সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চোখ রাঙাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ভারতের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছেন। তবে মার্কিন চোখরাঙানির সামনে অকুতোভয় ভারত। স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নাম না করে বারবার ট্রাম্পকে বুঝিয়ে দিয়েছেন, কৃষক, পশুপালক, মৎস্যজীবীদের স্বার্থের সঙ্গে আপস করবে না ভারত। বরং সমস্তক্ষেত্রে আত্মনির্ভর হয়ে উঠবে দেশ।
বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে দীর্ঘদিন আলোচনা হলেও এখনও সেটা সই করতে পারেনি ভারত-আমেরিকা। বিশ্লেষকদের মতে, সেদেশের কর্পোরেট সংস্থাগুলির চাপে কৃষিপণ্য, মৎস্য এবং ডেয়ারি পণ্যের ভারতীয় বাজার উন্মুক্ত করতে চায় আমেরিকা। সেই শর্তে রাজি নয় ভারত। তার ফলেই আটকে রয়েছে ভারত-আমেরিকা বাণিজ্য চুক্তি। উল্লেখ্য, ব্রিটেনের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তিতেও এই তিনটি ক্ষেত্রের বাজার খোলেনি ভারত। স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে মোদি আবারও মনে করিয়ে দিয়েছেন, ভারতের কৃষক, মৎস্যজীবী এবং পশুপালক সংক্রান্ত অহিতকারী নীতির বিরুদ্ধে মোদি দেওয়ালের মতো বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে।
এখানেই শেষ নয়। শুল্কযুদ্ধের আবহে আত্মনির্ভরতার জয়গান গাইলেন প্রধানমন্ত্রী। নাম না করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে বার্তা দিয়ে আমদানি নয়, রপ্তানির উপর জোর দেওয়ার বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী। প্রতিরক্ষা থেকে খাদ্য, কৃষি থেকে প্রযুক্তি-সবক্ষেত্রেই আত্মনির্ভরতা বাড়ানোর পক্ষে বার্তা মোদির। আত্মনির্ভর ভারতের যুদ্ধাস্ত্রেই পাকিস্তানকে মাত দেওয়া গিয়েছে, সগর্বে জানালেন প্রধানমন্ত্রী।
তবে বেশ কিছু ক্ষেত্রে ‘বন্ধু’ ট্রাম্পের বিষয়ে সুর নরম করার ইঙ্গিত মিলেছে মোদির বক্তব্যে। লালকেল্লা থেকে এদিন তিনি বলেন, প্রকৃত অর্থে আত্মনির্ভর হতে গেলে শক্তিসম্পদের ক্ষেত্রে স্বাধীন হওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সৌরবিদ্যুৎ এবং জলবিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যাপক উন্নতি হয়েছে, পরমাণু শক্তির ক্ষেত্রেও ভারত আরও উন্নতি করছে। সমুদ্র গর্ভে তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের ভাণ্ডার খুঁজতে সমুদ্র মন্থনের ডাক দিয়েছেন মোদি। বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের কথামতো রুশ তেল আমদানির পথ থেকে ধীরে ধীরে সরে আসতে চাইছে ভারত। তবে একইসঙ্গে ভারতের স্পষ্ট অবস্থান, কৃষিক্ষেত্রের বাজার কিছুতেই উন্মুক্ত করবে না ভারত।