার ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারে বলেই পুলিশের ধারনা তাই সমস্ত বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

কীভাবে তৈরি করা হচ্ছিল প্রতারণার ফাঁদ? তা তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ জানতে পেরেছে, এই চক্রটি কলকাতা থেকে পরিচালিত হচ্ছিল। চক্রের সঙ্গে আরও একাধিক সদস্য যুক্ত। তারা ফোন কলের মাধ্যমে ভুক্তভোগীদের বিমা পরিষেবা, ঋণ পরিষেবা দেওয়ার নামে টার্গেট করে। প্রথমে অল্প পরিমাণ টাকা চেয়ে ভুক্তভোগীর আস্থা অর্জন করে। তারপর একবার আস্থা পেয়ে গেলে, বিভিন্ন অজুহাতে আরও টাকা দাবি করে। মূলত, বড় মুনাফা বা সহজ ঋণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে এই প্রতারণার ফাঁদ তৈরি করা হয়। দ্রুত টাকা দেওয়ার জন্য ভুক্তভোগীদের তাগাদাও দেওয়া হত। বৈধ লেনদেনে সাধারণত কাগজপত্র থাকে, কিন্তু এই ধরনের প্রতারণায় কোনও নথি দেওয়া হয় না। কাজেই ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এখন সেই চক্রের সঙ্গে যুক্ত অন্যান্যদের খোঁজ পেতে মরিয়া পুলিশ।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *