অর্ণব দাস, বারাসত: মধ্যরাতে বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে মধ্যমগ্রাম। পুলিশের অনুমান, বিস্ফোরণে ব্যবহার করা হয়েছে স্বল্পমাত্রার আইইডি। ইতিমধ্যে এই ঘটনায় উত্তরপ্রদেশ যোগ সামনে এসেছে। জানা গিয়েছে, বিস্ফোরণে মৃত যুবক সচ্চিদানন্দ মিশ্রর বাড়ি উত্তরপ্রদেশের বস্তি জেলায়। তাঁর কাছে থাকা একটি ব্যাগেই ছিল বিস্ফোরক। আর তা থেকেই এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। প্রশ্ন উঠছে, মৃত যুবকের কাছে কীভাবে এল এই বিস্ফোরক? এমনকী উত্তরপ্রদেশ থেকে সে কেন মধ্যমগ্রাম এসেছিল সেটিও এখন তদন্তকারীদের রাডারে। বিস্ফোরণের মাধ্যমে বাংলায় নাশকতার কোনও পরিকল্পনা কী ছিল তাঁর? খতিয়ে দেখছে রাজ্য পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের কর্তারা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই ছিল যে বিস্ফোরণস্থল থেকে বেশ কিছুটা দূরে ছিটকে পড়ে সচ্চিদানন্দ। তাঁর বাঁ হাত এবং একটি পা উড়ে গিয়েছে। এমনকী মাথার একদিকের অংশ, মুখ এবং পেটে ভয়ংকর ক্ষত হয়েছে। রক্তারক্তি অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে কলকাতার একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও আজ সোমবার সকালে মৃত্যু হয় তাঁর।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বিস্ফোরণে মৃত যুবক সচ্চিদানন্দ মিশ্রর বাড়ি উত্তর প্রদেশের বস্তি জেলায়। মৃত যুবকের পকেট থেকে একটি আধার কার্ডের জেরক্স এবং দুটি মোবাইল নম্বর উদ্ধার করা হয়। সেগুলি খতিয়ে দেখেই তদন্তকারীরা মৃত যুবকের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে। মৃতের বাবা অশ্বিনী কুমার মিশ্রর সঙ্গে কথা বলে। পুলিশ জানতে পারে, হরিয়ানার একটি গ্লাস ফ্যাক্টরিতে চাকরি করত সচ্চিদানন্দ। পরিবারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল না। এমনকী সে যে মধ্যমগ্রামে এসেছিল তা নিয়েও পরিবারের কাছে কোনও তথ্য ছিল না। ফলে ছেলের কীর্তি শুনে রীতিমত অবাক পরিবার।
ঘটনার খবর পেয়েই উত্তরপ্রদেশ থেকে বাংলায় আসছে সচ্চিদানন্দের পরিবার। জানা গিয়েছে, ঘটনার সূত্রে পৌঁছতে তাঁদের জেরা করতে পারে এসটিএফ। এই প্রসঙ্গে পুলিশ সুপার প্রতীক্ষা ঝাঁড়খড়িয়া বলেন, ”এসটিএফ তদন্ত করছে। আমরা তদন্তে সহায়তা করছি। ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা ঘটনাস্থল থেকে কিছু নমুনাও সংগ্রহ করেছেন। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখে তদন্ত চলছে।” তবে এই ঘটনায় তীব্র আতঙ্কে মধ্যমগ্রামের মানুষজন। যদিও ঘটনার পর থেকেই এলাকায় বাড়ানো হয়েছে পুলিশের নজরদারি।